পটলা কোম্পানীর কান্ডকারখানা
পটলা কোম্পানীর কান্ডকারখানা
তুমি বলবে জীবনটা সিনামা নাকি যে লোক জন , একটা একটা পুকুরের মধ্যে ঝাঁপ দেবে অমনি বয়েস কমে যাবে? তোমার মতো আপু, বাপি, ছুটকিরাও বিশ্বাস করতে পারছিলো না যে ওটা রাঙা দাদু। আমি বুঝতে পেরেছিলাম ওটা রাঙাদাদু। কম বয়সে রাঙাদাদূ ছিলেন ভৌতবিজ্ঞানের প্রফেসর। তুমি ও কি বাপি , ছূটকির মতো বোকা নাকি! যে ভাবছো বয়স কমানোর সাথে ভৌত বিজ্ঞানের সম্পর্ক কি? ভৌত বিজ্ঞান তো পদার্থ রূপ বদলানোর কারণ গুলো ই দেখায়। তুমি বলবে রাঙাদাদু পদার্থ নয়। আর বারুইপুরে অভিজিৎ কাকু মানে বহুরূপী অভিজিৎ রোজ রোজ রূপ বদলায়, কখন শিব, কখনো কালি, কখনো রবীন্দ্রনাথ সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাবলে সে কি বয়স কম তে পারছে। হুঁ টিভিতে বিজ্ঞাপন দেয় কি সব ক্রিম টিম, সাবান টাবান, মাখলে কম বয়সী দেখায় কিন্তু বয়স তো কমে না।
কিন্তু রাঙা দাদু বয়স কমানোর যন্ত্র তৈরি করে ফেলেছে। লোকে বলে না, চেষ্টা আর ইচ্ছে থাকলে সব হয়। আপু বাপি ওরা সব কথা শুনে বুঝতে পারলো রাঙা দাদু এখন বাচ্চা ছেলে হয়ে আমাদের সাথী হয়েছে। কারণ একটাই রাঙা দাদু সব সময় বলতো যদি বয়েস কমে যেত কি ভালো হতো। আমার বড় হতে চাই দাদু ছোট হয়ে যেতে চাইতো। আমরা যখন ভিডিও গেম খেলতাম তখন বলতো। "কি করছিস তোরা, ঘরে বসে যন্ত্রের সাথে খেলে কোথায় মজা, চলল, মাঠে গিয়ে খেল।"
আমরা বলতাম " মাঠটাতো ফ্লাট উঠেছে।"
দাদু বলতো উঠানে " তাহলে কুমীর দাঙ্গা খেল, লুকোচুরি খেল। বাংলাদেশ খেলার অভাব নেই "
মোটকথা রাঙা দাদু ছোট বেলায় ফিরে আসতে চাইতো।
তুমি বলবে মহাভারত , রামায়ণ , রূপকথায় কোথাও বয়স কমানোর কথা বলা নেই, তাহলে আমার গল্পে রাঙাদাদু পদার্থ বিজ্ঞান নিয়ে কি যাদু করলো যে তার বয়স কমে গেলো??
দেখো বিজ্ঞান আসলে যাদু বলে কোন কিছু হয় না। সব যুক্তি দিয়ে হয়। তোমার তোমাদের ছোট বেলার ছবি তুলে রেখেছো অনেকেই। আচ্ছা ছবি কিভাবে তুললে। ওই মুহুর্তে একটা প্রতিবিম্ব তৈরি করে তো। পদার্থ বিজ্ঞান জটিল সুত্র না গিয়ে এটুকু বলতে পারি, পৃথিবীতে কোনো কিছুই হারিয়ে যায় না। শুধু মাত্র রূপ বদলায়। যেমন বরফ থেকে জল, জল থেকে বাস্প, বাস্প থেকে মেঘ। মেঘ থেকে বৃষ্টি মানে জল। আমাদের দেহটা তো আসলে কার্বণ, অক্সিজেন, আরো কতকিছু দিয়ে তৈরি। ওগুলো সব খুঁজে বের করে রাঙা দাদু যন্ত্রটা তৈরি করেছে। যানো আমদের ওর যন্ত্রটা দেখাবে বলে ছিলো। কিন্তু আমরা দেখতে চাই নি আমরা তো বড় হতে চাই। ছোট হয়ে কি লাভ। তোমার জানি অনেক ছোট হতে চাও। ছোট হলে নিশ্চিন্তে মাবাবার আদর পাওয়ার যায়। আমার বাবা মা ছোট হতে চায় জানি। কিন্তু রাঙা দাদু ঐ মেসিন টা দেখানোর জন্য আমাদের ভোলা জ্যেঠীমার আমের আচার চুরি করতে আনতে বলছিলো। আমরা সপথ করেছি আর কোন দিন অন্যায় কাজ করবো না। মাকে কথা দিয়ে আমি। আর আচার, কেন পিঁয়ারা ও চুরি করবো না। আমরা কি রাজনৈতিক নেতা নাকি যে কথা দিয়ে কথা রাখবো না। তাই রাঙা দাদুর কথা শুনে আমের আচার চুরি করতে গেলো না। রাঙা দাদু নিজেই চুরি করতে গেলো। কিন্তু আমদের পাড়া পাহাদার কালু রাঙাদাদুকে চিনতে না পারে তাড়া করলো। রাঙা দাদু পালালো আর ফিরলো না।
আজ সকালে টিভি খুলে দাদা হাক ডাক দিলো। বীরভূম না কোথাকার একটা ছেলে দেখাবে বলে। ছেলেটা আমার বয়সী। টিয়াপাখির মতো ভৌত বিজ্ঞানের সব সুত্র টুত্র বলছে। তাই নিয়ে মিডিয়ায় লাফালাফি। দেখতে ইচ্ছে করছিলো না। তবু দেখলাম। ওমা এতো পালিয়ে যাওয়া রাঙা দাদু। সিং ভেঙে বাছুর দলে ঢুকে , এখন আমাদের বিপদে ফেলছে। বয়স কমানোর যন্ত্রটা বাড়িতে কোথাও রেখেছে ওটা খুঁজে বের করে, আমরা অঙ্কের মাষ্টার মশাই চাঁদ বাবুর বয়স কমিয়ে দেবো তখন কঠিন কঠিন সুত্র বলে তোমার ভাইরাল হওয়া বরিয়ে যাবে। আমাদের মধ্যে কেউ ভাবেন কি "যদি বয়েস কমে যেত" তাহলে ভালো হতো। তাহলে আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন ,যন্ত্রটা খুঁজে পাওয়া গেলে জানিয়ে দেবো।
