Unveiling the Enchanting Journey of a 14-Year-Old & Discover Life's Secrets Through 'My Slice of Life'. Grab it NOW!!
Unveiling the Enchanting Journey of a 14-Year-Old & Discover Life's Secrets Through 'My Slice of Life'. Grab it NOW!!

Subrata Nandi

Tragedy Classics

5.0  

Subrata Nandi

Tragedy Classics

পতিতার খেলাঘর

পতিতার খেলাঘর

8 mins
743


***১***

সুমন সান্যাল। সমাজের এক প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসাবে পরিচিত। কয়েক কোটি টাকার টার্ন ওভার। তাঁর নিজের কোম্পানিতেই কয়েকশো লোকের কর্মসংস্থান। এই কারণে এম.এল.এ, মন্ত্রী অনেকের সাথে ওঠাবসা। বিশাল সুসজ্জিত অফিস। সেখানেও অনেক উচ্চশিক্ষিত কর্মচারী। প্রায় প্রত্যেকটা মুহূর্ত এখন তাঁর কাছে দামী।

   সারাদিন বিজনেস বাড়ানোর মিটিং, কোয়ালিটি কন্ট্রোল সব একাধারে সামলাতে হয় তাঁকে। তাইতো আজ তাঁর কোম্পানির প্রোডাক্ট দেশে এমন কী বিদেশের মাটিতেও সমাদৃত। অনেক ঘাত প্রতিঘাত, ঝড় ঝাপটা সামলে আজ নিজে এই সুবিশাল জায়গায় পৌঁছাতে পেরেছেন। এরকমই এক কর্মব্যস্ততায় কাটছিল সুমনের দিনটি।

   হঠাৎ নিজের পারসোনাল এসিস্ট্যান্ট শ্রীময়ী ইন্টারকমে জানাল, "স্যার,এক ভদ্রমহিলা আপনার সাথে কথা বলতে চাইছেন। আমি তাঁকে কিছুতেই নিরস্ত করতে পারছি না। শুধু একটাই কথা। একবার আপনার স্যারকে আমার ফোনের সাথে যুক্ত করিয়ে দিন।"

"আরে আমি এখন মিটিং নিয়ে ব্যস্ত। আপনাকে তো বলেছি মিটিং চলাকালীন আমাকে কোনো ফোন ধরাবেন না," খানিকটা বিরক্ত হয়ে বলল সুমন স্যার।

"কিন্তু, উনি যে কোনো কথাই শুনতে চাইছেন না। খুব কান্নাকাটি করছেন। বলছেন উনি নাকি আপনার আপনজন। আপনাদের পূর্বপরিচিত।" শ্রীময়ী মৃদু স্বরে বলল।

"ঠিক আছে। ঠিক আছে,"এবার একটু নরম হয় সুমন বলল।

"কী নাম ভদ্রমহিলার?"

" অন্তরা রায়। উনি বললেন আপনার পূর্বপরিচিত।"

শ্রীময়ীর মুখে নামটি শুনেই বুকের মধ্যে ছ্যাঁত করে উঠল সুমনের শরীর। কেমন বিহ্বল হয়ে পড়লেন নিমেষে। পুরনো দিনের হারিয়ে যাওয়া অনেক রঙিন মলিন স্মৃতিকথা চোখের সামনে ভেসে উঠল।


***২***

- হ্যালো? কে? সুমনদা!

- আমি সুমন সান্যাল বলছি।এম ডি, সানি এন্টারপ্রাইজ।

"কাকে চাইছেন? আমাকে আপনার কী প্রয়োজন?" সুমন স্যার যথাসম্ভব নীচু গলায় কথা গুলি বললেন। 

- আমার খুব বিপদ। আজ সব রাস্তা বন্ধ। প্লিজ তুমি আমাকে উদ্ধার কর।

- শুনুন, আমি সুমনদা নই,সুমন সান্যাল। আর কোনো উদ্ধারকর্মীও নই। এটা বিসনেজ হাউস। আপনি পুলিশকে বলুন। যদি সত্যিই বিপদে পড়েন, তাহলে ওটা পুলিশের কাজ।আর এখন আমি খুব ব্যস্ত। পরে অফিসে এসে যোগাযোগ করবেন।তখন সম্ভব হলে বিস্তারিত শুনব। এখন রাখছি।

  মুহূর্তে অন্তরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়ল। একদিন এই অন্তরা বলতে অজ্ঞান ছিল সুমনদা। প্রতিটি মুহূর্তে তাঁর সান্নিধ্য ছাড়া কিছুই ভাবতে পারত না।জীবনের সব কিছু সঁপে দিয়েছিল তাঁর কাছে। এ কার কথা শুনছে! এত পরিবর্তন! আজ আর কেন শুনবে তাঁর মতো নষ্টা মেয়েছেলের কথা।তবে কী সুমন সত্যিই জানে তাঁর বর্তমান অবস্থার কথা?


