পটলা কোম্পানির মহাকাশ অভিযান
পটলা কোম্পানির মহাকাশ অভিযান
আমার নাম পটলা । হাসবেন না প্লিজ । পটলা নামকরণ কারণ আমি ছোট চেহারা মানুষ, আর রোগা হলেও খেলে দেলে একটু ভুড়ি হয় আর কি। একটা পত্রিকাতে পরেছিলাম ।নভোচারী বা মহাকাশচারীরা যারা মহাকাশে ভ্রমণ করে থাকেন তারা ভ্রমণ করে ফিরে আসার পর তাদের উচ্চতা 2 ইঞ্চি পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। পল্টু মামা ও সেটা সমর্থন করেছে।
রাতের আকাশের দিকে হোক কিংবা দিনের আকাশের দিকে হোক আমরা যে মহাশূন্য দিগন্ত দেখতে পাই সেটাই মহাকাশ। দিনের বেলায় সূর্যের ঝলমলে আকাশের দিকে তাকিয়ে মহাকাশ সম্পর্কে আমাদের কৌতুহলী একটু কম জাগে। কিন্তু রাতের তারা ভর্তি আকাশের দিকে তাকালে দেখা যায় মহাকাশের রূপ।
কৌতুহলী মানুষরা মহাকাশ নিয়ে যুগ যুগ ধরে নানা চিন্তা ভাবনা বা গবেষণা করে আসছে। এমনকি আমাদের সমাজের সাধারণ মানুষের মধ্যে মহাকাশ নিয়ে নানা ধরনের কৌতুহল দেখা যায়। আবার কুসংস্কার আছে। যেমন তারা খসা দেখে যা চাই তাই পাওয়া যায়। লম্বা হওয়ার জন্য অনেক বার মহাকাশ অবধি যাওয়া যেতো তাও কাজ হতো।কেন কারণ টা আপনি জানেন না বুঝি?
আপনি যদি কোন প্রকার যান্ত্রিক সহায়তা ছাড়া আকাশে উড়তে চান তাহলে আপনাকে শনির উপগ্রহ সেখানে যেতে হবে। কেননা শনির উপগ্রহ স্যাটানের বায়ুমণ্ডলের স্তর এতই ঘনত্ব যেখানে আপনি হাত দুই হাত প্রসারিত করে শূন্যে ভেসে থাকতে পারবেন। নিজেদের ভর শুন্য করেই বোধহয় আগেকার সাধু সন্ন্যাসী, দেবতারা আকাশে উড়তে পারতো। তবে জানান এই সূর্যটাকে মহাকাশ থেকে কিরকম দেখতে হয়? সূর্যের আসল রং সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত নয়। কিন্তু মহাকাশ থেকে সূর্যকে একটি সাদা ইন্দুর মত দেখায়।
তবে চোখের দেখাটাই শেষ কথা নয়। আকাশের বুকে যে ছোট্ট ছোট্ট তারা বা নক্ষত্র দেখেন তা আসলে আমাদের পৃথিবীর থেকে কয়েক হাজার গুণ বড়ো। আমরা আমাদের পাশে রয়েছে বিশাল সৌরমন্ডল দেখতে পাই এর ওজনের 99% দখল করে রেখেছে সূর্য। এই সূর্য একটা নক্ষত্র। নক্ষত্র বলতে সাধারণত অনেক উজ্জ্বল ও বড় তারা কে বোঝানো হয়। সূর্য একটি নক্ষত্র কিন্তু মহাকাশে এমন একটি নক্ষত্র রয়েছে যার উপরিভাগের তাপমাত্রা মাত্র 27 ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু আমাদের সূর্যের উপরিভাগের তাপমাত্রা 5778 ডিগ্রি সেলসিয়াস। হয়তো ভাবছেন এত কম তাপমাত্রায় আবার নক্ষত্র হয় কিভাবে হ্যাঁ এই নক্ষত্রটি পৃথিবী থেকে 47 আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত।
আলোক বর্ষ কথা বলতে মনে পড়লো।আমার মহাকাশ যাতে হলে আমাকে আলোতে পরিনত হতে হবে। একটু খুলে বলি। গীতা তে বলা আছে আত্মা মৃত্যু নেই। আবার বিজ্ঞান বলে বস্তু র ভর নষ্ট করা যায় না। তবে তাকে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে হবে। একটা এমন কিছু করতে হবে, ধরুন আমার প্রতিবিম্ব টাকেই যদি পাঠানো যায় মহাকাশে। মাথায় ঠিক ঢুকছে নাতো কি বলতে চাইছি । তবে একটা কথা আমাকে আলো পরিনত হতে হবে। কারণ শব্দ হলে চলবেনা।
আপনি হয়তো ভেবে থাকতে পারেন মহাকাশেও পৃথিবীর মতো এরকম গাড়ির হর্ণ কিংবা আরো নানা প্রকার শব্দ শুনতে পাওয়া যায়। বিষয়টি একেবারেই ভুল মহাকাশ হচ্ছে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এখানে কোনও শব্দ নেই এবং এখানে শব্দ প্রবাহের কোন মাধ্যমে নেই। এমনকি বাতাস নেই।এই যে চাঁদে মানুষ গিয়েছে কিনা এ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা বা সন্দেহ রয়েই গেছে। কিন্তু চাঁদ যদি কোন মানুষ সত্যিই দিয়ে থাকে তার পায়ের ছাপ 10 কোটি বছর পরও সেখানে পাওয়া যাবে। কারণ যাতে কোন বায়ুমণ্ডল নেই সেখানে বৃষ্টি হয় না ফলে পায়ের ছাপ মুছে যাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই।

মহাকাশ যাওয়াটা মুড়ি মোয়া না। জানান মহাকাশ কত বড়ো ।অথৈ জলরাশি বা সমুদ্রে গিয়ে আপনি হয়তো ভয় পেয়ে গেছেন এখানে এত চলরাশির কোত্থেকে আসলো আর এত জলরাশির মোট পরিমাণ কত? বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি আবিষ্কার করেছে মহাকাশে এমন একটি জলধারা রয়েছে যেখানে জলের পরিমাণ পৃথিবীর সমস্ত জলের থেকে 1 কোটি 40 লক্ষ গুণ বেশি। আপনি যদি জলেবি তুহাজল দেখলে ভয় পান তাহলে নিশ্চয়ই আপনি সেখানে যেতে চাইবেন না।
কিন্তু আমরা সেই মহাকাশে মেতে চাই। শেষ মেষ আমদের সুযোগ হয়েগেলো উডাঙ্গা গ্রহে একটা সম্মেলন করতে। তোমরা ভাবছো আমি মিথ্যা বলছি।মঙ্গলের বুকে মানুষের অবয়ব (Face on Mars) কিংবা Black Knight Satellite (যাকে অনেকেই UFO মনে করেছিল, আসলে তা মানুষ্য প্রেরিত স্যাটেলাাইটের ধ্বংসাবশেষ) কথা তুমি জানো। না The Great Attractor সম্পর্কে কিছু জানো। Dark Matter এবং Energy সম্পর্কে জানো কিছু ২২০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে সত্যিই আকর্ষণীয় কিছু একটা আছে, এবং এটা আমাদের পুরো ছায়পথ (Galaxy) কে তার দিকে টেনে নিচ্ছে। আমি জানি কারণ মহাকাশ আমি যেতে চাই।
আসলে উডঙ্গা গ্রহ মানুষ রা চরম জল সংকট ভুগে শেষ হয়ে গেছে।জলের পরিমান ও গুণ এর জন্য অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতা, ব্যবহারকারীরা ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার করতো ওরা এখন শেষ । তবে পৃথিবীতে দুই-তৃতীয়াংশ (৪.0 বিলিয়ন মানুষ) ) বছরের অন্তত ১ মাস গুরুতর পানি সংকটের সমমুখীন হয় এক কারণে। আপনি জানেন শহরের আমরা অনেক জল নষ্ট করি। এদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা মেরে দিয়ে চলে গেলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না কিন্তু গরীব চাষী হাজার টাকা ধার নিয়ে এমন হেনোস্তা হয় যাতে তাকে আত্মা হত্যা করতে বাধ্য হতে হয়। তাই জল সংকট নিয়ে এদের কথাই বলি জলের অভাবে চাষ নষ্ট কথাতো আপনাদের জানা কথা । কিন্তু জানেন কি?ভারতবর্ষে, ৫০ শতাংশেরও বেশী জমি চাষের জন্য ব্যাবহার করা হয়। যার অর্থ আমরা প্রায় ৫০ শতাংশেরও বেশি জমি কর্ষণ করি। কিন্তু যদি আমরা চাষ আবাদে আরও বেশি করে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি নিয়ে আসি, মাত্র তিরিশ শতাংশ জমিই সমগ্র ভারতবাসীর খাদ্যের যোগান দিতে পারবে। এখনও আমরা যে পদ্ধতিতে চাষ করে থাকি, বিগত হাজার বছরেও তার পরিবর্তন হয়নি - এটি খুব অদক্ষ উপায়ে করা হচ্ছে। উদাহরণ স্বরূপ, ভারতে এককেজি চাল উৎপাদন করতে প্রায় সাড়ে তিন হাজার লিটার এরও বেশি জল প্রয়োজন হয়, চিনে প্রায় তার অর্ধেক পরিমাণ জলেই হয়ে যায়। এবং তাদের উৎপাদন ক্ষমতাও আমাদের থেকে দ্বিগুন। আমাদের চাষ আবাদে আধুনিক বিজ্ঞানকে ব্যবহার করা প্রয়োজন।
উডাঙ্গা লোকজন সেটা বোঝে বলেই আমাদের মতো মানুষ কে নিয়ে যাচ্ছে ওদের গ্রহে। সিট বেল্ট খুলে দিয়েছি। ভাসছি আমি , নিজের কোন ওজনেই নেই। জানালা দিয়ে দেখা যাচ্ছে আকাশ গঙ্গা। ভাষা দিয়ে বোঝাতে পারবো না কি সুন্দর ওটা। চন্দন নগরের লাইটিং হার মানবে মহাকাশে র মধ্যে। এই মহাকাশ টাও নোংরা করেছে মানুষরা। একটা প্লাস্টিকের জলের বোতল উড়ে বেড়াচ্ছে আকাশের ভিতর। আমার দাদা জাহাজ চাকুরী করে ওর কাছে দেখেছি। এই জলের বোতল কতো টা ক্ষতি করে পারে । সি বিচ ঘুরতে গিয়ে যেকোনো জায়গায় বোতল ফেলে দাও তোমারা, সমুদ্রের বহু পাখি এই বোতলের ঢাকনাকে মাছ ভেবে খেয়ে মারা যায় প্রতিবছর। মহাকাশে এই বোতল কি না কি ক্ষতি করে বসে কে জানে। বোতল টা তাই তুলে ডাসবিনে ফেলবো ভাবলাম। বোতলের জলটা তেরে এলো আমার দিকে। দেখলাম আমি আমার বিছানায় ঘুম ভাঙ্গার জন্য দিদি আমার মুখে জল ছিটা দিচ্ছে।

