Sharmistha Mukherjee

Tragedy Crime Inspirational

2  

Sharmistha Mukherjee

Tragedy Crime Inspirational

নিষিদ্ধ স্পর্শ পর্ব ৫

নিষিদ্ধ স্পর্শ পর্ব ৫

4 mins
123


বরুণের কান্ড দেখে তরুণ আর নিজের মাথা ঠিক রাখতে পারলো না । খাট থেকে টেনে তুলে চড় মারতে শুরু করে দিলো । বরুণ মার খেতে খেতে বললো, " কি হোলো দাদা আমাকে মারছিস কেনো ? আমি কি করেছি ? " তরুণ বললো, " তুই জানিস না তুই কি করেছিস ? যে বৌদি তোকে দিদির মতো এতো ভালোবাসে সেই বৌদির সাথে নোংরামি করতে তোর বিবেকে এতোটুকু বাঁধলো না । তোকে আমার ভাই ভাবতেও ঘেন্না করছে " এই বলতে বলতে আরও মারতে লাগলো । বরুণ আবারও বললো, " দাদা তুই আমাকে বিশ্বাস কর বৌদি আমার নামে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে । বৌদি যা বলছে সবটা মিথ্যে । " তরুণ বলে, " ও তোর বৌদি মিথ্যে কথা বলছে তাই না ? " এই বলে টানতে টানতে কম্পিউটারের সামনে নিয়ে যায় । কম্পিউটারের স্ক্রিনে নিজের সব ঘৃণ্য আচরণ দেখে বরুণ আর কিছু বলতে পারে না । শুধু মার খেতে খেতে কটমট করে বৌদির দিকে তাকায় । তরুণ বলে, " তুই কালকেই এই বাড়ি ছেড়ে চলে যাবি । কাল সকালে আমাদের যেন তোর মুখ দেখতে না হয় " বলে এক ধাক্কা দিয়ে ঘর থেকে বের করে দেয় । 


নিজের ঘরে ঢুকে রাগে গজগজ করতে থাকে । ঘরের মধ্যে হাঁটাহাঁটি করতে করতে ফন্দি আটতে থাকে কি করে বৌদিকে শায়েস্তা করা যায় । অনেক ভেবে এমন একটা ফন্দি করে যেটা কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের পক্ষে সম্ভব নয় । প্রতিহিংসার আগুন সামান্য ফুলকির থেকে পরিণত হয় দাবানলে । 


পরদিন সকালে তরুণ আর অরুনিমা ঘুম থেকে উঠে দ্যাখে তখনও বরুণ বাড়ি ছেড়ে যায় নি । বরুনকে দেখেই তরুণের মাথা গরম হয়ে যায় । তরুণ বরুণকে উদ্দেশ্য করে বলে, " কি হোলো তুই এখনো এখানে ? তোকে বলেছিলাম না যেন সকালে উঠে তোর মুখ আমাদের দেখতে না হয় । এখনো এখানে কি করছিস ? " দাদার কথা শুনে বরুণ জানায় , " আমি দশটার মধ্যে আমার সবকিছু নিয়ে চলে যাবো । কিন্তু তোরা আমার সাথে যা করলি ঠিক করলি না । " একথা শুনে তরুণ ও অরু একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকে । ওরা দুজন কল্পনাও করতে পারে না, যে কি বিপর্যয় আসতে চলেছে তাদের জীবনে । 


সকালে স্নান খাওয়া সেরে অফিসে যাবে ভেবেও তরুণ নিজের ঘরে অপেক্ষা করতে থাকে বরুনের যাওয়ার । যথারীতি সকাল দশ'টা নাগাদ বরুণ নিজের জিনিসপত্র নিয়ে দাদা - বৌদিকে প্রনাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায় । বরুণ চলে গেলে তরুণ আর অরুনিমা দীর্ঘ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে । যেন হাঁফ ছেড়ে তারা বাঁচলো । তরুণ ঘুমন্ত মেয়েকে আদর করতে শুরু করলে অরু বলে, " শোনো আমি স্নান সেরে আসি, তুমি দরজাটা বন্ধ করে বেরিয়ে যেও । আমি পরে দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে নেব । " তরুণ মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিলে অরু বাথরুমে চলে গেল । তরুণও দরজা বন্ধ করে অফিসে বেরিয়ে গেল । 


অরুর মেয়ে ছোট্ট তাই ধোয়ার 

জামাকাপড়ও অনেক বেশি । অরু মেয়ের কাপড়জামা কাচাকাচি করতে করতে হঠাৎ মেয়ের কান্নার শব্দ শুনতে পেল । অরু মনে মনে ভাবলো " বোধহয় রুনির খুব খিদে পেয়েছে তাই একটু বেশিই কাঁদছে । " কিছুক্ষণের মধ্যে আর মেয়ের কান্নার শব্দ শুনতে না পেয়ে ভাবলো, " তাহলে বোধহয় আবার ঘুমিয়ে পড়েছে । " অরু যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব স্নান সেরে মেয়ের দুধের বোতল নিয়ে মেয়ের কাছে গিয়েই ভয়ে চিৎকার করে উঠলো । ছোট্ট রুনির শরীরটা নিথর রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে বিছানার

 উপর । ফুটফুটে শিশুটির শরীরে এক টুকরো বস্ত্রও নেই । নীলচে হয়ে গেছে সারা শরীর । ছোট্ট ঠোঁট ফেটে রক্ত ঝরছে । যৌনাঙ্গ থেকে বইছে রক্তস্রোত । সে এক বীভৎস দৃশ্য । অরু ছুটে গিয়ে নিথর রুনির শরীরটা বুকে তুলে নিয়ে আর্তনাদ করতে শুরু করে । অরুর চীৎকার শুনে আশেপাশের ফ্ল্যাট থেকে সবাই ছুটে এসে ছোট্ট রুনির ঐ বীভৎস রূপ দেখে শিউরে ওঠে । প্রতিবেশীদের মধ্যে একজন হঠাৎ খেয়াল করে বরুনের ঘরটা খোলা । প্রতিবেশী মহিলা মিসেস ডিসুজা অরুকে জিজ্ঞাসা করে , " মিসেস রায়, ইয়ে ক্যায়সে হো সকতা হ্যায় ! তুম কাহা থি ? অউর মিসেস রায়, এ্যায়সা কৌন দুশমন হ্যায় তুমলোগোকা যো ইতনা ঘৃনোনা কাম কর সকতা হ্যায় ? " এই কথা শুনতেই অরুর মন আৎকে উঠলো । নিথর মেয়ের দেহ বুকে করে নিয়েই ছুটলো বরুনের ঘরের দিকে । সবাই অরুর পিছু নিলো । অরু বরুনের ঘরে ঢুকেই মুহুর্তের মধ্যে অজ্ঞান হয়ে গেল । প্রতিবেশীদের বুঝতে বাকি রইলো না ফুটফুটে ছোট্ট রুনির উপর এইরূপ নারকীয় কান্ড কে ঘটিয়েছে । 


(চলবে)


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy