গিমিক - ২
গিমিক - ২


দ্বিধাদ্বন্দ্ব পর্ব :
জীবন দত্ত আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলজেন্স নিয়ে গবেষণা করছেন গত ৫ বছর ধরে । সম্প্রতি অ্যানিমেশন নিয়ে সখ জন্মেছে তাঁর । কিছু একটা বানাবেন বলে ভাবছিলেন অনেকদিন ধরে যাতে এ.আই আর অ্যানিমেশনের যুগলবন্দী হবে ।
উমেশ তার ডিরেক্টর জীবনের সাফল্যের মুখ দেখেছিলো তীর্থঙ্করের হাত ধরেই । আপন বন্ধুর থেকেও কিছুক্ষেত্রে তার সাথে বন্ধুত্ব বেশী ছিলো তীর্থঙ্কর । বহু মনের কথা ভাগ করতো উমেশের সাথে । তাই উমেশের কাছে তীর্থঙ্করের মৃত্যু একটা শক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলো । অমিয় আর সুমনের চেয়েও সে বেশী মুষড়ে পড়েছিলো । সিনেমার কাজে হাত দেয়নি একবছর । হঠাৎ কানে আসে জীবন দত্তের কথা ।
সুমন অমিয়ের মধ্যে পুজোর সময়ে কিছু না কিছু গিফট দেওয়া ছিলো । উমেশও মাঝেমধ্যে দিত । এবছর সে নিজে ফোন করলো সুমনকে , " শুভ সপ্তমী সুমন । তোমাদের দুজনের জন্য উপহার আমি এখন দিচ্ছি না । কিছু বড় আন্দাজ করতে পারো । "
" আবার উপহার কী হবে ? এবছর আমরা কেউ আনন্দ করছি না পুজোয় । উপহার টুপহার পরে হবে । " বললো সুমন ।
" এটা এমন উপহার যে পেলে মুগ্ধ হয়ে যাবি । তবে পেতে নতুন বছর গড়িয়ে যাবে । " বললো উমেশ ।
সুমন যদিও তিনমাসে ভুলে গেছে বিষয়টা ।কিন্তু আজ অমিয়ের থেকে ভিডিওর লিঙ্ক পেতে মাথাচাড়া উঠলো সেইকথাটা ।
জীবন দত্তের সঙ্গে প্রথম দেখা হয়েছিলো ২০১৯ এর মার্চ মাসে । ফোন করে অ্যাপয়েন্টমেন্ট ফিক্সড করেছিলো উমেশ ।
দেখা হতে করমর্দন করে কিছু প্রাথমিক বাক্যালাপ সেরে বলে , " শুনলাম আপনি এ.আই আর অ্যানিমেশনের যুগলবন্দীতে কিছু বানাতে চাইছেন ? "
" ঠিকই শুনেছেন । প্রাথমিকভাবে তৈরী , শুধু একটা কিছুতে ইম্প্লিমেন্ট করতে চাইছি ফর্মুলাটা । " বললেন জীবনবাবু ।
" ঠিক সেই কারণেই আসা আপনার কাছে । আমি একজন পরিচালক ... "
কথা থামিয়ে জীবনবাবু বললেন , " হুম জানি । দেখেছি তীর্থঙ্কর বাবুর ছবিগুলো । "মৈত্রী" ও "তমাল বনের বুকে" দুটো আমার প্রিয় । কিন্তু কোত্থেকে কি যে হয়ে গেলো ! "
" আর কি । কিন্তু আপনার ফর্মুলা দিয়ে কি আমার অভিনেতা বন্ধুটিকে যদি স্ক্রিনে জীবিত দেখাতে পারি ... । "
" বুঝেছি । সবটাই সম্ভব । তো ফুল লেন্থ ফিল্ম করবেন ? "
" সমস্যা হতে পারে ভেবেই ক্যামিও ভেবেছি ক্লাইম্যাক্সে । "
" কতক্ষণ ? আমি এইজন্যই বলছি কারণ বিভিন্ন মোমেন্টে তীর্থবাবুর সব ভঙ্গি অ্যানিমেটেড করে রিয়েলিস্টিক করা প্লাস তার সাথে তাঁর শরীরের ভঙ্গি এ.আই. দিয়ে করা খুবই সময়সাপেক্ষ । "
" হুমম । তাই ক্লাইম্যাক্সে মাত্র ৭ মিনিটের সিন রেখেছি । "
" হয়ে যাবে । "
নমস্কার করে উঠলো উমেশ ।