***৩***

সুমন আর অন্তরা এক পাড়াতেই থাকত। তবে অন্তরা চিনত না সুমনকে। কিন্তু সুমন চিনত অন্তরাকে ছোটবেলা থেকেই। কারণ তাদের পাড়ায় অন্তরাদের এক বিশেষ মর্যাদা ছিল। সুমনেরর বাবা বনমালী রায়। একটা বেসরকারি বিদ্যালয়ে পিয়নের কাজ করতেন। খুব সৎ ও কর্তব্যপরায়ণ কর্মী ছিলেন।সবার বিপদে আপদে বনমালিদা হাজির। নিজের জীবন উজাড় করে ঝাঁপিয়ে পড়তেন তিনি। তাঁর নিজের অর্থের অভাব থাকলে কী হবে, সবার ভালোবাসার অভাব ছিল না তাঁর প্রতি। তাই বিদ্যালয়ের সবার অতি প্রিয় এই বনমালীদা। ভাগ্যের কী পরিহাস! ভালো লোকের মনে হয় স্থান নেই এই দুনিয়ায়! একদিন বিদ্যালয়ে আসার পথে গাড়িচাপা পড়ে মারা গেলেন তিনি। একেই অভাবের সংসার! তার উপর এই হঠাৎ দুঃসংবাদ! সুমনদের অভাবের সংসারে আকাশ ভেঙে পড়ল। সে তখন সবে ক্লাস নাইনে পড়ে। তবে ইতিমধ্যেই কয়েকটি টিউশনি করছে সংসারের সাশ্রয়ের কথা ভেবে। এই আকস্মিক দুর্ঘটনায় সুমনের মা মালতীদেবীকে খানিকটা বাধ্য হয়েই আয়ার কাজ নিতে হল শহরের এক প্রখ্যাত নার্সিং হোমে। মা ছেলের অভাবের সংসার কোনো মতে টেনেটুনে চলে যাচ্ছিল...।

 যতই সংসারের টানাটানি থাক, সুমনের পড়াশোনা বন্ধ হয়নি বনমালী রায়ের মৃত্যুর পরও। সুমন খুব মেধাবী হওয়ায় সবাই এগিয়ে এসেছিল তাদের সাহায্য করতে। বাবার স্কুলের হেড মাস্টার মশাই সুমনকে অবৈতনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। অবৈতনিক স্কুল আর মাস্টারমশাইদের বিনি পয়সায় পড়ানোর জন্য কোনোমতে সুমনের পড়া এগিয়ে চলছিল।

  উল্টো দিকে অন্তরারা বেশ সচ্ছল পরিবার। তার বাবা অভ্রনীল রায় খুব বড়লোক। এক উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মচারী। এই কারণে পাড়ায় একটা আলাদা সম্ভ্রম ছিল তাঁদের পরিবারের। অন্তরা এক প্রখ্যাত কনভেন্ট স্কুলে পড়ত। তাই ওর বেড়ে ওঠা সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশে। বরাবর একটু নাক উঁচু স্বভাবের মেয়ে। সব সময় ভাবে ভঙ্গিমায় বুঝিয়ে দিত এই পাড়ায় তাদের স্থান সবার উপরে। অন্তরার মা সুচেতা রায় অত্যাধুনিকা ছিলেন। ক্লাব পার্টি এসব নিয়েই মশগুল থাকতেন সারাটা দিন। নিজের স্বামী বা মেয়ের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করার ফুরসত নেই তাঁর। অন্তরার মা বাবা থেকেও যেন নেই। সবাই কেমন নিজের নিজের জগৎ নিয়ে ব্যস্ত। 

