Riya Roy

Abstract Romance Fantasy

1  

Riya Roy

Abstract Romance Fantasy

দ্বিতীয় ভাগ

দ্বিতীয় ভাগ

8 mins
605



বেড নম্বর ৬৭ , ফিমেল পেসেন্ট।


সিস্টার পিয়াস্মিতা বেডের সামনে এসে ওষুধ গুলো পেসেন্ট এর হাতে দিয়ে বললো, "খেয়ে নিন। কি... এত চিন্তা করছেন?

দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে।"

পেসেন্ট বললো ক্লান্ত গলায়,

"না খুব ভয় লাগছে...

সিস্টার পিয়াস্মিতা বললো,

"আমরা তো আছি সব ঠিক হয়ে যাবে। এত পেনিক করবেন না । জীবন কে ভালোবাসুন, সব রোগ কে দূরে রেখে মনকে খুশি রাখুন, দেখবেন সব ঠিক হয়ে যাবে।"

টেবিলের ফোনটা বেজে উঠলো, সিস্টার পিয়াস্মিতা ছুটে গেল আর ফোনটা ধরে বললো, "হ্যালো ..! আমি সিস্টার পিয়াস্মিতা বলছি।"

ওপাসের থেকে শব্দ ভেসে এলো," আমি এমার্জেন্সি থেকে বলছি আপনার ওখানে কোনো বেড খালি আছে ?"

পিয়াস্মিতা বললো,

"হ্যাঁ আছে .."

ওদিক থেকে ও.কে বলে রেখে দিলো।

কিছু ক্ষন এর মধ্যে এক পেসেন্ট তার সাথে বাড়ির লোক এলো, বেড নম্বর ৬৩ ।

পেসেন্ট একটা বাচ্চা ছেলে বয়স মাত্র চার ।

সিস্টার মলি ঢুকলো, বললো," কি হয়েছে ওর..?

পেসেন্ট এর মা বললো, "ওর গলার পাশে টিউমার।"

সিস্টার পিয়াস্মিতা ডেকে বললো, " আপনাদের মধ্যে কেউ আসুন ফ্রমটা ফিলাপ করতে হবে।"

সঙ্গে সঙ্গে পেসেন্ট এর বাবা গেলো।

সিস্টার মলি বলে উঠলো, " ইস.. এতটুকু বাচ্চার কেন যে হয় এসব .. খুব বাজে লাগছে।

কোন ডক্টর এর আন্ডারে।"

পেসেন্ট এর মা তখন ওর কান্না থামাতে থামাতে বললো, "ডক্টর গুপ্ত..।"

মলি আবার বললো, "অপারেশন হবে কখন ?

পিয়াস্মিতা টেবিল থেকে উঠে এসে বললো, " দুপুর ২টোর সময় হবে।"


বেড নম্বর ২৮ , মেল পেসেন্ট,  লিভার এর সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছে।


প্রত্যেক দিন অ্যালকোহল আর তার পরিনাম।

এই নিয়ে বার তিনেক হয়েছে তার হসপিটালে।

সিস্টার আলিসা , সিস্টার বিন্নি কে ডেকে বললো । "পেসেন্ট এর পালস্, বিপি চেক করো।"

সিস্টার বিন্নি , "প্লিস... আলিসা দি আমি ওনার কাছে যাবো না সবসময় একগাদা করে ভুলভাল কথা বলে, বলেই যায় উহঃ বিরক্ত যেন...।"

আয়া রুনা সঙ্গে সঙ্গে বলে উঠলো, " হ্যাঁ ..ভীষণ বাজে , সবসময় ডেকে ডেকে গল্প করে , আর কেমনভাবে যেনো তাকায়।" কথাটা বলেই হেসে ফেললো।

সিস্টার অলিসা, জানি জানি ও ওরকম পেসেন্ট হবে। কিন্তু কিছু করার নেই বিন্নি তুই যা গিয়ে..."

সিস্টার বিন্নি , "আর কেউ ছিলো না আমাকেই তুমি পেলে।"

আলিসা বললো, " তোর ডিউটি তো আজ ওখানে।

নীতু দি জানতে পারলে না দেখবি কি করে, ও পেসেন্ট ওরকম হয়..., তুই যা.."

বিরক্ত নিয়ে বিন্নি গেলো। আর বললো, উহঃ জীবন টা দূর্বিষহ হয়ে উঠলো ।

আলিসা বললো, " এত অল্পতে অধৈর্য হলে হয় , জীবনকে নতুন করে দেখতে শেখ বুঝলি...

