করোনা কি মানুষ হবে?
করোনা কি মানুষ হবে?
কোরোনা ভাইরাস মানুষ হলে চরিত্র কেমন হতো? (একটি আজব প্রশ্ন)
যদি গাধা পিটিয়ে মানুষ করা যায়, বাঁদর পিটিয়ে মানুষ করা যায়, করোনা ভাইরাস তাহলে মানুষ হবে না কেন! অবাক হওয়ার কিছু নেই।
কোনও কোনও অভিভাবক তার সন্তান সম্পর্কে গাধা, বাঁদর সম্বোধন করে থাকেন। এমনকি শিক্ষক শিক্ষিকারা-ও।
স্কুলে গিয়ে এক অভিভাবক আরজ করলেন,
—সার, আমার ছেলে একটা বাঁদর। পড়ার ধারে যায় না, সারাদিন টো টো করে। ওকে মানুষ করে দেবেন?
শিক্ষক বললেন,
—এ আর এমনকি, গাধা পিটিয়ে মানুষ করি, বাঁদরকে পারবো না! কোনো চিন্তা নেই।
স্কুলের পাশ দিয়ে এক ব্যক্তি তার পোষা ছাগল নিয়ে যাচ্ছিলো ঘাসের মাঠে রেখে আসার জন্য। উপরের কথোপকথন তার কানে গেলো। চট করে সে ভেবে বসলো, এতোদিনে তার ছাগলের একটা হিল্লে হয়েছে। তার ছাগলকে মানুষ করা দরকার।
খানিক বাদে সে শিক্ষক মশায়ের অফিসের সামনে হাজির। হাতজড়ো করে বললো,
—সার আমারটাও মানুষ করে দেন।
শিক্ষক দেখলেন, ওর হাতে দড়িতে বাঁধা এক ছাগল। তিনি জানতে চাইলেন,
—কই, তোমার ছেলে কোথায়?
লোকটি বললো,
—ছেলে দিয়ে কী হবে? একটু আগে আপনি একটা বাঁদরকে
মানুষ করতে রাজি হলেন শুনলাম—
একথা শুনে শিক্ষকমশাই ভিরমি খেয়ে পড়ে গেলেন। চোখ চেপে রইলেন। আর উঠলেন না।
সুতরাং করোনা মানুষ হতে পারে না, ভুলেও ভাববো না।
সন্দেহ হচ্ছে ঐ করোনা-মানুষের আকৃতি ও প্রকৃতি নিয়ে।
করোনা আকৃতির কোনো মানুষ—এটা বেশি বেশি ভাবা হয়ে যাচ্ছে। করোনার আকার বড় বিচ্ছিরি, শখ করে অনেকে আবার কদম ফুল বলে সম্বোধন করে। গায়ে কয়েকশ' সূচের মতো। কোথায় কদম ফুল আর কোথায় করোনা। করোনা তো পাজির একশেষ!
বাকি রইলো প্রকৃতি। সত্যি বলতে, মানুষের যে গুণ থাকে করোনার সে গুণ নেই। একটি হাইড্রোজেন বম্ব কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে যত সংখ্যক প্রাণীকে ঘুম পাড়িয়ে দিতে পারে, করোনা পারে না, কখনো পারবে না। সে তুলনায় করোনাকে নিরীহ বলা যায়। বেচারা!
শুধু ভাইরাস কেন, সকল জীবজন্তুর সেরা গুণগুলো যদি একত্র করা যায়, তবুও কিছু মানুষ চ্যাম্পিয়ন হবে। ওরা এমনই চিজ!
শুনতে খারাপ, কিন্তু মানুষ এমনই। শুধু হানাহানি করে যে পরিমাণ মানুষ মারা হয়েছে, সেটা জানলে করোনা মুচকি হাসবে।
করোনা আমাদের সংযম শিখিয়েছে। একা একা থাকার মজা শিখিয়েছে।
অন্য আরও কিছু শিক্ষা সে দিয়েছে। কিন্তু মানুষের কাছ থেকে কী শিখলাম! অতএব অন্যেরাই মানুষকে শিক্ষা দেয় বেশি!
যাগ গে, গণ্ডগোল কথাবার্তায় গিয়ে কাজ নেই।
—এটাকে নভেল করোনা ভাইরাস বলে কেন, দাদা?
—আর বলবেন না, সেটা একটা বিরাট গল্প—পুরো উপন্যাসের মতো।
এই কোরোনা শব্দটি কোথা থেকে এলো কে জানে!
তারপর থেকে আমি অনেক কিছুই করছি না। স্কুলে ক্লাস করিনা, দলবেঁধে লাফালাফি করিনা, অন্যের সাথে হ্যাণ্ডসেক করিনা, বাইরে কম যাই তাই বন্ধু-বান্ধবের পিছনে খরচ করিনা, মোবাইল নিয়ে বসে থাকা ছাড়া অনেক কিছুই করা হয়না। সব লাটে।
করোনার জ্বালায় মানুষ এমনই হয়ে গেছে, সে এখন নিজের সাথে কথা বলতে শুরু করেছে। এক প্রতিবেশীকে দেখি, তার পোষা বিড়ালের সাথে কথা বলছে। সেখানে কয়েকটা পিঁপড়ে, আরশোলাও আছে। ঘটনাটা যখন আমি আমার পোষা কুকুরটির কাছে বললাম, শুনে তো সে অবাক! তারপর দু'জনে মিলে সে কি হাসাহাসি!!
