Arghya Sankar Mondal

Abstract Fantasy

4.5  

Arghya Sankar Mondal

Abstract Fantasy

ছবি

ছবি

4 mins
427


বিড়লা প্লানেটোরিয়াম এর মোড়ে দাঁড়িয়ে আকৃতি তখন ক্যানভাসে তুলির আঁচড় শুরু করেছে , কিছুতেই কোনো আঁকা স্যার এর পছন্দ হচ্ছে না ,স্যারের কথায় সবই হচ্ছে কিন্তু প্রাণ টা নেই। সত্যি আগের ছবিগুলো শুধু এক-একটা ছবি হিসাবেই রয়ে গিয়েছিলো গল্প টা বলতে পারছিলোনা। আজকে সকাল সকাল ষ্টুডিও তে না থেকে এখানেই চলে এসেছে শহরের হৃদয়ের কাছে প্রাণের খোঁজ নিতে ইট পাথরের দৌরাত্ম থেকে একটু আড়াল হতে। চার পাশ টা দেখছে ,চোখ দিয়ে না দেখে হৃদয় দিয়ে দেখার চেষ্টা করছে। সামনে ট্র্যাফিক সিগন্যাল টা লাল হলো ,একটা বড়ো গাড়ি এসে থামলো জেবরা ক্রসিং এর উপরে নিয়ম কে আড়াল করে। 


                                  একজনে ছবি আঁকে একমনে ওহো ও মন .............


"ওহো একটুর জন্যে মিস হয়ে গেলো নইলে বেরিয়ে যেতাম" ,ড্রাইভার মুখ দিয়ে আওয়াজ করলো। পিছনের সিটে বসা সুতন্নী তনয়া বললো, "থাক কি আর করবেন " ,বলে হাতের পার্স থেকে লিপস্টিক টা বের করে ঠোঁটে লাগাতে লাগলো। নিজের প্রতিবিম্ব টা দেখতে দেখতে ভাবতে লাগলো রোজের এই সং আর কত দিন সাজবে ,কেউ কি আর একটাও চান্স দেবে না ? ছোট খাটো কোনো রোলেই ? শাড়ির আঁচল টা বুকের কাছে এডজাস্ট করতে করতে দেখলো ড্রাইভার এর নজর তাঁর নিচু করে রাখা ব্লাউসের বক্ষ বিভাজিকার কাছে। মুখে একটু বিরক্তির আওয়াজ করে সরে বসলো ,বাইরের দিকে তাকিয়ে ভাবতে লাগলো এখানে কি শুধুই কি সবাইরি শরীরেরই খিদে মেটানোর জন্যেই আসা ? ট্যালেন্ট এর দাম কি কেউ আদৌ দেবে নাকি সবাই এর সেই একই অফার তাদের সাথে বিছানার রাতের রজনীগন্ধা হলে তবে ভোরের শিউলি হয়ে সবাই এর মনিকোঠায় ঠাঁই পেতে পারবে। 

সামনের লাল আলোর কাছে নিজেকেও ওই লাল নিয়ন আলোর পাড়ার পণ্য মনে হয়,দীর্ঘ নিঃস্বাসের সাথে দেখলো এল সবুজ হতে গাড়িটাও ধীর গতিতে আবার চলতে শুরু করলো। পাশে দেখতে পেলো সবুজ ঘাসেতে ময়দানের মধ্যে খেলা চলছে। 


                              আরেকজনে বসে বসে রং মাখে .........................



কি হলো দেব খেলাতে মন নেই কেনো ,বেশ কয়েকদিন ধরে দেখছি, এতো সহজ বেসিক জিনিস ভুল করছো,এরকম খেললে ওই পাড়াতে খেলেই ক্যারিয়ার শেষ হবে কিছু উন্নতি হবে না। খানিক বাদে কোচ একটু ধীরে বললো যাও এখন নেট ছেড়ে দাও পরের জনের জন্যে ততক্ষন একটু বসে ধ্যান করে নাও,কন্সেন্ট্রেশন টাই মেইন। ব্যাট সাইড এ রেখে গ্লাভস খুলে সাইডে গিয়ে বসলো দেবাঞ্জন।

পাশে একটা মধ্যবয়সি লোক বসে ,কি ব্যাপার কিসে সমস্যা বাড়ির নাকি বান্ধবীর নাকি অন্য কিছু। 

হালকা নিঃস্বাস ছেড়ে বললো দুটোই ,বাবার ইচ্ছা সামনের বারেই সিনিয়র দলে চান্স পেতে ,বান্ধবীর সাথে রোজের ছোটোখাটো বিষয়ে ঝগড়া। মনে শান্তি নেই কোনো। হম সবারই হয়ে এক কাজ করো এইটা নাও চুষে চুষে খেয়ে নাও। দেখবে ৩ মিনিটেই অন্য জগতে পুরো মনোনিবেশ সবেতে ,Rocking Dev will be back in A whisker . 

সরি ,আমি ড্রাগস করিনা। লোকটা হেসে বললো "না না না ,এটাকে ড্রাগস বলে না ,এটা পারফর্মমেন্স এনহ্যান্সের। দেখো দিয়ে রাখলাম এখানে পরে ইচ্ছা হলে ট্রাই করো। 

খানিক বাদে আবার নেট এ প্রাকটিস করতে গেলো দেব,নাহ হচ্ছে না এবারের। 

"স্যার এক মিনিট ব্যাট চেঞ্জ ,"

"ওকে যাও "

ব্যাট টা বদলালো আবার ব্যাট করতে গেলো ,ঘাসের উপর এখন পরে ছেঁড়া প্যাকেট টা আরেকজনের খেলা সাথে সাথে জীবন নষ্ট করার পর খুশিতে হেসে যেন উড়ে চলে গেলো রাস্তার ঐপারে। 


                ওহ আবার ,সেই ছবিখান নষ্ট করে কোনজনা কোনজনা। .......................


"এর মধ্যে যেতে হবে তোমায়ে ? ছাড়তেই ইচ্ছা করছে না যে " মোহর কুঞ্জ থেকে বেরিয়ে এসে হাত ধরে পাখি কে বলছে সৌনক। 

"এই এতক্ষন ধরে যে দুস্টুমি করলে এখনো ? ছি লজ্জা নেই নাকি ?"

"পরে অনেক সময়ে পাবে এখন যাও বাস এসে যাবে "

 "ঠিক আছে যাচ্ছি যাওয়ার আগে একবার একটুখানি মিষ্টি মুখ করেনি "

 "মিষ্টি কোথায় পাবো ? এখানে "

"এই তো মিষ্টি আমার সাইড এর দেয়ালে চেপে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট স্পর্শ করে চুমু খেয়ে নিলো সৌনক আর হাঁসতে লাগলো " 

"ইশ ছি কি নির্লজ্জ তুমি ,খুব পাজি হালকা করে পিঠে কিল মেরে দিলো পাখি "

"নাও অনেক হয়েছে যায় ওই বাস এসে গেছে তোমার " 

"আচ্ছা সোনা টাটা ,হাত নাড়িয়ে উঠে গেলো সৌনক "

গাড়ির চলে যাওয়া দেখতে দেখতে দেখলো মোবাইল টা বাজছে ,হ্যান রোহিত সরি আসছি আমি দাড়াও এই মেট্রো ধরবো গো ,জানোই তো বাড়িতে মা কে বাঁচিয়ে বেরোতে হয়। 

"রাগ করো না প্লিজ ,হ্যান বাব্বা মনে আছে দেরি হওয়ার শাস্তি কি ,প্রতি মিনিট দেরির জন্যে একটা করে পাবে কমাবো না বেশিও পেতে পারো দুস্টু ,আসছি দাঁড়াও "


         তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা মন জানো না। ......তোমার ঘরে বসত করে কয়জনা। ........


 বাবা চলো এবার যাওয়া যাক পরের ব্লাড টেস্ট এর সময় হয়ে গেছে ,পাশ থেকে এসে বাবা কে ডাক দিলো দেবস্মিতা আস্তে করে কাঁধে হাত ঠেকিয়ে। ওঃ এর মধ্যে ,আচ্ছা চল। 

ধীরে ধীরে উঠে একাডেমি অফ ফাইন আর্টস এর এক্সিবিশন থেকে মেয়ের হাত ধরে বেরিয়ে রক্ত পরীক্ষা কেন্দ্রের দিকে হাঁটতে থাকলেন সুবিমল বাবু। 

দেবস্মিতা পিছন ফিরে দেখলো দেয়ালে ঝুলছে একটা ক্যানভাস ছবি যার সামনে বাবা দাঁড়িয়ে চুপ চাপ দাঁড়িয়েছিলেন এতক্ষন , নাম "তিলোত্তমার প্রাণের খোঁজে শিল্পী আকৃতি চক্রবর্তী "  


 বেসুরা সুর ধরে দেখো কোন জনা , কোন জনা ...............................................


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract