STORYMIRROR

Manab Mondal

Abstract Comedy Fantasy

3  

Manab Mondal

Abstract Comedy Fantasy

ভুতের দেখা

ভুতের দেখা

4 mins
183

প্যারানরমাল ঘটনাগুলিকে অবহেলা করা যায়, এটা জনপ্রিয় সংস্কৃতি। লোককথা গুরুত্ব দিলে বোঝা যায়, যে তেনা দের একটা অন্য পৃথিবী আছে।লোক এবং জ্ঞানের অন্যান্য অ-বৈজ্ঞানিক সংস্থায় বর্ণিত ঘটনাগুলির বর্ণনা করে নিজস্ব যুক্তিতে।, যার অস্তিত্ব এই বিষয়গুলির মধ্যে সাধারণ বৈজ্ঞানিক বোঝার সুযোগের বাইরে , সে গুলোর ব্যাখা করা হয় বর্ণনা করা প্যারনরমাল গবেষণায়।

এবার বুঝতে হবে ,প্যারানরমাল বিষয় টা আসলে কি?Normal মানে হল সাধারণ। তাই আমরা মাঝে মাঝে কাউকে Abnormal ও বলে থাকি যখন কিছু মানুষের জীবন যাপন সাধারণ নয়, অন্যান্য সাধারণ মানুষের মত বাস করতে পারে না তাদেরকেই তো আমরা Abnormal বলি।ঠিক? তাহলে paranormal বা প্যারানরমাল কি? প্যারানরমাল মানে হল যা কখনই সাধারণ না।সাধারনত আমরা যেসব জিনিষ দেখি,ভালো লাগে তা তো সাধারণই।এজন্যই জিন,আত্মা এছাড়া অশুভ কোন শক্তি দ্বারা করে যাওয়া কাজ প্যারানরমাল।অনেকেই এ ব্যাপারে বিশ্বাস করুন না প্যারানরমাল বিষয় গুলো বাস্তবে হয়ে থাকে।হয়তো আপনার সাথে হয়নি, কিন্তু অনেকের সাথেই তো হয়।তাই এটাকে মিথ্যা ভাবা টা ঠিক না।

যাইহোক আসলে কথা গুলো আমার না , আমার পল্টু মামার। মনে আছে আমাকে ও একটা কম্পাস বানানো শিখিয়ে ছিলো যা দিয়ে আমি ভুতের অস্তিত্ব বুঝতে পারি। বিজ্ঞান বলে একটা চুম্বক সাধারণত উত্তর দক্ষিণ দিকে মুখ করে স্হির থাকে তাই এই ধর্মকে কাছে লাগিয়ে, কম্পাস বানিয়ে নাবিকরা সমুদ্র দিক নির্দেশ করে বহু যুগ থেকে। যেকোন বাজারে থাকে আনা কম্পাস এই যন্ত্র লাগালে একটা অদ্ভুত জিনিস দেখতে পাওয়া যায়। যদি ধারে কাছে ভুত থাকে এই চুম্বকটি পূর্ব পশ্চিম দিকে ঘুরে দাঁড়িয়ে থাকবে। আর দ্বিতীয় বার গিয়ে ভানগড়ে ভুতের দেখা না পেলেও এটা আমি নিজের চোখে দেখেছি।

কাল বেশ ভোর ভোর তিনটে বেজে বোধহয় দরজায় অনেকক্ষণ ধরে কেউ জানি টোকা মারছিলো আর পাইচারি করছে উঠানে। এমনিতে আমি কূঁড়ে, শীতের ভোরে কার ইচ্ছা হয় দরজা খোলার? আর চোর,ডাকাত ও তো আর টোকা মারবে না, তাছাড়া সবাই জানে এবাড়িতে কিছু পাওয়া যাবে না, গত বছর ঐপাড়ার রহিম চোর এসেছিল চুরি করতে , এ ঘরে কিছুনা পেয়ে ফ্রিজে রাখা সাতদিনের পুরনো পায়েস খেয়ে পেট খারাপ করে, তবে খবর পেয়ে আমি ওকে ক্ষতি পূরণ দিয়েছিলাম, কারণ ওটা খেয়ে তো আমি ও অসুস্থ হতাম, ও ব্যাচারার আমার জন্য সাতদিন কাজ বন্ধ হয়ে গেছিলো, তবে রহিম চোর হতে পারে, ব্যাটা কোথাও যদি হাঁস মুরগি চুরি করে, তাহলে এমন রাতে এসে আমার আর নিজের জন্য রান্না করে খেয়ে যায় ।

তাই আপাতত দরজা খুলবো না।যা হবার হক।কিন্তু একি,দরজা যেন খুলে গেলো। বা হয়তো আমি লাগাই নি। কয়েক দিন ধরে ভুতে গল্প লিখছি, তাই মাথায় খেয়াল এলো, ভুত পেত্নী এলো না দেখা করতে। কারণ ভুত চতুর্দশী তে ওদের ভালো পার্টির হয়ে, আমরা যেমন কোন অনুষ্ঠান কে প্রচারে আনার জন্য প্রেস কাব গিয়ে নিমতন্ন করি, তেমন ওরা সব ভুতের গল্প লেখকদের নিমন্ত্রণ করেছিলেন। আমি ছোট খাটো লেখক বলে বলেনি, এবার হতো এসেছে, আর আমার কম্পাসটাও পর্ব পশ্চিম দিকে তাকিয়ে স্হির হয়ে গেলো। ভয়ে কাঁপতে থাক্লাম।লেপ টা আরও জরিয়ে ধরলাম। ঘর বাহির আমার পাশে হালকা একটা ছায়া দেখতে পেলাম হৃদপিন্ড কোলা ব্যাঙের মতো লাফাতে লাগলো।

যাক বাঁচা গেলো পাশের বাসার প্রতিবেশী রমেন।বললাম "এতো রাতে কি খবর দাদা?আর ঢুকলেন কি করে দরজা বন্ধ ছিলো না তাই তো?

তিনি বললেন "কিছু না, এমনি আপনাকে দেখতে এলাম। কাল না দেখা যদি হয় তাই,। "

আমি বললাম "আমাকে তো ভয় ই পাইয়ে দিয়ে ছিলেন। আরে বাবা আমি এখানেই থাকবো কোথাও যাবো না, বৌ অত্যাচার সহ্য আর করতে পারবো না ।"

তিনি এবার বললেন যে "পুরো পৃথিবীর মধ্যে আপনি আমার একমাত্র বন্ধু। আমি আপনাকে খুব ভালো বাসি, এখন এক জায়গায় যাচ্ছি আজ, আপনি প্লিজ আমার সাথে আসুন। আসলে নতুন জায়গায় আপনি একা আমি একা ,দাবা খেলে সময় কাটবে দুই জনের।" 

এবার একটু ভয় পেয়ে গেলাম, এটা অন্য ভয়ের লোক জন বলে ওনার স্ত্রী উনাকে ছেড়ে চলে গেছে কারণ উনি একটু ইয়ে মানে সমকামী ।এতো রাতে আমাকে কোথায় নিয়ে যাবে?তাই আমি সাথে সাথে না করে দিলাম।এতে তিনি আমার দিকে যেভাবে তাকালেন আমি একটু ভয় পেলাম। যাবার আগে তুই তুকারি চলে এলেন বলে গেলেন "ভালো করিস না তুই ।বন্ধুত্বের ভালই পরিচয় দিলি।আমি তোকে একদিন না একদিন নিয়ে যাবই।এরপর কিছু না বলে চলে গেলেন।".

পরদিন রোজকার মতন আমি ঘুম থেকে উঠে জানলাম রমেন দা মারা গেছেন। মরার সময় মাঝ রাতে ।তিনি তো আমার ঘরে এসেছিলেন ভোরে ।আর এক জায়গায় নেয়ার কথা বলেছিলেন যে ওটা কি ছিল?তিনি আমাকে কি না ফেরার দেশে মানে সেই অন্য পৃথিবীতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন না?

পল্টু মামা অনেক কয়টা ডিভাইস বানিয়ে ছিলো। হঠাৎ আমার মাথায় এলো আলাদিনের জিন ছিলো তাই সে ফকির থেকে রাজা হয় গেলো। আমি যদি রমেন বাবুর ভুত টাকে ধরতে পারি তাহলে তো অন্তত বাড়ির টুকটাক কাজ গুলো করতে পাড়ি, আর রান্নাবান্না করিয়ে নিতে পারি কিন্তু মামার ভুত ধরার ফাঁদ টা পেলাম না। কিন্তু মামার ভুত প্রিজমটা পেলাম।

বন্ধু রা যারা আলোক বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছো তারা জানো সাদা যে আলো দেখতে পাও তাতে সাত রঙের কিরন থাকে যা খালি চোখে দেখা যায় না । প্রিজম দেখলে কিন্তু সাতরঙ দেখা যায়। তা খালি চোখে তো আপনারা ভুতও দেখতে পান না। কিন্তু এই প্রিজম দিয়ে ভুত দেখতে পাবেন আপনি, এবং ভুতের সাথে কথাও বলতে পারবেন আপনি।

যাইহোক মামা কে খুব আসতে আসতে ডাকলাম , আসলে ভয় ছিলো মনে যদি বকাঝকা করে, ওখানে তো উনি নিশ্চয় পড়াশোনা করতে ব্যস্ত।

কিন্তু ডাক টা হয়ে গেলো মা , মা , ওমনি আমার শাশুড়ি মা এসে হাজির। কানটা মুলে বললো " ভুত ধরার চেষ্টা না করে , হাতে পায়ে ধরে বৌ মান ভাঙিয়ে সংসার টা করলেই তো গরম ডাল ভাত জুটে যায়। পচা ধচা খাবার খেতে হয়না আর ভুত ধরার ফন্দিও আঁটতে হয়না."


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract