Rita De

Abstract Others

2  

Rita De

Abstract Others

ড . রীতা দে

ড . রীতা দে

2 mins
300


কবিতা - ড. রীতা দে

    

       ভোরের দরজা খুলেই দেখি 

       একটা অপরাজিতা ফুটেছে 

       ব্যাস

       লড়াই - এর মন্রটা পেয়ে গেলাম ।


      বাগর্থ - ড. রমেশ চন্দ্র মুখোপাধ্যায় 


 রাত্রিতে আমরা দরজা বন্ধ করে রাখি। আমাদের চোখ বুঁজে থাকে। ইন্দ্রিয়গুলো বর্হিমুখী না হয়ে অন্তর্মুখী হয়ে ওঠে ।আমাদের সচেতন মন তখন নিদ্রিত । অবচেতনে আমরা নানা কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকি।ঐ কর্মকাণ্ডলোকে স্বপ্ন বলি। স্বপ্নের জগতে নানা আকাঙ্ক্ষা থাকে, নানা প্রত্যাশা থাকে, নানা উদ্বেগ থাকে । প্রকৃতিতে যখন রাত্রি হয় তখন আমরা নিদ্রায় এই স্বপ্নের জগতে প্রবেশ করি আর প্রকৃতিতে যখন সূর্যোদয় হয় তখন আমাদের ঘুম ভেঙ্গে যায় ।আমাদের ইন্দ্রিয়গুলো বর্হিজগত সম্পর্কে সজাগ হয়ে ওঠে । আমরা দরজা খুলে দিই । এখন আর স্বপ্নের কর্মকাণ্ড নয় । এখন বাস্তবের সঙ্গে মুখোমুখি হওয়া । সচেতন মনে বেঁচে থাকা মানেই সহস্র প্রতিকূল পরিবেশেল দ্বারা আক্রান্ত হওয়া অথচ কোনো জীবিত মানুষই নিরবচ্ছিন্ন নিদ্রায় অভিভূত থাকতে পারে না । তাকে জেগে উঠতেই হয় । তাকে দরজা খুলতেই হয় । কবি ভোরের দরজা খুলতেই দেখতে পেলেন        "একটা অপরাজিতা ফুটেছে " অপরাজিতা ঐ জবা ফুলের মতোই মাতৃস্বরূপা - আদ্যাশক্তি ।অপরাজিতা স্ত্রীলোকের যোনির মতো দেখতে । তাকে উদ্দেশ্য করে দুর্গাসপ্তশতীতে সেই বিখ্যাত স্তব - 

  নমো দেবৈ মহাদেব্যৈ শিবায়ৈ সততং নমঃ

 নমঃ প্রকৃত্যৈ ভদ্রায়ৈ নিয়তাঃ প্রণতাঃ স্মঃ ত্বাম্ ।।


     বৌদ্ধসাধনমালা গ্রন্থে অপরাজিতা দেবীকে ষড়ভূজা হিসেবে কল্পনা করা হয়েছে এবং কামনা বাসনার সকল শত্রুকে বিনাশ করে ।ভগবান বুদ্ধ যখন বোধিবৃক্ষমূলে তপশ্চর্য্যায় বসেছিলেন তখন মার সর্বশক্তি দিয়ে ভগবানকে তপশ্চর্য্যা থেকে নিরস্ত্র করতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন । আর সেই সময়ে দেবী অপরাজিতা মারকে পরাস্ত করার জন্যে ভগবানকে সাহায্য করেন । অপরাজিতা মানে যিনি কখনই পরাজিত নন। আমরা ভাষা দিয়ে ভাবনা তৈরী করি।তিঈ ভোরের দরজা খুলতেই যখন অপরাজিতা ফুল চোখে পড়ে তখন অপরাজিতা নামটি কবিকে জীবনযুদ্ধে নতুন করে যুদ্ধের ডাক দেয়। জীবন অত্যন্ত কঠিন । ঋষিরা বলেন - দুর্গম্ পথস্তাৎ । জীবনের পথ অত্যন্ত দুর্গম ।পথের প্রতিকূল শক্তিদের দ্বারা অনবরত আক্রান্ত হতে হয় ।কিন্তু অপরাজিতা নামটি কবির

 কাছে তাঁর রোল মডেল উপস্থাপিত করে ।তিনি কখনও পরাজিত নন। তিনি কখনই পরিজয় মেনে নেবেন না । পথ যত দুর্গম হোক্ তিনি তাঁর জীবনের পথে হাঁটবেন । প্রতিকূল শক্তিদের কাছে আত্মসমর্পণের কোনো কথাই ওঠে না । তাই অপরাজিতা ফুলটিকে

দেখে কবি বলেন - ব্যাস , লড়াই - এর মন্ত্রটা পেয়ে গেলাম ।হয়তো যে রাত্রি সবেমাত্র গত হয়েছে সেই রাতে কবি হয়তো দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন । তাঁর প্রশ্ন ছিল To be or not to be is the question. বিপদসঙ্কুল সমুদ্রের বিরুদ্ধে তিনি কি তলোয়ার ধরবেন ! অপরাজিতা ফুলটি অপরাজিতা নামটি কবির সেই দ্বিধাদ্বন্দ্বকে মুহূর্তে বিনাশ করলো । ভোরের আলো মানুষকে জীবন সংগ্রামে নতুন করে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্দীপিত করে ।




Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract