Abanti Pal

Horror Thriller Children

3  

Abanti Pal

Horror Thriller Children

অসমাপ্ত হল সমাপ্ত

অসমাপ্ত হল সমাপ্ত

2 mins
215


গবেষণাগারে আজ তিনদিন ধরে অবিরত কাজ করে চলেছেন মানিকবাবু। এতে অবশ্য গদাইয়ের কোনো চিন্তা নেই। দাদাবাবু প্রায়শই এমনটা করে থাকেন। কিন্তু একটা জরুরি খবর এসেছে, সেটা যে না জানালেই নয়।


দরজায় কড়া নাড়ালেই উত্তর আসছে'এখন না গদাই, ব্যস্ত আছি'


আজ সুদীর্ঘ বাইশ বছরের একটা গবেষণার ফসল মিলতে চলেছে। প্রায় হাতের মুঠোয় চলে এসেছে শেষটা। কিন্তু অন্তিম সুত্রটা মিলেও মিলছে না। এমতবস্থায় ছাড়াও যায় না, নাওয়া-খাওয়া-নিদ্রা সব মাথায় উঠেছে। এমন সময় আবার দরজায় করাঘাত। উফ, গদাইটাকে নিয়ে আর পারা যায়না! তেত্রিশ বছর ওনার ঘরে কাজ করেও, ওনার চালচলনে এখনো পরিপক্ক হতে পারল না।'এখন নয় গদাই' বলতেই ফের কড়া নাড়ার আওয়াজ এলো আর সাথে এক বহুপরিচিত কণ্ঠস্বর'আমি এসেছি মনি, কিশোর’'আরে, কিশোর এখন?’


কিশোরবাবু হলেন মানিকবাবুর সেই ছেলেবেলা থেকে অভিন্নহৃদয় বন্ধু আবার তৎকালীন প্রতিদ্বন্দ্বীও। একই গবেষণার বিষয়ে কিশোরবাবুও কাজ করছেন। তবে কি কিশোরবাবু গবেষণার ফলাফল পেয়ে গেলেন? তড়িঘিরি দরজা খুলে ভেতরে আসতে দিলেন বন্ধুকে।


'গবেষণাটা আমার শেষ হয়েছে বন্ধু, তবে আমি চাই এটা তুমিই এগিয়ে নিয়ে যাও' গম্ভীর কিশোরবাবুর কণ্ঠস্বর।'কেন? হঠাৎ এরকম অসম্ভব প্রস্তাব?' বিস্মিত মানিকবাবু। এমন অদ্ভুত প্রস্তাব উনি জীবনে শোনেন নি।'আমার একটা গুরুভার কাজের ডাক এসে গেছে, তাই আমি এর ওপর বিশেষ সময় দিতে পারব না। আর কাজ যার নামেই হোক, পৃথিবীর আলোতে এলে তবেই তো সেটা সফল হবে' আশ্বস্ত করলেন কিশোরবাবু।


সেই রাত্রে দুই বন্ধু মিলে শেষ করলেন গবেষণার কাজ। উজ্জ্বল স্বাক্ষরে নাম জ্বলজ্বল করছে দুজনের।অবশেষে চতুর্থ দিনে দরজা খুললেন মানিকবাবু। মুখে জয়ের হাসি। কিশোরবাবু গত রাতেই ফিরে গেছেন।দরজা খুলতেই হুড়মুড়িয়ে ওনার ঘরে এসে প্রবেশ করল গদাই।


'দাদাবাবু, গত দুইদিনে অনেকবার ফোন এসেছিল হাসপাতাল থেকে' 'কার কি হয়েছে রে গদাই?' চমক ভাঙ্গে মানিকবাবুর।‘কিশোর দাদাবাবু দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত পেয়ে কোমায় চলে গেছেন। জ্ঞান হারানোর আগের মুহূর্ত পর্যন্ত আপনার নাম নিচ্ছিলেন''কি বলছিস কি যাতা... কিশোর তো কাল রাত অবধি আমার সাথে ছিল আমার ঘরেই' 


অদ্ভুত ভাবে তাকায় গদাই। কাজপাগলা দাদাবাবুর মাথাটা একেবারেই গেছে। গলা নামিয়ে আর্তস্বরে বলল'আজ সকালে উনি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেছেন দাদাবাবু। আপনি শেষবারের মতন একবার দেখা করে আসুন' 


ধপাস করে এসে নিজের বেতের চেয়ারে বসে পড়লেন মানিকবাবু। তাহলে কাল রাত পর্যন্ত, কে ওনার গবেষণার শেষ সুত্রটা জোড়া লাগিয়ে দিয়ে গেল? খাতার সাক্ষরের 'মানিক মুখোপাধ্যায়' স্পষ্ট। কিন্তু 'এবং কিশোরকান্তি চট্টোপাধ্যায়' লেখাটা ক্রমে আবছা হয়ে আসছে না?



Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror