জীবনে-মরণে
জীবনে-মরণে
আজকে রাতে এসো শপথ করি
দু'জনে দু'জনার হাতটি ধরি...
মৌপিয়া আর সৌরভের বাসররাতের সন্ধ্যে থেকে অজস্রবার বেজেছে এই গানটা।
বাসরশয্যায় সোহাগোন্মত্ত দুই প্রেমিক-হৃদয়কেও ছুঁয়েছিলো গানটার শপথ করার চাহিদাটা। তাই, মৌপিয়ার আবদারে তারাও শপথ করলো, জীবনে-মরণে কখনও তারা সাথছাড়া হবে না!
সৌরভ মুচকি হাসে- কথার খেলাপ হলে, ধরবে কে? মৌপিয়ার চোয়াল শক্ত হয় - হবে না, কথার খেলাপ হবে না, দেখে নিও!
আজ মৌপিয়ার শেষকৃত্য করা ইস্তক, শরীর-মন কোনটাই যেন ভালো নেই সৌরভের। দীর্ঘ রোগভোগের পর মৌপিয়া চলে গেলো। তার কষ্ট আর দেখতে পারছিলো না সৌরভও।
তাই, কোন সুস্থ মানুষ যা করে না তাই করেছে সে - মুক্তি দিয়েছে মৌপিয়াকে, এই দীর্ঘস্থায়ী মারণ যন্ত্রণা থেকে। সে'কথা না কেউ জানে, আর না জানবে কোনোদিন। শুধু মৌপিয়া জানবে - কত ভালোবাসে তাকে সৌরভ। তাই তাকে মেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছিলো সে!
আজ একা বিনিদ্র রাত্রিযাপন করছে সৌরভ। কালও এই বিছানায় তার পাশেই শায়িত ছিল জীবন্ত মৌপিয়ার অসাড় শরীরটা!
শেষরাতে একটু তন্দ্রাভাব এসেছিলো সৌরভের। তার মধ্যেই অনুভব করলো সে - ঠিক মৌপিয়ার মতই বুকে শুয়ে, আদরে জড়িয়ে ধরেছে তাকে কেউ!
কথা রেখেছে মৌপিয়া - মরণেও সাথ ছাড়েনি সে! নিজের বুকে তাকে জড়িয়ে ধরে সৌরভও! পরম শান্তিতে যেন স্বেচ্ছায় নিজের শেষ চেতনাটুকু হারাতে লাগল সে।
সকালে সৌরভের শবদেহের হাতদুটোকে বুকের ওপর শূন্যে ঐভাবে রাখা দেখে অবাক হলো সবাই!