  মেয়েকে পয়সা খরচা করে দামী স্কুলে ভর্তি করে দিলেই কী সব দায়িত্ব শেষ হয়ে যায়! মাঝে ওর খুব খারাপ লাগে বাবা মায়ের এই চরম উদাসীনতা দেখে। ধনী সচ্ছল পরিবারের মধ্যে জীবন কাটানো অনেক সময় দুস্কর হয়ে ওঠে। কে বুঝবে তার মনের দুঃখের কথা? সবাই ভাবে অন্তরার কতোভ সুখ! হ্যাঁ, সুখ হয়তো আছে,তবে কোনো কিছুতেই শান্তি পায় না সে। কোথায় যেন একটা শূন্যতা কাজ করে সব সময়!



***৪***

অন্তরা সুমনকে খুব একটা ভালোভাবে চিনত না। হয়তো এক পাড়ায় থাকার সুবাদে দু একবার চোখাচোখি হয়েছে। বাস ঐ পর্যন্তই। যদিও তারা এক পাড়াতেই থাকত। সুমন কিন্তু খুব ভালো ভাবেই চিনত অন্তরাকে। ছোটবেলা থেকে দেখে আসছে একটা ফুটফুটে মেয়ে পাড়ার মধ্যে দিয়ে হুশ করে বেরিয়ে যায় গাড়ি করে। কোনোদিন হেঁটে যেতে দেখে নি অন্তরাকে। সুমন খুব অবাক চোখে তাকিয়ে থাকত লাল টুকটুকে গাড়িটার দিকে!

  মাঝে মাঝেই ভাবত, ইস! ওদেরও যদি এরকম একটা গাড়ি থাকত! কী মজাই না হতো! গরিবের ঘরে জন্মানো যে কী পাপ! অনেক সময় অজান্তেই এই প্রশ্ন নাড়া দিত তার মনে। এই জীবনে কী আর কোনো দিন সুখের মুখ দেখতে পাবে না। মাকে কী সারাজীবন আয়া হয়েই থাকতে হবে! মাঝে মাঝে ধিক্কার দিতে ইচ্ছা করত নিজের অদৃষ্টকে।

  সুমন ও অন্তরা সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে বেড়ে উঠলেও এক বিশেষ ঘটনায় দু'জনের মধ্যে আলাপ শুরু। সময়টা ছিল ডিসেম্বর মাস। এমনই শীতের বিকেল খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়। তার উপর সেদিন ছিল হাল্কা মেঘলা। তাই আলো একদম কমে এসেছিল। শীতকালের পড়ন্ত বিকেলে সুমন টিউশন সেরে ফিরছিল পাড়ার পেছনের রাস্তা দিয়ে। হঠাৎ দেখে একটি মেয়েকে কয়েকটি ছেলে ঘিরে ধরেছে। চেনা তো দূরের কথা, ছেলেগুলোকে ও কোনোদিন দেখেনি এপাড়ায়। কাছে আসতে দেখে মেয়েটি এপাড়ার অন্তরা। বখাটে ছেলেরা অন্তরার শ্লীলতাহানির চেষ্টা করছে। অসহায় মেয়েটিকে এই অবস্থায় দেখে সুমন ঝাঁপিয়ে পড়ল বাঁচাতে। 

  সুমনের রুদ্রমূর্তি দেখে বেপাড়ার ছেলেরা আর সাহস পেল না কিছু সর্বনাশ করতে। আতঙ্কিত অন্তরা সুমনের দিকে অবাক ভাবে তাঁকিয়ে থাকল।

  "কী দেখছ?এখন আর কেউ আসবে না। সবাই ভয় পেয়ে পালিয়ে গেছে। বিপদ কেটে গেছে। ভাগ্যিস আমি এই পথে আসছিলাম! তা না হলে কী যে হত!” অন্তরাও শিউরে উঠল এই অকস্মাৎ বিপদের কথা ভেবে!

