STORYMIRROR

Jagori Sarkar

Horror Tragedy Crime

5.0  

Jagori Sarkar

Horror Tragedy Crime

প্রতিশোধ

প্রতিশোধ

9 mins
384

বাথরুমে ঢুকে শাওয়ার খুলে দিল সামিনা। জলের ধারা ওর শরীরকে ছুয়ে যাচ্ছিল, মনের মধ্যে এক অদ্ভুত শান্তি অনুভব হল। এইবার সে একটু অন্য ভাবে বাঁচবে। এত পথ একা চলতে চলতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। আজ সব কিছু শেষ।

 চান সেরে, শাওয়ার বন্ধ করে, বাথরোব পড়ে বেড়িয়ে এসে টেবিলের সামনে থেকে ফোনটা তুলেনিল। স্ক্রীন এ চোখ পড়তেই দেখতে পেল খবরটা,“বিখ্যাত অভিনেত্রী রমলা সেন কাল রাত থেকে নিরুদ্দেশ”। মনটা হঠাৎ চঞ্চল হয়ে যায়, মনে পড়ে কিছু না বলা কথা। এই খবরটার জন্য এতকাল অপেক্ষা করছিল সামিনা।

আজ তার প্রতিশোধ পূরণ হবে। স্পন্দন বুঝবে যে নরক যন্ত্রণা কাকে বলে। এই ঘটনার পেছনে লুকিয়ে আছে এক নৃশংস অতীত। দশ বছর আগে কলেজের শতবার্ষিকী উৎসবের দিন ওর সাথে স্পন্দন এর আলাপ হয়। সতদ্রু সিং এর গান শুনতে খুব ইচ্ছা সত্বেও কলেজ পাস পাচ্ছিল না সামিনা।


 শেষ মুহূর্তে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় এক অচেনা সিনিয়র দাদা। মিষ্টি মোটা মেয়েটা এত বায়না করছে দেখে সে তাকে একটা পাস যোগাড় করে দেয়। তারপর থেকেই ভালোবাসা শুরু হল। কলেজের তিন বছর কিভাবে কেটে গেছে বোঝাই গেল না। ওরা বিয়ে করবে বলে বাড়িতেও কথা বলে নিয়েছিল। একটু আপত্তি করলেও সবাই মেনে নিয়েছিল। হায় রে কপাল! বিধাতা হেসেছিল আড়ালে।

সেদিন স্পন্দন সেনের সপারিবারএ যাওয়ার কথা ছিল সামিনার বাড়িতে। বিয়ের পাকা কথা হত। সবাই অপেক্ষা করছিল কিন্তু স্পন্দন এর দেখা নেই। অনেকবার ফোন করার পর কলটা ধরলো,”হ্যালো! কোথায় তুই? সবাই অপেক্ষা করছে। তাড়াতাড়ি আয় না!”

“স্পন্দন ঘুমাচ্ছে, কেন বার বার ফোন করে বিরক্ত করছেন! সে আপনাদের বাড়ি যাবে না”।

রাগে গা জ্বলছিল সামিনার। কার সাথে আছে স্পন্দন? কে এই মহিলা?

“আপনি.. আপনি কে? স্পন্দন কোথায়? আজ আমাদের বিয়ের পাকা কথার দিন। ওকে ফোন টা দিন! ইয়ার্কি করার সময় এটা না! প্লীজ ফোনটা দিন!”

কিছুক্ষণ সব শান্ত, “ হ্যালো! হ্যালো!”, কেঁদে কেঁদে বলছে সামিনা।

“স্পন্দনকে ভুলে যান। ও আপনাকে আর ভালোবাসে না!”। এরপর কলটা কেটে গেল। জীবনে এমন একটা দিন দেখতে হবে সে কোনদিন ভাবে নি। কান্নায় ফেটে পড়েছিল।


“টিংটং”, বেলটা বাজতেই চমকে দরজার দিকে তাকাল সামিনা ফারুখ। এই অবেলায় কে এল? দরজা খুলতেই দেখতে পেল সামনে দাড়িয়ে আছে একজন মাঝবয়সী ভদ্রলোক। “কে? আপনি?”, জিজ্ঞেস করল সামিনা।

“ নমস্কার আমার নাম সূর্য বসু। আপনি আমায় চিনবেন না। ভিতরে আসতে পারি?”, বলে সোজা ঢুকে পড়লেন সামিনার ফ্লাটে।

“আরে! আরে! দাঁড়ান .. কোথায় যাচ্ছেন? বিল্ডিং এর ভিতরে আসলেন কি করে?”

“সিকিউরিটি! সিকিউরিটি!”, জানলার কাছে গিয়ে দেখতেই চোখে পড়ল লোকটা নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। রাগ হল আবার মায়াও হল। কি আর বলবে সারাদিন রাত একটা লোক কে দিয়ে হয় না। চোখ ঘুরিয়ে ঘরের মধ্যে তাকাতেই সামিনা দেখল এবার লোকটা সোফার উপর বসেছে। খুব বিরক্ত হয়ে সে বলল, “কে আপনি মশাই? রাত দুপুরে একজন অভিনেত্রীর ঘরে ঢুকে পড়লেন! পুলিশ না সাংবাদিক না কি ফান?”

সামনে একজন পরমা সুন্দরী মহিলাকে দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়। সে যেনো ভাবতেই পারছি না! এই সেই?.. না অন্য কেউ? কি করে কেউ এত সুন্দর হতে পারে? এত কল্পনাও করা যায় না। প্রতিশোধ স্পৃহাই এতটা কুটিল! একজন সহজ সরল মানুষকে করে তোলে ভয়ংকর এবং লোলুভ্য।


আপসোস হয় তবে মুখে হাসি বজায় রেখে বলে, “যদি বলি আমি স্পন্দন সেনের বন্ধু”। গ্লাসে জল ঢালতে গিয়েও থেমে গেল সামিনা। এই নামটা তার জীবনের সাথে জড়িত সে কথা এইখানে কেউ জানে না। সেদিন সেই মহিলার সাথে কথা বলার পর সামিনা খুব ভেঙ্গে পরে। বাড়ির লোক, আম্মি আব্বু খুব অপমানিত হয়েছিলেন এবং ওকে অনেক কথা শুনিয়েছিলেন। রাগে ঘেন্নায় দুঃখে সে নিজেকে ঘরে বন্দি করে নেয়। কেরোসিন তেল গায়ে ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে আত্যহত্যা করতে যাচ্ছিল। দরজা ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে দাদা ওকে হাসপাতালে ভর্তি করে। তারপর তার মুখের কিছু অংশ পুড়ে যাওয়ায় প্লাস্টিক সার্জারি করে নতুন মুখ দেয় ডক্টর সুবোধ ব্যানার্জী। কিছু মাস ব্যায়াম ও যোগা করে তৈরি হয়েছিল এক পরমা সুন্দরীর শরীর, জন্মেছিলেন আজকের বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী সুজাতা মিত্র।

“ঠিক কি বলতে চান?”


“ যদি বলি একটা গল্প বলতে চাই”, বলে কটু দৃষ্টিতে তাকালেন ভদ্রলোক। যদিও একটু ভয় হচ্ছিল মুখে হাঁসি ধরে রেখে সামিনা বলল, “হুমম .. এই বার বুঝেছি। তো এই লাইনে নতুন নাকি? আগে কখনও দেখিনি। দেখুন আমি কিন্তু ভালো গল্প আর রোমান্টিক গান না থাকলে সেই সিনেমায় অভিনয় করি না। নতুন লেখকদের ছাপোষা গল্প আমার পশায় না”।

আরো কিছু বলতে যাচ্ছিল সামিনা , লোকটা গলা ঝেড়ে নিয়ে বললেন, “ আমি লেখক নই ম্যাডাম। আমি আপনাকে ভাল করে চিনি.. সামিনা।“

গ্লাসটা উঠিয়ে জল মুখে দিয়েই হতচকিত হয়ে তাকাল সামিনা। কি করে হতে পারে? কে এই আগন্তুক? কি চায়? কেউ এই নাম জানে না! তাহলে?

