বিসর্জন
বিসর্জন
“উফফ এমন করে বলছো যেন তোমাকে মাওবাদীদের ডেরায় রেখে এসেছি আমি। আচ্ছা এখন রাখো বাড়ি গিয়ে সব শুনবো…”
এই বলে ফোন কেটেছিল সার্থক। আর শোনা হয়নি সে কথা, বাড়ি ফিরে নিজের সাত বছরের প্রেমের পরিবর্তে আবিষ্কার করেছিল একতাল পোড়া মাংসপিন্ড। মা কাঁদতে কাঁদতে বলেছিলেন গ্যাস বাস্ট করে ঘটেছে দুর্ঘটনা, অবিশ্বাস করেনি ছেলে।
মাঝখানে কেটে গেছে দু’বছর। এতদিন ধরে অনেক দিব্যিটিব্যি দিয়ে তাঁর প্রিয় বান্ধবীর মেয়েকে বিয়ে করার জন্য ছেলেকে রাজি করিয়েছেন রূপালীদেবী। পুজোর মাস পেরোলেই বিয়ে, এখন চলছে তারই প্রস্তুতি। ছেলেকে অনেক করে পাঠিয়েছেন পূর্বতনের স্মৃতিগুলো মুছতে।
সিঁদুর খেলার শেষে দশমীর প্রসাদীফুল হাতে ছেলের ঘরে ঢুকেই চিৎকার করে উঠলেন রূপালীদেবী। নিস্পন্দন সার্থক শুয়ে বিছানায়; অব্যক্ত অত্যাচারের সাক্ষী ধুলোমাখা ডায়েরিটা প্রেমাস্পদের বুকে বসে আজ হঠাৎ আবিষ্কৃত হওয়ার আনন্দে খিলখিল করে হাসছে আজ, অন্যদিকে সার্থকের রক্তমাখা হাতের মুঠো থেকে উঁকি দেওয়া কাগজটা পৎপৎ করে উড়তে উড়তে বলছে : “আজ মা আমার রক্তে হোক তোমার বিসর্জন।”