STORYMIRROR

Laxman Bhandary

Children

4  

Laxman Bhandary

Children

ভূত চতুর্দশীতে ভূতেদের গল্প কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

ভূত চতুর্দশীতে ভূতেদের গল্প কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

7 mins
6

ভূত চতুর্দশীতে ভূতেদের গল্প
কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

প্রতিবছর কালীপুজো বা অমাবস্যার আগের দিনটিতে পালিত হয় ভূত চতুর্দশী। মা-ঠাকুমার কাছে গল্প শোনা, এইদিন দুপুর থেকে সারারাত ঘুরে বেড়ায় ভূত-পেত্নির দল। একা বাচ্চাদের দেখতে পেলেই ঘাড় মটকে দেবে। সেই ভয়ে বাচ্চারা এককালে দুপুরে খেলতে বেরতো না। সন্ধ্যায় চুপটি করে বসে থাকত কোনও বড়দের গা ঘেঁষে। গেম আর মোবাইলের যুগে সেইসব ভূতপ্রতের দল আজ উধাও। সত্যিই কী এইদিনে বাতাসে ঘুরে বেড়ায় ভূতপেত্নির দল? একা একা ঘুরলেই কি ঘাড়ে চেপে বসে অশরীরী আত্মারা? কী রয়েছে ভূতে বিশ্বাস করার নেপথ্যে?

কেন পালন করা হয় ভূত চতুর্দশী?

ভূত চতুর্দশী মূলত দুটি কারণে পালন করা হয়: একটি হল অশুভ শক্তির বিনাশ ও শুভশক্তির জয় এবং অন্যটি হল- পরলোকগত পিতৃপুরুষদের স্মরণ করা।  কথিত রয়েছে, কার্তিক মাসের এই তিথিতে শ্রীকৃষ্ণ বধ করেছিলেন নরকাসুরকে। মনে করা হয়, নরকাসুররূপী রাজা বলি প্রতিবছর ভূত চতুর্দশীর দিন অসংখ্য ভূত-প্রেত নিয়ে মর্ত্যে নেমে আসেন মায়ের পুজো দিতে। ঠিক এই কারণে ভূত চতুর্দশীর অপর নাম নরক চতুর্দশী। কারও কারও মতে, এই দিন যমকে প্রদীপ জ্বালিয়ে পূজা করা হয়, যা নরকের যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয় বলে বিশ্বাস করা হয়। একটি মতে, দেবী কালী চামুণ্ডারূপে ১৪ ভূতকে সঙ্গে নিয়ে এসে অশুভ শক্তিকে দূর করেন।

পশ্চিম ও দক্ষিণ ভারতে এই তিথিটি নরক চতুর্দশী নামে পরিচিত। এ ছাড়াও কোথাও কোথাও ছোটা দেওয়ালি, রূপ চৌদাস, নরকা চৌদাস, রূপ চতুর্দশী বা নরকপূজা নামেও পরিচিত।

দৈত্যরাজ বলী দমন

দৈত্যরাজ বলী স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল দখল করলে অসুররা সবার উপর অত্যাচার শুরু করে। বলীকে থামানোর জন্য ভগবান বিষ্ণু বামন অবতারে বলির কাছে তিন পা জমি চাইলেন। দৈত্যরাজ এতে রাজি হলেন। বামনাবতার দুই পা স্বর্গ ও মর্ত্যে দিলেন। এরপর নাভি থেকে বের হওয়া তৃতীয় পা বলীর মাথায় দিয়ে তাঁকে পাতালে পাঠিয়ে দিলেন। নিজের কথা রাখায় ও তাঁকে চিনেও দান দেওয়ায় বামনরূপী বিষ্ণু বলীকে প্রতি বছর পৃথিবীতে পূজা পাওয়ার আশীর্বাদ করলেন। এরপর থেকে কালীপূজার আগের রাতে রাজা বলি পাতাল থেকে পৃথিবীতে পূজা নিতে আসেন। তার সঙ্গে সহস্র ভূত, প্রেতাত্মা এবং অশরীরী এ সময় আসে।

নরকাসুর বধ

নরকাসুর নামে এক রাক্ষস ছিল এবং সে পৃথিবীতে মানুষের উপর অত্যাচার করছিল। সে ১৬০০০ গোপীকে বন্দি করেছিল। তাঁরা সকলেই কৃষ্ণের কাছে রাক্ষসকে হত্যা করার জন্য প্রার্থনা করেছিলেন। নরকাসুর ব্রহ্মার কাছ থেকে একটি বর পেয়েছিলেন যে, তিনি কেবল তাঁর মায়ের দ্বারাই নিহত হতে পারেন। তাই ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাঁর স্ত্রী সত্যভামা সহ সমস্ত মেয়েদের উদ্ধার করতে যান। কারণ সত্যভামা পূর্বজন্মে তার মা ছিলেন। চতুর্দশীর এই দিনে তাঁরা রাক্ষসকে বধ করে সবাইকে রক্ষা করেছিলেন।

ভূত চতুর্দশী: পশ্চিমবঙ্গের হ্যালোইন সংস্করণ সম্পর্কে সবকিছুপশ্চিমবঙ্গে ভূত চতুর্দশী দীপাবলির আগে থেকেই পালিত হয়ে আসছে এবং ঐতিহ্যগতভাবে এটি সুরক্ষা, স্মরণ এবং আধ্যাত্মিক শুদ্ধির রাত হিসেবে পালন করা হত।
দীপাবলি উৎসব পরিবারের পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্যও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ধনতেরাস থেকে শুরু করে পাঁচ দিন ধরে এই উৎসব চলে। দীপাবলির আগের দিন মানুষ নরক চতুর্দশী উদযাপন করে, যা হিন্দু ধর্মগ্রন্থ অনুসারে, এই দিনে ভগবান কৃষ্ণ নরকাসুরকে বধ করেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গে, এই দিনটি ভূত চতুর্দশী নামে পালিত হয়। দীপাবলির একদিন আগে, কালী চৌদ নামেও পরিচিত, এই দিনটি দেবী কালীকে সম্মান জানাতে এবং বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মন্দ আত্মা এবং নেতিবাচক শক্তিকে তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য উৎসর্গীকৃত।
ভূত চতুর্দশীতে, মানুষ তাদের পূর্বপুরুষদের একটি অনন্য ঐতিহ্যের মাধ্যমে সম্মান করে, যে কারণে এটিকে "হ্যালোইন" এর বাংলা সংস্করণ বলা হয়।
ঐতিহাসিক উৎপত্তি এবং তাৎপর্য
"ভূত চতুর্দশী" নামটি এসেছে "ভূত" অর্থ ভূত বা আত্মা এবং "চতুর্দশী" থেকে, যা চন্দ্র ক্যালেন্ডারের ১৪তম দিনকে বোঝায়। বলা হয় যে এই উৎসবের উৎপত্তি পূর্ববর্তী ১৪ প্রজন্মের পূর্বপুরুষদের সম্মান জানাতে, কারণ লোকেরা বিশ্বাস করত যে এই আত্মারা এই রাতে তাদের বংশধরদের আশীর্বাদ এবং সুরক্ষা করার জন্য ফিরে আসে।
এটি বিচরণশীল আত্মাদের তাড়ানোর বিশ্বাসের সাথেও সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা এই সময়ে আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে বলে মনে করা হয়।
পশ্চিমবঙ্গে ভূত চতুর্দশী দীপাবলির আগে থেকেই পালিত হয়ে আসছে এবং ঐতিহ্যগতভাবে এটি সুরক্ষা, স্মরণ এবং আধ্যাত্মিক শুদ্ধির রাত হিসেবে পালন করা হত। আলো এবং সমৃদ্ধির উপর দীপাবলির ফোকাসের বিপরীতে, ভূত চতুর্দশী পূর্বপুরুষদের সম্মান এবং নেতিবাচক শক্তি থেকে জীবিতদের রক্ষা করার মধ্যে ভারসাম্য তুলে ধরে।
আচার-অনুষ্ঠান এবং রীতিনীতি
ভূত চতুর্দশীতে, পরিবারগুলি ১৪টি প্রদীপ (মাটির প্রদীপ) জ্বালায় এবং ঘরের চারপাশে - বিশেষ করে অন্ধকার কোণে এবং প্রবেশপথে - স্থাপন করে। বিশ্বাস করা হয় যে প্রতিটি প্রদীপ পূর্বপুরুষদের এক প্রজন্মের প্রতিনিধিত্ব করে এবং তাদের পথ দেখায়, তাদের ঘরে স্বাগত জানায় এবং অবাঞ্ছিত আত্মাদের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়।
প্রদীপগুলি একটি উষ্ণ, প্রতিরক্ষামূলক বাধা তৈরি করে, যা অন্ধকারের উপর আলোর বিজয় এবং বিশৃঙ্খলার উপর শান্তির প্রতীক।
আরেকটি অনন্য ঐতিহ্য হল ১৪ ধরণের শাক-সবজি খাওয়া, যা স্থানীয়ভাবে " চৌদোষ শাক " নামে পরিচিত। এই রীতির প্রতীকী এবং ঔষধি মূল্য রয়েছে; এটি শরীর থেকে অমেধ্য পরিষ্কার করে বলে মনে করা হয়।
ভূত চতুর্দশীর আধ্যাত্মিক তাৎপর্য
এই দিনটির গভীর আধ্যাত্মিক তাৎপর্য রয়েছে। ১৪টি প্রদীপ জ্বালানো কেবল পূর্বপুরুষদের ১৪ প্রজন্মের সাথে সংযোগের প্রতীক নয়, বরং অজ্ঞতা, ভয় এবং মন্দতা দূর করার জন্য আলোর শক্তিও। প্রতিটি প্রদীপ পূর্বপুরুষদের আত্মাদের তাদের পথ খুঁজে পেতে এবং তাদের বংশধরদের আশীর্বাদ করার জন্য একটি আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করে। বৃহত্তর অর্থে, ভূত চতুর্দশী জীবনের চক্রাকার প্রকৃতি এবং জীবিত এবং মৃতের মধ্যে স্থায়ী বন্ধনের স্মারক।