সেই দিনের কথা মনে পড়ে গেল। ডাক্তারবাবুর হাত ধরে দাদাকে দিয়ে কিছু কথা বলেছিল, “ বলে দিন সামিনা আর বেঁচে নেই। দয়া করুন ডাক্তার বাবু.. আমাদের পরিবারের কেউ ওর কষ্ট বুজবে না। সবাই ওকে খারাপ মেয়ে বলবে। আম্মি আর আব্বুকে এক ঘরে করবে। পুলিশ কেস হয়ে যাবে আত্যহত্যা করতে চেষ্টা করেছে বলে।“

সবাই জানে সামিনা আর বেঁচে নেই। ওই ঘটনার পর সামিনা অর্থাৎ সুজাতা চলে আসে কলকাতায়। তারপর নতুন জীবন.. অভিনয় জগৎ এবং প্রতিশোধ।

“মানে?”

উঠে গিয়ে জানালার সামনে দাড়িয়ে একটা সিগারেট ধরাল আগন্তুক। একবার টান দিয়ে ধোয়ার কুণ্ডলী আকাশের দিকে ছেড়ে শুরু করল,"গল্পটা শুরু হয় কলকাতার সিটি কলেজে। সেখানে ইতিহাসে অনার্স পড়ত এক ছাত্র। খুব মেধাবী ছিল, ভালোবাসত কবিতা লিখতে ও গান গাইতে। একদিন বাড়ি থেকে খবর এলো বোন বাড়ি ফেরে নি। অনেক থানা পুলিশ করে শেষে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় কলেজের পুকুর পাড়ে, মাথায় গভীর ক্ষত। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বোন কে এই অবস্থায় দেখে রোজ কাঁদত ছেলেটা। এই ভাবে সাত দিন পর .. মারা যায়। শেষবার সে বলেছিল,” দাদাভাই, তুই ওকে ছাড়িস না রে.. আমায় কথা দে.. তুই.. তুই নিশ্চই প্রতিশোধ নিবি! বল..”

এই বলে সে থামল তারপর চোখের জল মুছতে মুছতে বলল,”একটু .. জল”।

সামনে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকা সামিনার হুস ফিরল। কাঁপা হাতে জগ থেকে জল গ্লাসে ঢেলে এগিয়ে দিল। গোগ্রাসে জল খেয়ে শুরু করল,” তারপর শুরু হল সেই ভয়ঙ্কর দিন। বোনের মৃত্যু শোক সঝ্য করতে পারত না। রাতে ঘুম নেই, সব সময় .. মনে হতো.. বোন কাঁদছে.. আমায় .. আমা.. ডাকছে.. পারলি না। দাদা তুই প্রতিশোধ নে! আমার সাথে অন্যায় হয়েছে!”

“না.. না না.. ভাবতাম মনের ভুল। অনেক কষ্ট করে ডাক্তার দেখিয়ে সুস্থ হলাম।“

“দাঁড়ান দাঁড়ান.. আপনার বোনের নাম? মানে কে?”

“তানিয়া বসু.. কি কিছু মনে পড়ল .. ম্যাডাম?”

সামিনা কিছু বলার আগেই থামিয়ে দিয়ে বললেন ,"এইভাবে প্রায় ছয় মাস কেটে গেল। আমি এবার দুর্গাপুরে আপনাদের কলেজে এ গেলাম। সেখান থেকে সেদিন কি হয়েছিল খোঁজ নিতে হোস্টেল এ গেলাম। ওখানে আপনাদেরই পাশের ঘরের একজনের কাছে জানলাম আপনাদের বন্ধুত্বের কথা। সে বলেছিল, “সামিনা আর তানিয়া খুব ভালো বন্ধু ছিল। এক সাথে সব সময় থাকত। ওই ঘটনার তিন মাস আগে থেকে খুব ঝগড়া হত। আমরা অনেক বুঝিয়েছিলাম তবে লাভ হয়ে নি”।

“সেদিন শেষবার তানিয়া কার সাথে ছিল?”

“ জানি না। তবে সেদিন সামিনা অনেক রাতে ফিরেছিল। আমরা ভেবেছিলাম স্পন্দনদার সাথে ছিল।“

“হুঁ.. ঠিক আছে”

“আমি কিছুটা বুঝতে পেরেছিলাম তাই ওই পুকুরের পাড়ে আবার যাই। সেখান থেকে এটা পাই। দেখুন তো চিনতে পারেন কি না ? “

একটা আংটি এগিয়ে দিলেন সামিনার দিকে। “এই আংটিটা আমি ওখানেই .. মানে ঠিক যে পাথরটা দিয়ে আপনি আমার বোনের মাথায় মেরেছিলেন.. সেই রক্ত মাখানো পাথরটা পাশেই.. ছিল।“

“আপনার কাছে কি প্রমাণ!”

“ প্রমাণ আছে ম্যাডাম। এই আংটিটা আমি আমার এক বন্ধুকে .. আঙ্গুলের ছাপটা শুধু মিলিয়ে নিয়েছিলাম। সেখানে পাথরটাতেও আপনারই আঙ্গুলের ছাপ পাওয়া গিয়েছিল।“

“আপনাকে আমি পুলিশে দিতে পারতাম কিন্তু আমি নিজে আপনাকে এমন শাস্তি দিতে চেয়েছিলাম যা হবে মৃত্যুর চেয়েও ভয়ঙ্কর।“

“আপনার কলেজে আমি এবার ভর্তি হই এবং বন্ধুত্ব করি আপনার সিনিয়র এবং বয়ফ্রেন্ড স্পন্দন এর সাথে। ওর তখন কলেজ প্রায় শেষ। আপনাকে স্পন্দন আমার কথা বলে নি কারণ আমি ওকে বারন করেছিলাম। একটা লম্পটকে নিজের জালে ফাঁসানো খুব কঠিন ছিল না। আমার বোন কে আপনি শুধু শুধুই সন্দেহ করে মেরে ফেলেছিলেন। স্পন্দন আমাকে সব কথাই বলেছিল। সে তানিয়ার সাথে শুধু শুতে.. “

“চুপ করুন!.. আপনি.. আপনি ..জানেন না .. তানিয়া ওকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিতে চাইতো। না! না! .. বেরিয়ে যান!”

“শুনতে খারাপ লাগছে .. বেচারা.. না না .. এখানেই শেষ নয়। শুনতে আপনাকে হবেই বুঝলেন। একদিন আমি রমলাকে আমার বাড়িতে ডেকে গান নিয়ে কিছু কথা বলছিলাম, স্পন্দন রমলাকে দেখে আমায় অনেক প্রশ্ন করল। ব্যাস! আমি শুধু পরিচয় করিয়ে দিলাম এবং আপনাকেও স্পন্দন এবার ছাড়ার একটা সুযোগ পেয়েই গেল। সেদিন যে আপনি রমলার সাথে কথা বলে আত্যহত্যা করতে যাবেন আমার কিছুটা আন্দাজ ছিল। আপনি পুলিশ কেস এ জড়িয়ে যেতেন। আমিও তখন সব প্রমাণ দেখিয়ে আপনাকে জেলে পাঠাতাম।“

“ আপনি যে আরো বড় খেলোয়াড় সেটা আমার জানা ছিল না। প্রথম প্রথম আপনার মৃত্যুর খবরটা সত্যি ভেবে নিয়েছিলাম। সবাই খুব খুশি ছিল। স্পন্দন একটু কষ্ট পেলেও কিছুদিন পর ভুলে গিয়ে রমলার সাথে বিয়ে করে নিয়েছিল। রমলাকে আমি বোনের মতন দেখতাম। স্পন্দনকেও আমার বোনের মৃত্যুর জন্যে আমি দায়ী মনে করতাম তবে আপনার সাথে হওয়া ঘটনার পর থেকে স্পন্দন অনেক বদলে যায়। সে রমলাকে সত্যি ভালোবাসত। শুধু একটা ব্যাপার ওকে রমলার থেকে দূরে করে দিচ্ছিল। বিকেলে বন্ধুদের সাথে প্রায় পার্টি করত, মদ খেয়ে বাড়ি ফেরা, প্রথম সন্তান ক্যারিয়ারের জন্যে নষ্ট করা এই সব রমলার সঙ্গে সম্পর্কটাকেও কঠিন করে তুলেছিল”।

“ঠিক এই সময় আবার ফিরে আসেন সামিনা ফারুখ.. নতুন মুখ এবং নাম সুজাতা মিত্র। আমাকে রমলা বলেছিল আপনার কথা। সেই সময় গুরুত্ব দিই নি। পরশু সকালের কাগজ পেয়ে দেখি সেই ভিডিওটার কথা। গুগল খুলতেই সেই শিকারুক্তি, “ না না.. স্পন্দনকে আমি ভালোবাসি আর ওই মেয়েটা তো… স্পন্দন খেলতে খুব ভালোবাসত। হা হা .. স্পন্দন ওকে নিজে বলতে চেয়েছিল.. কিন্তু আমি ওকে আর যেতে দিতে পারতাম না। সেদিন আমি ওর খাবারে ঘুমের অষুধ দিয়ে.. তারপর সামিনার ফোন পেয়ে আমি বলে দিয়েছিলাম স্পন্দন ওকে বিয়ে করবে না। ও সেটা শুনে সুইসাইড করবে জানতাম না। তবে এটা ভালই হয়েছে .. পথের কাঁটা সরে গেছে। আমি সামিনাকে মরতে বাধ্য করেছিলাম। হা হা.. হা হা হা হা!" 

“রমলাকে এই ভাবে বদনাম করে ওর ক্যারিয়ারটা শেষ করে দিলেন! আপনি ওই ভিডিওটা ভাইরাল করেছিলেন।"

চোখ বেয়ে জল ঝরছে সামিনার, মনে ভীষন রাগ। এই লোকটা .. এত কিছু? তবে কি সত্যি তানিয়াকে ও ভুল বুঝেছিল? স্পন্দন এতটা নীচ! একবারও রমলার কথা ওকে বলে নি! ছি! ছি! ও শুধু সন্দেহ করে তানিয়াকে খুন?

এবার আর চুপ থাকা যায় না। কাল রাতে রমলাকে সরিয়েছে .. আজ সূর্যকে শেষ করে ফেলতে হবে নইলে সবাই জেনে যাবে। না না.. এ হতে পারে না .. সব শেষ হয়ে যাবে। নতুন জীবন .. ওর সিনেমায় কাজ। এই লোকটা.. একে শেষ।

এইবার সামিনা আস্তে আস্তে এগোল সূর্যর কাছে তারপর সজোরে একটা ফ্রুট নাইফ দিয়ে আঘাত করতে গিয়ে দেখল তার হাত যেনো লোকটা ভিতর দিয়ে বেরিয়ে গেল।

সামিনা উঠে দাড়িয়ে আবার যেই ছুরিটা ওনার পেটে ঢোকাতে গেল ছুরি সমেত মাটিতে পড়ে গেল। লোকটার কোন শরীর নেই? কে ?

“কে? কে? কে আপনি? আপনাকে ছুঁতে পারছিনা কেন? বলুন না?”

এইবার সূর্য সামিনার দিকে তাকাল আর  হাঁসতে লাগল,"হা হা.. হা হা হা হা .. ও হো হো হো হো .. কতবার মারবেন? আর কতগুলো খুন করবেন?”

সামিনার মাথা ঘুরছিল, হঠাৎ সব অন্ধকার হয়ে গেল।

স্পন্দন ঘরে বসে সকালের কাগজটা খুলতেই কিছু খবর চোখে পড়ল।

 “কাল রাতে নবাগতা অভিনেত্রী সুজাতা সেনকে তার আলিপুরের ফ্ল্যাট এ ফান থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার বাড়িতে পাওয়া একটি স্বীকারক্তিতে লেখা ছিল, “আমার আসল নাম সামিনা ফারুখ। আজ থেকে সাত বছর আগে আমি আমার বন্ধু তানিয়াকে সন্দেহের বশে খুন করি। আমার বয়ফ্রেন্ডের সাথে বিয়ে ভেঙ্গে যাওয়ার পর আত্যহত্যা করতে গিয়ে বেঁচে যাই এবং পরিচয় বদল করে কলকাতায় চলে আসি। রমলাকে বদনাম এবং প্রতিশোধ নেওয়ার ইচ্ছায় ওর সাথে বন্ধত্ব করি এবং ওর সত্যিটা ভিডিও করে স্ক্যান্ডাল বানাই। নিজের দোষ স্বীকার করে আমি মরে যাচ্ছি..কেউ দায়ী না।"

“সামিনার মৃত্যুর ঠিক দুদিন আগে জলে ডুবে মারা যান বিখ্যাত অভিনত্রী রমলা সেন। সম্ভবত স্ক্যান্ডাল ভিডিও দেখে আত্যহত্যা করেছিলেন। ওর লাশের পাশে পাওয়া গেছে গায়ক সূর্য বসুর মৃতদেহ। সম্ভবত রমলাকে বাঁচাতে গিয়ে নিজের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন।"


 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror