প্রথম প্রেম
প্রথম প্রেম
শীতের রাত কিন্তু বৃষ্টি হওয়ার জন্য ঠান্ডাটা জোরালো ভাবে পড়েছে। এই সময়ই হঠাৎ করে ফোনটা বেজে ওঠে।
কিরে কোথায় তুই! তাড়াতাড়ি আয় দশটা বেজে গেছে।
রাস্তায় বাইক চালাচ্ছি।
আচ্ছা সাবধানে আয়। আমার টিউশানের ছুটি হয়ে গেছে।
হুম আমি যাচ্ছি! ফোনটা রাখ তুই।
কুয়াশাই চারিদিক ঢেকে গেছে। ঠান্ডা বাতাস ধারালো ছুরির ন্যায় শরীরের প্রতিটি অঙ্গ অল্প অল্প করে টুকরো টুকরো করছে। মাথায় হেলমেট পরা আছে কিন্তু ঠান্ডা বাতাসে কান দুটো আমার একদম ঠান্ডা হয়ে গেছে। এই কারনে আমার পৌঁছতে অনেকটাই সময় লেগে গেল.... একটা বাঁক নিতেই দেখতে পেলাম, স্ট্রিটলাইটের নিচে দাঁড়িয়ে রয়েছে আমার প্রিয়তমা। মুখে ভয়ের একটা ছাপ দেখতে পাচ্ছি। আমার বাইকের আলো দেখতে পেয়ে তার মুখে ভয়ের ছাপ কেটে হাসি উপচ্ছে পড়ছে। তার সামনে বাইক দাঁড় করিয়ে বললাম......
কি রে ভয় লাগচ্ছে তোর।
হুম লাগছিল। কিন্তু এখন আর লাগছে না।
আমি বললাম কেনো?
কারন আমার ভাই যে আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। ভয় পাবো আর কেনো বলত আমায়?
ইয়ার্কার ছলে বললাম,
হুম এখন তো দ্বরকারের সময় ভাই। আর বিয়ে করে চলে যাবার সময় এই ভাই...এর কথা মনে পড়বে তোর। এই কথাটা বলতে বলতে আমার চোখের জল বর্ষার জলেপুষ্ট নদীর ন্যায় দুকুল প্লাবন করে দিচ্ছে।
আমার চোখের জল মুছিয়ে হাত দুটি আমার গালে ধরে হাসতে হাসতে দিভাই বললেন, ছোটোবেলায় তোকে আমি আমার ছেলের মতো আগলে রেখেছি। এখন আমি আমার প্রেমিকার মতো তোর হাত ধরে চারিদিকে ঘুরি। আরে পাগল ভাই আমার, তুই যে আমার প্রথম প্রেম। তোকে ছাড়া আমি কোথায় যাবো। তাছাড়া তুইই বল মেয়েদেরতো একদিন ঘর ছেড়ে শশুরবাড়ি যেতেই হবে। আমি একদিন ওই রকমভাবে না হয় হারিয়ে যাবো।
তুই এবার কিন্তু মার খাবি আমার হাতে। চোখের জল মুছতে মুছতে বললাম দিভাইকে।
তোর সাথে আমি মজা করছিলাম রে। আমি তোকে প্রমিস করছি তোকে ছেড়ে আমি কোথাও যাবোনা। এই বলে দিভাই আমাকে শক্ত করে ঝাপটে ধরে কাঁদতে আরম্ভ করে দিলো।
দিভাইয়ের চোখের জল মুছিয়ে বললাম তোকে আমি কোথাও যেতেই দেবো না। এই বলে আমিও দিভাইকে জড়িয়ে ধরলাম।
কালো আকাশে কুয়াশার গাঢ়ত্বকে ভেদ করে স্ট্রিট লাইটের আলো পড়েছে রাস্তার উপর।