গিমিক - ৪
গিমিক - ৪
যবনিকা পর্ব :
" ওনাকে মাইকটা দিন প্লিজ । " , উমেশ বললো ।
" হ্যাঁ তুমি ঠকাচ্ছ লোককে । "
" তুমি এত সিওর কী করে হচ্ছো যে তীর্থঙ্কর মারা গেছে ? ক্যানসারের চিকিৎসা তো হয় নাকি ? "
" ওর ডেথ সার্টিফিকেট ছিলো , তার কপি নিজে পড়েছি । গ্রিনটিউব নার্সিংহোম থেকে ইস্যু হয়েছিলো । "
" ওটা ফেকও তো হতে পারে সেটা ভাবেননি । "
" ফেক হলেই বা , নার্সিংহোম অথোরিটি তো ভুল বলবে না । "
" নিজের চোখে দেখেছেন তীর্থের লাস ? "
" না , তবে ... "
" তবে কী ? ওর ক্যানসার আদৌ ছিলো সেই বিষয়েই বা এত সিওর হচ্ছো কী করে ? "
" হোয়াট ? সব্বাই জানে ওর লাস্ট স্টেজ ক্যানসার ছিলো । কেমো করিয়েছে তারও প্রমাণ আছে । "
" ও তার প্রমাণ থাকলেই কি প্রমাণ হয় ওর চিকিৎসায় সেরে ওঠা সম্ভব নয় ? "
" সম্ভব নয় কারণ আমি নিজে ওকে বিষ ইনজেক্ট করেছিলাম স্যালাইনের বোতলে যখন ওর লাস্ট কেমো চলছিলো আর ভর্তি ছিলো । "
বলেই ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে মৃণ্ময় দাঁড়িয়ে । তৎক্ষণাৎ পুলিশকে খবর দেওয়া হলো । পালাতে গেলেই লোক ঘিরে ধরলো ।
উমেশ বললো , " মৃণ্ময় তুমি শুধু সেদিনই নয় প্রায় একবছর ধরে নানান পার্টিতে ওর সরবতে ভয়ানক বিষ দিতে যা সরাসরি লিভারকে ড্যামেজ করে । ওর প্রথম চেক আপের সময়ই রিপোর্ট পেয়ে গেছি । ডাক্তারকে আমি নিজেই বলেছিলাম যে এমন রিপোর্ট বানাও যাতে লাস্ট স্টেজ লিভার ক্যানসার থাকবে । ও সেরে উঠছিলো কিন্তু শেষ কেমোর দিন তুমি গোপনে এসে সর্বনাশ করে দিয়ে গেছো । তোমার ফাঁসির আদেশ হোক এটাই আমি আবেদন করবো । "
পাবলিক থেকে এবার আকাঙ্ক্ষিত প্রশ্ন এলো , " তবে এই ছবির ক্লাইম্যাক্স কী করে সম্ভব হলো ? "
উমেশ বললো , " জীবনবাবু আসুন । আপনি নিজেই বুঝিয়ে দিন । " দর্শক আসনের সামনে থেকে উঠে স্টেজে উঠলেন জীবন দত্ত ।
নিজের পরিচয় ও রিসার্চের সম্পর্কে বলে জীবনবাবু বললেন , " আপনাদের জিজ্ঞাসার উত্তর পাবেন আজকে । আমার কাছে আবেদন নিয়ে আসেন উমেশবাবু আমার কাজ বুঝে । আমি প্রথম ওনার বিভিন্ন ছবি চাইলাম । কম্পিউটারে সিমুলেশন করে তীর্থবাবুর মিনিয়েচার বানিয়ে আমার এ.আই টেকনোলজি দিয়ে ওনার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ আর কথা বলা বিভিন্ন সিনেমা থেকে রেকর্ড করে ওই মিনিয়েচারে যুক্ত করলাম । সাথে উমেশবাবুর প্রয়োজন অনুযায়ী অ্যাকশন সিকোয়েন্স করলাম । ব্যাকগ্রাউন্ড ছিলো ওনার নিজের ক্যামেরাম্যানের তোলা । সেটাকে ইমপোজ করে ওনার টোনাল কোয়ালিটি বেস করে ডায়লগগুলো ডেভলপ করলাম । এই পুরো কাজ । টেকনিকালিটিস নিয়ে পরে বলা যাবে কোনোদিন । "
উমেশ এই বলে শেষ করলো , " দর্শকরা আমার এই গিমিক নিয়ে আপনাদের রাগ থাকতেই পারে স্বাভাবিক । কিন্তু আমার যুক্তিও বুঝুন ... "
" আমরা আছি আপনার সাথে । " সকলে হলময় চিৎকার করে উঠলো । ইতিমধ্যে পুলিশ এসে মৃণ্ময়কে গ্রেফতার করলো । সে নিজের দোষ স্বীকার করে নিয়েছিলো । বিচারে ওর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড হলো ।