খড়কুটো
খড়কুটো


নিঃঝুম সন্ধ্যা, কাঁপছে রেললাইন। ওই উলোঝুলো পোশাকের সব হারানো আধপাগল লোকটা শীতল বাতাসে মুহূর্ত মাপছে। ওপাশের কোথাও থেকে ভেসে আসছে আগুন পোহানোর উল্লাস। একসময় লোকটাও উল্লাসে মাততো ওদের সঙ্গে, উল্লাস শেষে বাড়ি ফিরত, বাড়িতে কেউ অপেক্ষা করে থাকতো তার জন্য। কিন্তু আজ আর লোকটার কোনো বাড়ি নেই, অপেক্ষা করার মানুষ নেই। আচ্ছা ঝুপড়িটা পুড়তে কত সময় লেগেছিল! একঘন্টা! তাই হবে হয়তো। মাত্র এক ঘন্টাতেই লোকটার সারা জীবনের স্বপ্নকে পুড়িয়ে দিয়ে গিয়েছিল আগুনটা। শেষ করে দিয়েছিল জীবনের সব উল্লাস। সেই লোকগুলো এখনও খেলায় মশগুল। কিন্তু লোকটা ওদের উল্লাসকে উপেক্ষা করে কান পাতল। কুঁউউউউ… ওই তো আলো, আসছে সে… গরম বাতাসটা ভেতরে আটক করে প্রস্তুত হলো লোকটা। আর কয়েক মুহূর্তের অপেক্ষা মাত্র... "এই এটায় কিছু খাবার আছে খেয়ে নিও।" চমকে উঠে পেছন ফিরল লোকটা। দেখল একজন মানুষ একটা থার্মোকলের বাটিতে কিছু খাবার রেখে চলে যাচ্ছে পেছন ফিরে। স্ট্রিট লাইটের আলো মানুষটাকে ঘিরে একটা বলয় তৈরি করেছে। হাঁ করে কিছুক্ষণ সেদিকে তাকিয়ে থেকে আধপাগল লোকটা থার্মোকলের বাটিটার দিকে এগিয়ে গেল ধীর পায়ে। প্রথম গ্রাসটা মুখে তুলতে তুলতে সে বিড়বিড় করে উঠল, "এবারেও আর হল না..."