"আপনাকে যে কী বলে ধন্যবাদ দেব, বুঝতে পারছি না। কোনো দিন ভাবিনি এরকম বিপদ আসবে আমার জীবনে।"অন্তরা আতঙ্কিত হয়ে বলল।

"না না ধন্যবাদের কিছু নেই, এটা আর এমন কী করেছি।যে কেউ থাকলেই করত।আমিও ঠিক সেই কাজটাই করেছি", লজ্জিত হয়ে সুমন বলল। সেই সূত্রপাত দু'জনের প্রথম আলাপের।

  তারপর অন্তরার বাবা মেয়ের মুখে সব শুনে বাড়িতে ডেকে পাঠালেন সুমনকে।দিনটা ছিল রবিবার। সুমন সকালে উঠে ভাবল আজ বাজারটা তাড়াতাড়ি সেরে পড়তে বসতে হবে। কারণ আরেকটু পর থেকেই টিউশনি ব্যাচ শুরু হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই সে বাজারে ছুটল। বাজারের মুখে দেখা অন্তরারদের কেয়ারটেকারের সাথে। সুমন তাঁকে চেনে না।কিন্তু হয়তো এই কেয়ারটেকার চেনে তাকে।চিনতেই পারে, কারণ পাড়ার পুজো থেকে শুরু করে ব্লাড ডোনেশন সব কিছুতেই তার উপস্থিতি থাকবেই। সুমন ছাড়া অজন্তা ক্লাবের বাকি সদস্যরা কোনো কিছুই চিন্তা করতে পারে না।

  সুমনের কাছে অন্তরাদের অনেকদিনের কেয়ারটেকার বাচ্চুকাকা এসে বললে, "তোমার নাম কী সুমন সান্যাল গো দাদাবাবু?" সুমন তখন বাজার করে ফিরছে। দুই হাতে ব্যাগ। হঠাৎ এই অপরিচিত লোককে তার নাম ধরে ডাকায় খানিকটা অবাকই হয়ে গেল। কয়েক মিনিট তাকিয়ে থাকার পর বলল, "হ্যাঁ, আমি সুমন সান্যাল। কী হয়েছে?"

- না, না, তেমন কিছু হয়নি গো দাদাবাবু। অন্তরা দিদিমনির বাবা তোমায় ডেকে পাঠিয়েছেন গো।

"কেন? আমি আবার কী করলাম! অন্তরার বাবার সাথে আমার আবার কিসের দরকার?" সুমন বাচ্চুকাকাকে বলে উঠল।

- না গো দাদাবাবু, তেমন বিশেষ কোনো দরকার নেই।তবে তুমি দিদিমণির সম্মান বাঁচিয়েছ, তাই একটিবার দেখা করতে চাইছেন কর্তাবাবু। তুমি আর না কোরোনি।

"ঠিক আছে, আমি বিকেলবেলা গিয়ে দেখা করে আসব। " অকপটে সুমন বলে উঠল।



***৫***

অন্তরাদের সুসজ্জিত বড় বাড়ি। দামী আসবাব পত্রে সুন্দরভাবে সাজানো প্রতিটি ঘর। সামনে বিশাল বারান্দা। বারান্দার ছাদের থেকে ঝুলিয়ে রাখা সুন্দর সুন্দর রঙিন টব। তাতে নানান ধরনের ক্যাকটাস। অন্তরার বাবা সামনের লনে বসে কী একটা জার্নাল পড়ছিলেন। মুখে চুরুট। পরনে সিল্কের পায়জামা পাঞ্জাবি।

 সুমন কিছুটা ইতস্তত করছিল। বাড়ির গেটের মধ্যে দিয়ে সঙ্কোচে প্রবেশ করল। গেটের আওয়াজে অভ্রনীলবাবু চোখ মেলে দেখলেন এক মলিন ড্রেসে সদ্য কৈশোর পেরনো যুবক দাঁড়িয়ে আছে।

- তুমি? এখানে কী দরকার? 

- আজ্ঞে আমি সুমন সান্যাল, আপনি আমাকে দেখা করতে বলেছিলেন।

- ওহ,তুমিই সেই ছেলে! যে আমার মেয়ের বিপদে এগিয়ে এসেছিলে। অনু খুব তোমার কথা বলছিল।

"না, না, সেরকম কিছু নয়।আমার জায়গায় অন্য কেউ থাকলেও এই একই কাজ করত।" একটু সঙ্কোচে বলে উঠল সুমন।

 ইতিমধ্যে অন্তরাও এসে পড়েছে ভিতর থেকে। "ও আপনি! আসুন আসুন ভিতরে।"

- না না,আজ আমি আসি,পরে কোনোদিন আসব।

"তা বললে হবে! আজ একটু হলেও বসতে হবে।" অন্তরা নাছোড়বান্দা। 




***৬****

দেখতে দেখতে দু'জনের মধ্যে আলাপ গাঢ় হলো ধীরে ধীরে।অন্তরার অনেকটা বডিগার্ডের ভূমিকায় পরিণত হলো সুমন। কিন্তু সুমন সত্যিই ভালবেসেছিল অন্তরাকে।জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত অন্তরার সাথে থাকতে চায়। ওর সান্নিধ্য সুমনকে পরম তৃপ্তি দেয়। মনে মনে খুব ভালবেসে ফেলেছিল অন্তরাকে। কিন্তু মুখ ফুটে কোনোদিন বলতে পারেনি অন্তরাকে। অন্তরা সুমনকে বিশ্বস্ত বডিগার্ড ছাড়া কিছুই ভাবেনি। সুমন একদিন কিছুটা ইতস্তত করে বলেই ফেলল মনের অভিপ্রায়।

- আমি একটা কথা অনেকদিন ধরেই ভাবছিলাম বলব। কিন্তু তুমি কী ভাবে নেবে!

  সুমনের মুখের কথা কেড়ে নিয়ে অন্তরা বলল, "আরে বলেই ফেলো, কী এমন কথা যে এত কিন্তু কিন্তু ভাব?" সুমনার চট জলদি উত্তর। 

"আমি তোমাকে ভালবাসি, বিয়ে করতে চাই", মাথা নীচু করে সুমন বলেই ফেলল।

"কী!! ভালবাসা! বিয়ে!তোমাকে! তুমি ভাবলে কী করে একটা বেকার অকর্মণ্য ছেলেকে আমি জীবনসঙ্গী বানাব!" খানিকটা বিরক্তি মেশানো তাচ্ছিল্যের সুরে বলে উঠল অন্তরা। সেদিন মাথা নীচু করে অন্তরার জীবন থেকে সরে গিয়েছিল সুমন। মনে মনে সংকল্প করেছিল যে জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়ে তবে আবার মুখোমুখি হবে।

  নিজেকে দুমড়ে নিঙড়ে আজ এই সুবিশাল জায়গায় পৌঁছেছে। কিন্তু অন্তরার সামনে আর আসতে পারেনি। কারণ খবর পেয়েছিল এক ধনী ব্যাবসায়ীর সাথে ধুমধাম করে বিয়ে হয়েছিল। বহু লোক নিমন্ত্রিত ছিল, শুধু সুমন ছাড়া। সব দেখেশুনে সুমন দুঃখ পেয়েছিল ঠিকই, কিন্তু তখন এই বলে নিজেকে সান্ত্বনা দিয়েছিল যে সে তো বেকার। কিবা ক্ষমতা তার!


***৭***

হঠাৎ সম্বিত ফিরে পেল সুমন। "পরে কেন? আজ নয় কেন? আমার বিপদে একদিন তো তুমিই উদ্ধার করেছিলে! চিনলে না আজ! একদিন আমাকে ছাড়া ভাবতেই পারতে না!"


- ওহ্! অন্তরা তুমি কাঁদছ কেন?তোমার তো সক্ষম ধনী সুপুরুষ ছেলের সাথে বিয়ে হয়েছিল! তাহলে?

  "আমার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে! ওই পিশাচ নরখাদক আমাকে তিলেতিলে ভোগ করে এক পতিতালয়ে বিক্রি করেছে।

 নতুন খেলাঘরে এখন বহু লোকের যৌন লালসার পুতুল আমি। আজ তুমি ছাড়া কেউ নেই!" এক লহমায় কাঁদতে কাঁদতে কথা গুলি ফোনে বলে ফেলল অন্তরা।

  মুহূর্তে চোখের সামনে ভেসে উঠল সুমুনের শেষ সাক্ষাতের কথাগুলি আরেকটি বার।

"তুমি ভাবলে কি করে একটা বেকার অকর্মণ্য ছেলেকে আমি জীবনসঙ্গী বানিয়ে আগামীর জীবনে আঁধার ডাকব!"

  হায়! বিধাতার কী লীলা আজ সেই আঁধারকে আবার আলোকিত করার জন্য বেকার অকর্মণ্য ছেলের শরণাপন্ন!!!


Rate this content
Log in

More bengali story from Subrata Nandi

Similar bengali story from Tragedy