ওই পেসেন্ট টাকে দেখচ্ছিস না সবসময় যেনো আনন্দের জোয়ারে ভাসছে আর বকবক করে চলেছে। জীবন কে ভালোবাসে বলেই না অসুখটাকে পাত্তা দেয় না। "

বিন্নি বলে উঠলো, এত ভালোবাসে তো মদে ডুবে থাকা কেন?

বেশ কিছু সময় পর ওদিকে...


বেড নম্বর ৬৩ অপারেশন হয়ে গেছে বেডে দিয়েছে।


বাচ্চা খুব কাঁদছে ।

তার মা , আয়া সিস্টার সবাই মিলে ভোলাতে শুরু করেছে।

বাড়ির বাকি লোকেরা প্রচুর কথা বলছে বাচ্চা ও কাঁদতে কাঁদতে উওর দিচ্ছে।

হঠাৎ সিস্টার- ইন- চার্জ নিতু ঢুকলো।

সবাই ভয় পায় তাকে ।

তাই একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে শুরু করলো আর মনে করার চেষ্টা করলো কোনো কাজে ভুল হয়ে আছে কি না।

নিতু রাশভারী গলায় বলে উঠলো," এর অপারেশন হয়েছে।তা এত ভিড় কেন এখানে..?

আপনারা নীচে যায় ভিজিটিং আওয়ারে আসবেন। বাচ্চাকে এত কথা বলাচ্ছেন কেন ?

ওর মাকে ঘুম পাড়াতে দিন। আয়া আলোটা নিভিয়ে দাও।"


হাঁটুর অপারেশন হয়ে বেডে এলো এক বয়স্ক মহিলা, বেড নম্বর ৫৮ ।


সন্ধ্যে নেমে এলো বেড নম্বর ৬০র ফিমেল পেসেন্ট বসে আছে। হঠাৎ একটা চিৎকার চেঁচামেচির শব্দ ভেসে আসছে।

একটা মহিলা কন্ঠ ভেসে আসছে ,

গ্রাম্য ভাষায় গালাগালি দিয়ে যাচ্ছে বেশ জোরেই তাই আরো স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে।

মহিলা বলছে,

"কে কোথায় আছো গো ...?

এরা আমায় বিষ খাইয়ে মেরে ফেললো।"


৬০ এর পেসেন্ট একটু মন দিয়ে শুনলো, আরো শুনতে পেলো "ওরে আমায় নিয়ে যা.. নিয়ে যা...."


দুজন আয়া ঢুকলো নিজেদের মধ্যে বলাবালি করতে করতে, " এরকম পেসেন্ট দেখিনি আগে, কি অদ্ভুত গালাগালি দিচ্ছে , থুতু ছেটাচ্ছে।"

সিস্টার নিরতা ঢুকলো, ,"এত ও.টি হয়েছে এরকম জঘন্য পেসেন্ট দেখি নি। কোনো কথা শুনছে না , কাউকে কাছে যেতেই দিচ্ছেনা।"

সিস্টার বিনীতা বলে উঠলো , "ওর পাশের মহিলার কি অবস্থা ভাবো ...!

নিরতা বললো, " সেটাই তো,

স্যারকে ফোন করা হয়েছে..?

বেশ কিছুক্ষন পর....

বেড নম্বর ৬০ এর পেসেন্ট এক আয়াকে ডেকে


আচ্ছা, কি হয়েছে কিসের চিৎকার..?

আয়া বললো,

"ওই দিকে হাঁটুর অপারেশন হয়েছে , বৈদ্য স্যার এর আন্ডারে। কি বাজে আচরন করছে।"

৬০এর পেসেন্ট বলে উঠলো,

"ওর কি মাথার গোলমাল ছিল..?

আয়া বললো, কি জানি..!

আরেক জন আয়া বললো, আরে সকালে তো ৬১নম্বর বেড এ এলো তুমি দেখোনি .?

৬০এর পেসেন্ট বলে উঠলো, ও.. হ্যাঁ হ্যাঁ দেখেছি , কোই মনে হলো না তো কিছু ,

বেশ শান্ত মহিলা।

আয়া বললো, শান্ত...

এখন কি কান্ডটাই না করছে।

পেসেন্ট বললো,

ভাগ্যিস এখান থেকে সিফ্ট হয়েছে নইলে যা হতো।"

আয়া হাসতে হাসতে বলে উঠলো,

"হ্যাঁ তুমি আর ঘুমতে পারতে না।"

পেসেন্ট আবার বললো, হবে হয়তো ওর কোনো সমস্যা , কি চলছে ওনার মনে তা তো কেউ বোঝেনি।"

সিস্টার নিরতা অসহ্য হয়ে গেলাম.. বলতে বলতে ঢুকলো।

আয়া কে বললো, "এই ৬০এর পেসেন্ট কে এই ওষুধটা দিতে হবে ।একটু দিয়ে দাও তো।"

আয়া বললো,

"এখন কি করছে ওই মহিলা..?

নিরতা বললো বিরক্ত নিয়ে,

ওই শুনতে পাচ্ছো না চিৎকার করছে।

 বৈদ্য স্যার এসেছিল তো ..!

আয়া বললো, "কি বলছেন ?"

নিরতা তখন,

উনি বললেন,......


পরেরদিন সকালে বেড নম্বর ৬৩র বাচ্চা ছেলে

যার মা তাকে ডিমের কুসুম খাওনোর চেষ্টা করছে ।

কিন্তু বাচ্চা ডিম ভাজা খেতে চাই।

নানানরকম ভুলিয়ে খাওচ্ছে।

হসপিটালের রুমে র মেঝেতে ছড়িয়ে আছে বাচ্চাটার খেলনা কিছু গাড়ি। কখনো খেলনা ট্যাক্সি উলতে যাচ্ছে , তো কখনো ট্রেন চলছে ।

আবার সঙ্গে রিক্সাও আছে.....।

বাচ্চাটা খানিকটা কাঁদে আবার গাড়ি নিয়ে খেলে আবার কুসুম খায় তার মার থেকে।

মাঝখানে এক সিস্টার এসে, " কেমন আছো তুমি,? কি খাচ্ছো ?"

বাচ্চাটা তখন আপন খেয়ালে খেলনা গাড়ি চালাছে।

সরল হাসি কান্নায় খেলতে খেলতে জীবন কে ভালোবাসতে শিখে নিচ্ছে ‌। পড়লে উঠতে হয় তা শিখছে এই ওঠা নামা জীবন সিঁড়ির পথ ধরে।

দূরের গ্রাম থেকে ভদ্রলোক এসেছেন । অপারেশন চলছে ওর স্ত্রীর ইউটেরাস এর কোনো একটা সমস্যা।

কিছু ক্ষন পর অপারেশন শেষ হলো পেসেন্টকে বেডে দেওয়া হলো, বেড নম্বর ৩৪ ।

দুদিন পর.....

৩৪ পেসেন্ট , সে পরেছিল প্রিন্টেড নাইটি।

পেসেন্ট এর বাড়ি নাকি বেশ গ্রামের ভিতরে।

সিস্টার অদৃকা রয়েছে রুমে কাজ করতে করতে বললো, " কেমন লাগছে আজ?"

পেসেন্ট বলে উঠলো, "সবাই বলেছে মাইক্রো করলে নাকি সব ব্যথা কমে যাবে। আমার ব্যাথাই কমলো না। বলে কাঁদো কাঁদো গলায়।"

অদৃকা বললো,

"এবার ঠিক হয়ে যাবে আর ব্যাথা করবে না।"

সঙ্গে সঙ্গে ডক্টর চৌধুরী ঢুকলো পেসেন্ট এর কাছে গিয়ে এক্সামিন করলো।

পেসেন্ট বলে উঠলো, "কৌই আমার ব্যাথা তো কমেনি.."

ড: চৌধুরী বললেন,

"আপনার ব্যথা কমার জন্যই তো এই অপারেশন ওই সবসময় অল্পতেই আপনি....

আজ আপনাকে ছেড়ে দিচ্ছি।"

তারপর উনি চলে গেলেন ।

দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যে হতে চললো ৩৪এর পেসেন্ট এর বাড়ির লোক আর আসে না।

সিস্টার -ইন -চার্জ নীতু

অদৃকা কে বললো, "ও যাবে কখন ..?

কি সমস্যা টা..?

পেসেন্ট বললো, " টাকার সমস্যা... হচ্ছে আসলে আমার বাড়িতে ঠিক জোগাড় করতে পারেনি।"

নীতু বললো, "তাহলে আপনি বাড়িতে ফোনে কথা বলুন , সিস্টার এর মোবাইলে কথা হলো জানা গেলো আসছে..

রাত আটটা তখন ।

এলো বাড়ির লোক সব বিল মিটিয়ে।

আয়া বললো, "নাও পোশাকটা বদলে নাও।"

পেসেন্ট বললো, এই তো পরে আছি

অদৃকা বলে উঠে," সেকি

এটাতো নাইটি..!

পেসেন্ট বলে ওঠে,

"আমি এটা পরেই যাব.."

অদৃকা আবার বললো,

"এই পরে কেউ ... তার নিজের মনে বললো, উহঃ কোত্থেকে যে সব আসে.."

আয়া সিস্টার এর দিকে বলে উঠলো, দেখলেন দিদি একেকটা মানুষ একেকরকম ভাবে নিজেকে দেখতে ভালোবাসে।

পরেরদিন সকাল পেসেন্ট একজন ফিমেল ।

বেড নম্বর ৪৯ চুপচাপ বসে আছে বেডে।

সিস্টার যূথী এসে বেডের কাছে তারপর টেবিলে রাখা ওষুধ ঠিক করতে করতে বলে উঠলো, "আচ্ছা তুমি সাজগোজ করো না..?"

পেসেন্ট বললো,

"হ্যাঁ করি...তো ।

সিস্টার যূথী আবার বললো,

"ছাই করো...

চুল গুলো এলোমেলো, ভর্তির সময় কানে তো দুল ও ছিলো না...

আচ্ছা তোমার বয়ফ্রেন্ড আছে..?

পেসেন্ট হেসে বললো, কেন.. তারপর বললো, না নেই.."

যূথী আবার বললো,

"তাহলে কি করলে তুমি জীবনে..!

কোনো ছেলের সাথে ঝগড়া করেছো কোনোদিন...? পেসেন্ট হেসেই চলেছে।

যূথী আবার বললো, হাসছো যে? জানো আজ কি দিন ..?

পেসেন্ট হাসতে হাসতে আবার বললো,

কি দিন..? এখানে থেকে তারিখ ফারিক সব গুলিয়ে গেছে আমার।"

যূথী আবার বললো, 

আজ ভ্যালেন্টাইন্স ডে বুঝলে..।

পেসেন্ট বললো,

হুম...

যূথী আবার বললো,

আচ্ছা এতগুলো কথা বললাম বলে কিছু মনে করলে..?

পেসেন্ট হাসি মুখে বললো,

না না বলেই ... আবার হেসে ফেললো ।

সিস্টার যূথী এবার বললো,

যাক তুমি তাও হাসলে ... যা গম্ভীর হয়ে ছিলে বাব্বা আচ্ছা , তোমার নাম টা যেন কি..?

পেসেন্ট বলে উঠলো,

আমার নাম.....

ভিজিটিং আওয়ারে সিড়ি দিয়ে উঠছে

৭৫বেডের বাড়ির লোক ফোন বাজলো, ওপাস থেকে "কাকুর কন্ডিশন ভালো না তুই কোথায়?"

এদিক থেকে বলে উঠলো,

"আমি তো সিড়িতে উঠছি কি হয়েছে? সকালে তো ভালো ছিল কি হলো.."

ওপাস থেকে আবার

"ছোড়দি তুই তাড়াতাড়ি আয়..."

সিঁড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে ভদ্র মহিলার চোখ ছলছল , মুখ থমথমে আর ভেসে উঠছে তার স্মৃতি তে পুরনো একরাশ কথা , কাকু ছিলো তার বাবার মতো, জীবন এর যত আবদার সবটা তার কাকুর কাছে। কতবার সে ভেঙে পড়েছে নানা সমস্যায় এই কাকুই শিখিয়েছে তাকে কেমন করে নতুন ভাবে বেঁচে থাকাটাকে ভালোবাসতে হয়।

ভদ্রমহিলা ভাবতে ভাবতে পৌঁছে গেলো বেড নম্বর ৭৫ এ..

দুপুর বেলা..

শীত নেই বললেই চলে তবে হালকা হাওয়া, শীতকে ফিরিয়ে আনে যেনো।

সিস্টার তিন্নি টেবিলে বসে কাজ করছে।

আয়া এসে বললো," তুমি খাবে না?"

তিন্নি বললো,

"হ্যাঁ সামিনা আসলো না তো।"

একটুপর

সমিনা ঢুকলো চেয়ারে বসে পড়লো ক্লান্তিতে

তিন্নি বললো,

"কি হলো..? সামিনা বললো, " ধূর.. আর ভালো লাগছে না।"

সিস্টার যূথী এসে কথা শুনে মন্তব্য করলো, কি ব্যাপার ...   রূপকথা র গল্পে প্রেমের একটা আঁচ পাচ্ছি।

সামিনা তাকালো যূথী র দিকে তারপর বললো, রূপকথা য় আঁধার ভালো লাগে বলো..?

ভ্যালেন্টাইন্স ডে তে ...তারপর

সামিনা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলতে লাগলো , এখন বসে বসে ডিউটি করো খালি।"

তিন্নি হেসে বলে উঠলো, " এই সামিনা ওই ৫১বেডের পেসেন্ট টাকে ওষুধ গুলো দিয়ে দেতো। "

আয়াকে জিগাসা করলো ও খেয়েছে তো ...?

আয়া বললো,

"হ্যাঁ খেয়েছে..।"

সামিনা ওষুধ দিতে দিতে

এই যুথীদি তুমি সিরিয়াল দেখো ওই যে..... হাসপাতাল নিয়ে একটা

যূথী বললো, "ও টা তো আগে হতো..

এখনো হয় ..?

পেসেন্ট বলে উঠলো, " আমার দিদি রোজ দেখে

খুব ভালো হয় নাকি.."

গল্পের নায়ক ডক্টর......

পেসেন্ট বললো, " আপনি ও দেখেন..?"

সিস্টার হেসে টেবিলের সামনে চলে গেলো।

তিন্নি বলে উঠলো, "খুব হ্যান্ডসাম দেখতে কি...

সামিনা তখন  "হুম...সেই তো..."

যূথী বললো, " বাজে না বকে খেয়ে নে যা...

সামিনা বেরিয়ে যাচ্ছে

তখন

পেসেন্ট বললো,

"ডিউটি তো শেষ হয়ে যাবে এবার তোমার ।

এখন গিয়ে পালন করো ভ্যালেন্টাইন্স ডে।

সামিনা হেসে বললো,

"তুমি তো ক্লাস টেনে পড়ো তাই না,

তোমার কি কো -এড স্কুল।"

পেসেন্ট হেসে বললো, " হ্যাঁ.. সামিনা তখন বলে উঠলো, ... "বুঝেছি চুপচাপ থাকো কিন্তু তুমি খুব পাকা ছেলে।

পেসেন্ট হেসে আবার বললো, " আমার দিদির বয়ফ্রেন্ড আছে আমি জানি. .".

সিস্টার হেসে "আচ্ছা শুয়ে পড়ো এখন"

বলেই বেরিয়ে গেলো।

দুপুর শেষ বিকেল আর তারপর সন্ধ্যে নামছে ধীরে ধীরে।


বেড নম্বর ৪৯ এর পেসেন্ট, হঠাৎ সিস্টার যূথীর কথাগুলো ভেবে মনে মনে হেসে ফেললো।

ওখানের ওই রুমে বাকি বেড গুলো ফাঁকা। সিস্টার একজন ছিলো সেও হঠাৎ দরকারে বেরিয়ে পড়লো।

সিস্টার বেরিয়ে যাবার পর , আয়া বললো, "আমি আসছি তুমি একটু একা থাকো। কি থাকতে পারবে তো...?"

পেসেন্ট বললো,

"হ্যাঁ পারবো.."

বেডের ওই পাশের জানলায় সামান্য কাঁচ সরানো। বেড থেকে নেমে পরদা সরালো বেড নম্বর ৪৯ পেসেন্ট....

রোমান্টিক গান ভেসে আসছে দূর থেকে...

দেয়ালে গায়ে হেলে যখন দাঁড়ালো আর ভাবলো বেঁচে থাকাটা কঠিন বলেই হয়তো এতসুন্দর।

সে আরোও অনুভব করলো, ফাঁকা ঘরে যেনো মুঠো মুঠো সুর ঢুকে পড়েছে।

 স্মৃতির পাতায় ফেলে আসা খিলখিল করে ওঠা শৈশব,  পরে লহরীর টানে বসন্তের খুব কাছাকাছি.....

 এই অস্তমিত সূর্য এর আলোয় বয়ে চলা মরমী হাওয়ায় হাওয়ায় ....

কোথাও মাটির পালঙ্ক এ যা কিছু সবুজায়ন...

চড়াই উৎরাই সময়ে অসময়ে...

কখনো কোলাহল এর রঙিন ভীড়ে।

 কখনো একলা পথের চঞ্চলতায়।

সবচেয়ে বেশী মনের গভীরে যা ফিরে ফিরে আসে তা ছিল ভালোবাসা....

আর ততক্ষনে সুরের সাথে সাথে ভাবনা র যত প্রজাপতি সবগুলো যেনো তাকে ঘিরেই উড়ে চলেছে।

কিছু সময় পরে...

সিস্টার যূথী ঢুকলো আর বললো,

অতলন্তা... কি করছো..?

খুব বোর লাগছে তাই না..?

অতলন্তা খানিক চমকে ফিরে তাকালো...।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract