Mitali Chakraborty

Classics Inspirational Others

3  

Mitali Chakraborty

Classics Inspirational Others

মাস্ক:-

মাস্ক:-

2 mins
424


ঘড়ঘড় করে সেলাই মেশিন চলছে। মেশিন বসে আছেন অনিমা গুপ্ত। দম ফেলার ফুরসত নেই এখন ওনার কাছে, এত ব্যস্ত। যেখানে সারাদেশে লক ডাউন চলছে, সকলে কর্মক্ষেত্র ছেড়ে নিজের নিজের ঘরে আছে সেখানে অনিমাদির কাজে ছুটি নেই। অনেক কাজ যে বাকি এখনও। শুধু অনিমা দি নন, অনিমা দির সঙ্গ দিচ্ছেন ওনার কর্তা নকুল বাবুও। পেশার দিক দিয়ে এনারা দুজনেই টেইলার। টেইলারী করে করেই সংসার চালান।


খুব যে সাংঘাতিক আয় হয় তা নয় তবে হেসে খেলে চলে যাচ্ছে তাদের ঘর সংসার। অনিমা দেবীর ছেলে রান্তু, বয়স ১৩ কি ১৪। কিন্তু ছোট হলে কি হবে, মায়ের সঙ্গে ঘরের কাজে সেও হাত লাগায়। ইদানিং লক ডাউনের কারণে তারও স্কুল বন্ধ, বাড়িতে থেকেই পড়া টা করে নেয়। রান্তুই শিখিয়েছে তার মা বাবা কে করোনা ভাইরাসের এই দুঃসময়ে কিভাবে নিজের যত্ন নিজে করতে হবে, কিভাবে সুরক্ষিত থাকতে হবে, কিভাবে সাবান দিয়ে ঘষে ঘষে বারংবার হাত ধুয়ে মুছে পরিষ্কার রাখতে হবে।


রান্তুই বলেছে যে মাস্ক পড়ার উপকারিতা করোনা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। কিন্তু বর্তমানে চারিদিকে মাস্কের আকালের খবর নিত্যদিন তারা কাগজে আর টি.ভি তে দেখতে পান। নকুল বাবু এই খবর দেখেই একদিন আলোচনা করছিলেন এখন দেশের অবং দশের সকলের যখন মাস্কের দরকার, তারা যদি মাস্ক বানিয়ে বিনামূল্যে সর্বজনের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন তাহলে কেমন হয়, সায় দিয়েছিলেন অনিমা দেবীও তবে কিন্তু কিন্তু করছিল রান্তু। সে বলেছিল খবরে যেই মাস্কের কথা বলা হয়েছে সেটা তো মেডিকেটেড মাস্ক, সেরকম মাস্ক বানানোর কাঁচামাল তো তাদের কাছে নেই। নকুল বাবু একটু ভেবে বলেছিলেন সে রকম না বানাতে পারলেও কাপড়ের মাস্ক তো বানানো যাবেই। সেই মাস্কও যদি কিছুটা প্রতিরোধ করতে পারে। ওনার কোথায় রান্তুও সানন্দে রাজি হয়ে গেছিলো তখন, ভেবে বলেছিল ঠিকই সামান্য হলেও যদি আটকানো যায়। উৎসাহ দিয়েছিল তার বাবা মা কে মাস্ক বানানোর জন্য। পুরনো কাপড় গুলো থেকে ছাটাই করা কাপড় গুলো নিয়ে তৈরি করতে শুরু করেন মাস্ক বানানো। যেখানে দেশের সকলেই নিজের নিজের ভূমিকা পালন করছে সেখানে তারাও মরিয়া হয়ে উঠেছেন বিনামূল্যে মাস্ক বিতরণ করে দেশের কাজে লাগার তাগিদে। কথা বলে নিয়েছেন তাদের এলাকার এক সামাজিক সংস্থার সঙ্গে। ওই সামাজিক সংস্থার তারাই গুপ্ত পরিবারের বানানো কাপড়ের মাস্ক গুলি বিলি করে সর্ব সাধারণ কে। এখনো ঘড়ঘড় আওয়াজ করে সেলাই মেশিন চলছে। তৈরি হচ্ছে কাপড়ের মাস্ক, যেটা ব্যবহৃত হবে সর্ব সাধারণের দ্বারা। 



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Classics