আজ ভূত চতুর্দশী।  “রাত্রি ন’টা বাজলে ঘুমের ঘোরে ঢুলু ঢুলু চোখে ছুটি পেতুম। বাহিরমহল থেকে বাড়ির ভিতর যাবার সরু পথ ছিল খড়্খড়ির আব্রু-দেওয়া, উপর থেকে ঝুলত মিটমিটে আলোর লণ্ঠন। চলতুম আর মন বলত কী জানি কিসে বুঝি পিছু ধরেছে। পিঠ উঠত শিউরে। তখন ভূত প্রেত ছিল গল্পে-গুজবে, ছিল মানুষের মনের আনাচে-কানাচে। কোন্ দাসী কখন হঠাৎ শুনতে পেত শাঁকচুন্নির নাকি সুর, দড়াম করে পড়ত আছাড় খেয়ে। ঐ মেয়ে-ভূতটা সবচেয়ে ছিল বদমেজাজি, তার লোভ ছিল মাছের ’পরে। বাড়ির পশ্চিম কোণে ঘন-পাতা-ওয়ালা বাদামগাছ, তারই ডালে এক পা আর অন্য পা’টা তেতালার কার্নিসের ’পরে তুলে দাঁড়িয়ে থাকে একটা কোন্ মূর্তি— তাকে দেখেছে বলবার লোক তখন বিস্তর ছিল, মেনে নেবার লোকও কম ছিল না।”

পরে এই ভয়গুলি আর নিজেদের জায়গায় স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেনি। শহর কলকাতার নগরালির বদলের কথা। জলের কল, গ্যাস থেকে বিজলি বাতির দিকে শহর গড়িয়ে গেলেই সেই সব ভয়েরা, ভয়ের উৎসেরা উধাও।
বাংলার আবহমানের ভূতেরা, ব্রহ্মদৈত্য, পেত্নি, শাঁকচুন্নি প্রমুখ ভাবগত দিক থেকে পশ্চিমি শিক্ষার ‘আলো’য় আর বস্তুগত দিক থেকে বিজলি বাতির ‘আলো’য় ‘নেই’ হয়ে গিয়েছে। আর তার বদলে ক্রমে জাঁকিয়ে বসেছে অন্য কিসিমের ভয়ের জগৎ। তাতে অবশ্য ভয়ের সঙ্গে কৌতূহলও অনেকখানি মিশে ছিল। তেমনই ‘এক গাছে এক ব্রহ্মদৈত্য থাকত’-সুলভ বাক্য দিয়েও গপ্পো শুরু হয়েছে অসংখ্য বার। তাকে ‘স্বাভাবিক’ ভাবেই নিয়েছে সমাজ। যদি মানুষ মরেই সেই কিসিমের ভূত হয়ে থাকে, তা হলে মায়ার বাঁধন কাটিয়ে সে বেশি দূর যেতে পারেনি।

বাংলার শাঁকচুন্নি থেকে দেহাতি চুড়ৈল, ভূত সমাজের কুলীন ব্রহ্মদৈত্য থেকে একেবারে ছ্যাঁচড়া মেছোভূত বা রাস্তা গুলিয়ে দেওয়া ভুলোভূত জনপদের চৌহদ্দি টপকাতে পারেনি। রেতের বেলা খানিক হুজ্জুত পাকালেও তারা এক্কেবারে অচেনা বা অজানা নয়। যেমন, নিশুত রাস্তায় মাছ কিনে একা ফেরার সময় মেছো এসে জ্বালাতন করতেই পারে। মাছ ছাড়া ফিরলে তার বয়েই গেছে পিছু নিতে। অন্য দিকে ভুলো সব সময় সক্রিয় নয়। আর তাকে পরাহত করার মন্তরও গাঁয়ের মানুষের অজানা নয়। এমন ভাবেই গলায়দড়ে, স্কন্ধকাটা, মামদো— সকলেরই কিছু না কিছু নির্দিষ্ট ‘কাজ’ রয়েছে। জীবিত মানুষ যদি সজাগ থাকে, তা হলে তাদের এড়িয়ে যাওয়াটা কোনও ব্যাপারই নয়। ফলে আবহমানের ভৌতিক জগত যেন ইহলৌকিক দুনিয়ারই ‘এক্সটেনশন’ মাত্র। তবে ত্রৈলোক্যনাথের লেখায় উঠে আসা ভূত লুল্লু বা ঘ্যাঁঘো একদা মানুষ ছিল কি না, তা স্পষ্ট নয়। তারা যেন ‘বাই ডিফল্ট ভূত’। বিশেষ করে লুল্লুর মতো ছিঁচকে এবং মিচকে ও একই সঙ্গে অসভ্য ভূত একদা মানুষ ছিল, ভাবলে বেশি করে হৃৎকম্প হয়। বরং ভূতদশাতেই সে খানিক সহনীয়। ওই চরিত্রের মানুষ আশপাশে থাকলে তা ভূতের চেয়েও ভয়ঙ্কর। কখন যে কার গিন্নিকে নিয়ে চম্পট দেবে বলা মুশকিল!

এই যে ফুরফুরে বাতাবরণ, এর ঠিক উল্টো দিকেই রয়েছে খুব ক্রুর ভয়ের জগৎ। এ দেশে মনোবিদ্যার পথিকৃৎ গিরীন্দ্রশেখর বসুর ভাষায় বলতে গেলে “ঐ বুঝি করে হাঁ নাহি যার নাম”। এই যে ‘অজানিত’ জগৎ, তা এ দেশে পশ্চিমি শিক্ষার বিস্তার হওয়ার আগে ছিল না। ভূত-প্রেত-পিশাচ, অতৃপ্ত আত্মা, দানো, উপ আর অপদেবতারা অবশ্যই ছিলেন। লোককথায়, মৌখিক ঐতিহ্যে, পৌরাণিক আখ্যানে, ‘বেতাল পঞ্চবিংশতি’র মতো অগণিত সাহিত্যের সমান্তরালে তন্ত্রের ‘ডামর’ শাখার বিবিধ গ্রন্থে তাঁদের রকম-সকম বিস্তারিত বলা হয়েছিল। কিন্তু, পশ্চিমি গথিক সাহিত্যের আবডালে, কলকাতা শহরে নতুন গড়ে ওঠা পশ্চিমি ধাঁচের বাড়িতে, খ্রিস্টীয় গোরস্থানের স্থাপত্য-ভাস্কর্যে সেঁধিয়ে থাকা ‘তেনা’রা সেই সময় ‘অজানা’ বস্তু। লক্ষ করার ব্যাপার, শহর কলকাতায় হানাবাড়ি বলে যে হর্ম্যগুলি পরিচিত, রাইটার্স বিল্ডিং বা ন্যাশনাল লাইব্রেরির মতো প্রাসাদ, তাদের সব ক’টিই ইংরেজ প্রভুদের বানানো। স্থাপত্যের দিক থেকেও তাদের গর্ভে নানান গলিঘুঁজি, আলো-অন্ধকার। ফলে এই নতুন ‘ভূতের কেত্তন’ একান্ত ভাবেই যে পশ্চিমি শিক্ষা, দেশীয় মানুষের জীবিকার বদল এবং সেই সঙ্গে মানুষের একাকিত্ববোধের প্রসারণ ইত্যাদির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল, তা একটু হিসাব কষলেই অনুমান করা যায়। প্রথমটি ব্রহ্মদৈত্য, শাঁকচুন্নি-জাতীয় পরম্পরাগত ভূত।
বেলগাছের ব্রহ্মদৈত্য, সধবা মৎস্যলোভী শাঁকচুন্নি, নিশুত রাতে তিন বার নাম ধরে ডেকে যাওয়া নিশি কিংবা নিজের মুন্ডু নিজেরই হাতে নিয়ে ঘোরা স্কন্ধকাটারা আজকে নেহাতই ‘পিছড়ে বর্গ’। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিমের অতিপ্রাকৃত সাহিত্যও আজ বেজায় জটিল। স্টিফেন কিংয়ের ‘দ্য শাইনিং’, ‘সালেম’স লট’ বা ‘দ্য পেট সেমেটারি’ পড়তে বসলে সেই অজানার ভয় খপ করে ঘাড়ে চেপে বসে। পোড়খাওয়া পাঠকও রাত দুটোয় বাথরুমে যাবেন কি না, মনস্থির করতে পারেন না।
ভূত চতুর্দশীর মতো এক ঐতিহ্যমেশা দিনে ও সব কথা ভাবতে বসলে ব্রহ্মদত্যি, মামদো, স্কন্ধকাটারা ‘মাইন্ড’ করতে পারেন। বছরের অন্য দিনগুলোয় বাঙালি ভূত-রসিকেরা রাতবিরেত স্টিফেন কিং কি লাভক্র্যাফট পড়ে কাটালেও এই একটি দিন, থুড়ি রাত ‘তেনাদের’। সাহেবি ভূতদের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে আজ রাতে এখানে বেলগাছে হুঁকো হাতে আয়েস করবেন ব্রহ্মদৈত্য, টাটকা মাছের গন্ধ পেয়ে মন উচাটন হবে মেছোপেত্নির, একলা পথিককে রাস্তা ভুলিয়ে মজা দেখবে ভুলোভূত, জলায় নিজের বাসনার আগুন জ্বালিয়ে লহমার জন্য দপ করে জ্বলে উঠবে আলেয়া, তালগাছের একাকিত্বে আনমনা প্রহর কাটাবে একানড়ে। আজকের রাতটিতে বরং এই বিশ্বাস নিয়েই বাঙালি ঘুমোতে যাক যে, রাতনিশুতে কেউ তিন বার নাম ধরে ডাকলে স্পিকটি নট হয়ে বিছানায় সেঁটে থাকাই শ্রেয়।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Children