প্রতীক্ষা
প্রতীক্ষা
স্কুল থেকে ফিরেই মেয়েটি বারান্দায় গিয়ে একটু আড়াল থেকে রাস্তার দিকে চেয়ে থাকে। ছেলেটি ওই সময়েই রোজ বাস ধরতে আসে। কতটুকুই বা দেখা, বাস আসতে যতক্ষণ। ছেলেটিকে সে চেনে না, অথচ কোনদিন দেখতে না পেলেই মনটা কেমন অস্থির হয়ে ওঠে। নিপা শুনে বলেছিল, “দেখাস তো ছেলেটাকে। চেষ্টা করে দেখব যদি তোর জন্য কিছু করতে পারি”। একদিন বন্ধুদের সাথে গল্প করতে করতে স্কুল থেকে ফেরার সময় দেখে ছেলেটি বাসের জন্যে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সেদিন বোধহয় অন্যদিনের থেকে একটু আগে এসেছে।
নিপাকে দেখাতে ও বললে “ওমা ওতো আমার মামাতো দাদা, ইভনিং কলেজে পড়ে, আয় আলাপ করিয়ে দিই।” মুখোমুখি হতে মেয়েটি লজ্জায় কিছুই বলতে পারেনি। ছেলেটি কেবল হেসেছিল। বড় সুন্দর সেই হাসিমুখ। একটা ভাল লাগায় মনটা আচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছিল। সেদিনের সাক্ষাতের পর থেকে মেয়েটির কেমন জানি মনে হত ছেলেটির চোখও আড়ে আড়ে বারান্দায় তাকেই খোঁজে। রোমাঞ্চিত কিশোরী নিপার মাধ্যমে তার দাদাকে নিবেদন করেছিল অন্তরের ভাল লাগা। নিপা তার দাদার কাছে ওই নিবেদন কতটা অর্পণ করতে পেরেছিল তা জানা নেই তবে হ্যাঁ বা না কোন উত্তরই এনে দিতে পারেনি। এরপর একদিন ছেলেটা এল না, তারপর দিন, তারপরেও। জিজ্ঞেস করতে নিপা জানিয়েছিল যে পরীক্ষা শেষ হতেই ও দেশের বাড়িতে চলে গেছে। দর্শনের সম্ভাবনা নেই জেনেও দর্শনাভিলাষিণীর স্নিগ্ধ চোখদুটি মাঝে মাঝেই অভ্যাসবসে বাসস্ট্যান্ডে খুঁজে বেড়ায় তার কাঙ্খিত মানুষটিকে।