Abanti Pal

Children Stories Inspirational

3.4  

Abanti Pal

Children Stories Inspirational

সমুদ্ররাজ

সমুদ্ররাজ

8 mins
355


পাড়ার পূজামণ্ডপে নবমীর দিন পৌঁছতেই, তুমুল উৎসাহের সাথে কচিকাঁচারা ঘিরে ধরল নবমিতাকে।


‘কেমন আছো দিদি’


‘কবে ফিরলে?’


‘এইবারে কি কি অভিজ্ঞতা হলো?’


‘কি কি দেখলে?’


প্রশ্নের জোয়ারে একরকম হুড়োহুড়ি লেগে গেল!


'তোরা একটু শান্ত হয়ে বস, সব প্রশ্নের উত্তর দেবো একটু পরেই' মিটিমিটি হেসে বলল নবমিতা।


এহেন অসম-বয়সী বন্ধুত্বের হেতু হাজারো। তার মধ্যে প্রধান হচ্ছে নবমিতার বাচ্চাদেরকে প্রচণ্ড ভালবাসা। ছোটদের দেখলেই মনে হয় কত জীবন্ত পরীরা বিচরণ করছে ধন্য ধরিত্রীতে। নিষ্পাপ এই বাচ্চাদের সাথে আগ বাড়িয়ে বন্ধুত্ব করতে, গল্প জমাতে, খেলা করতে যে কি ভালো লাগে! এই ছোট্ট ছোট্ট প্রাণের স্পন্দনগুলো ওকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে এদের মতন নির্মল কিছু বুঝি স্থলে আর নেই।


আর জলে? সেখানেই তো ওর পেশা। নবমিতা একজন পেশাদার মেরিন বায়োলজিস্ট। সমুদ্রের গভীর অতলে প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা করাই হচ্ছে ওর ধ্যান-জ্ঞান-সর্বস্ব। আর সেই কারণেই প্রচুর দেশ-বিদেশে পাড়ি দিয়ে ইতিমধ্যেই অনেকবার ডুব সাঁতারে জলজ জগতের অন্ধকারকে অন্বেষণ করেছে ও। হয়েছে রোমাঞ্চকর কতরকমের অভিজ্ঞতা, আবার সামুদ্রিক দানবদের সাথে ভয়াবহ কিছু সাক্ষাতও ঘটেছে। 

কত নিবিড় রহস্য লুকিয়ে আছে পৃথিবীর এইসব ধমনীতে। এ যেন এক পৃথিবীর অন্তস্থলে প্রছন্ন আরেক পৃথক পৃথিবী! এই অসম্পূর্ণভাবে চেনা জগতকে পূর্ণরূপে চিনতে, আরো কয়েকবার জন্মগ্রহণও যথেষ্ট নয়, মনে মনে ভাবে নবমিতা।

প্রতিবছর ছুটি নেয় অল্প কিছুদিন, দেশে ফেরার জন্য। আর তখনই, সুযোগ পেলেই, নিজের অভিজ্ঞতার রঙ্গীন ঝুলি নিয়ে পরিবেশন করে কচিকাঁচাদের সামনে। উঠতি প্রজন্মকে বিশ্বের আনাচ-কানাচের বিস্ময়ের ব্যাপারে অবগত করানো যে বড্ড জরুরি। তারাই তো ভবিষত্যের বাহক। আর এরকম বিরল অভিজ্ঞতার বিবরণ তো চাক্ষুশ না দেখলে, নিপুণভাবে বোঝানো সম্ভব নয়। তাই জলজগতের আশ্চর্য সব অভিযানের কথা জানাতে ওর যারপরনাই আগ্রহ।


পাড়াতে ফিরলেই কচিকাঁচারা ঠিক ঘিরে ধরে নবমিতাকে। তখন গল্পের আসর জমে যায়। আর এইবছর তো পুজোর সময় ছুটিতে ফিরতে পেরেছে ও দেশে। ব্যাস, আর দেখে কে? মুহূর্তে পূজামণ্ডপে ঠাসাঠাসি ভিঁড় জমে যায় বাচ্চাদের।

ওদের ক্ষান্ত করে দেবীপ্রতিমাকে প্রণাম করে মণ্ডপে এসে বসলো নবমিতা।


'দিদি, এবারেও কি গিয়েছিলে ডুব সাঁতারে?'


'আমাদের বলো না, কতদিন তোমার গল্প শুনিনি'


'এবারে কোনো বড় সামুদ্রিক জীবের ছবি তুলেছ?'


'ওরে তোরা বলতে দে আমাকে’ ধেয়ে আসা প্রশ্নবানকে সহাস্যে থামিয়ে এবার বলল নবমিতা। ‘এবারে একটা চমকপ্রদ ব্যাপার ঘটেছে, আমার জীবনে প্রথমবার! সেই গল্পই বলব তোদের আজ'

অধীর আগ্রহে সবাই চটপট চেয়ার সাজিয়ে বসে পড়লো ওর চারপাশে। নবমিতা বলতে শুরু করল। 


'এই বছরের শুরুর দিকের ঘটনা। প্যাসিফিক মহাসাগরে আমি আর আমার টিম পাড়ি দিলাম এক বিশেষ কাজে। তিমিদের চলাফেরায় হঠাৎ ভীতিপ্রদ অদলবদল লক্ষ্য করা গেছে। সেই নিয়ে গবেষণা চলছে বেশ অনেকদিন যাবৎ। আমাদের এই সফরও ছিল সেই গবেষণার একটা অংশ। তোরা কি জানিস তিমিরা গভীর সমুদ্রেই থাকে? সাধারণত দ্বীপপুঞ্জের ধারেকাছে এদের দেখা মেলে না।'


মাথা নাড়লো কচিদের দলের অনেকেই।


'এবার হয়েছে কি, বেশ অনেকদিন ধরেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে ওদের চলাফেরায় তফাৎ এসেছে। সাধারণত একলা ঘুরে বেড়ানো পৃথিবীর বৃহত্তম জীবেরা দলে দলে ঘোরাফেরা শুরু করেছে আর তারা পাড়ি দিচ্ছে গভীর সমুদ্র থেকে হাল্কা সমুদ্রের দিকে। কেন এই আচরণগত পরিবর্তন এলো, সেটা ভাববার বিষয়। তাহলে কি মহাসমুদ্রের অতলে কোন পরিবর্তন ঘটছে? সরে যাচ্ছে সমুদ্রতলের তল-ভূমি? না কি বিশ্ব-উষ্ণায়নের ফল এটা? এই উষ্ণায়নের ফলে ক্রমশ হিমবাহেরা গলে গিয়ে নানারকমের প্রভাব ফেলছে। সেইসব প্রভাব একদিনে লক্ষণীয় না হলেও, দিনের পর দিন পুঞ্জীভূত হতে হতে সাংঘাতিক আকার নিতে পারে। সেই কারণে কি সামুদ্রিক অন্তঃপ্রবাহে কোনো ভয়ানক পরিবর্তন আসছে? না কি এটা তিমিদের প্রজাতির মধ্যেকার কোনো বদলের পূর্বাভাস? কারণ তো অনেক হতে পারে আর তার জন্য গবেষণাও চলছে বিস্তর।

আমরা যেহেতু তিমি বিশেষজ্ঞ, তাই ওদের আচরণকে কাছ থেকে লক্ষ্য করা, ওদের চলাফেরার বৈশিষ্ট্যে আগের থেকে বৈষম্যের কারণ বোঝা, এসব কারণেই আমাদের সফর'


'বাহ্, তার মানে তোমরা ওদের সাথে সাথে চলাফেরা করেছ? এ তো সাংঘাতিক ব্যাপার!' জিজ্ঞাসা করলো ষষ্ঠ শ্রেণির ফুলকি।


হেসে উঠে নবমিতা বলল 'সে অনেক কান্ড। তবে আজ আমি বিশেষ একদিনের ঘটনা বলতে চলেছি, যেটা থেকে আমার ওদের সম্পর্কে ধারণা অনেক বদলে গেছে'


'তাড়া করেছিল গো দিদি?' গোলগোল চোখ করে জিজ্ঞাসা করে তৃতীয় শ্রেণীর মিতুল।


'না একদমই তাই নয়। তাড়া করলে কি আর রক্ষে ছিল?'


 

'তাহলে কি তোমাদের জাহাজ উল্টে দিয়েছিল? ওরা তো বিশালাকারের হয় দিদি, আমি টিভিতে দেখেছি। নিমেষে নৌকো, জাহাজ সবকিছু তছনছ করে দিতে পারে' 


'সেটাও নয়। ওরা কিন্তু মোটেও অতটা ধ্বংসাত্মক নয়, যতটা ওদের চেহারা দেখে মনে হয়। শক্তি থাকলেই যে সেটার অপপ্রয়োগ করা হবে এমনটা কিন্তু নয়। ভেবে দেখ তোমরা, তার উল্টোটাও তো হতে পারে। এবার আসি আসল ঘটনায়। 

সেদিন সকালবেলায় আমি আর গ্রেগরী, আমাদের টিমের একজন ছেলে, নেমেছিলাম সমুদ্রে। সমুদ্রের এই জায়গাটা ছিল আপাত শান্ত। সেদিন কোন বড় ঢেউ নেই, আকাশ একদম ঝকঝকে পরিস্কার, হাওয়াও ছিল ভালোই। কিন্তু সমুদ্রের ভেতরের পরিবেশ তো আর বাইরের মতন হয় না। 

ভেতরে নেমেই বুঝলাম, কিছু একটা অন্যদিনের থেকে আলাদা। কেমন যেন থমথমে পরিবেশ। সামুদ্রিক জীব জন্তুতে সাধারণত ভরপুর থাকে এই জায়গাটা। কিন্তু আজ একদম শুনশান। ব্যাপারটা বোঝার জন্য আমি আরও একটু গভীরে সাঁতরে গেলাম। গ্রেগরী গেল অন্যদিকে, কিছু জৈবিক নমুনা সংগ্রহের উদ্দেশ্যে। 

হঠাৎ দেখি, দূর থেকে একটা তিমি এগিয়ে আসছে, ঠিক আমার দিকে। এর আগেও কয়েকবার এদের সাথে আমার সাক্ষাতের সৌভাগ্য হয়েছে। আমি কিছুটা হলেও দক্ষ এদেরকে সামনাসামনি সামলাতে। ভেবেছিলাম তিমিটা আমার পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে যাবে। কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার, সে আমার কাছে অবধি এসে, আমার আশেপাশেই ঘুরতে শুরু করল। ওর পাখনার কাছে গিয়ে ওকে হাত দিয়ে স্পর্শ করতেই, অনুভব করলাম তিমি আমার আরও কাছে সরে এলো। তারপর আচমকাই আমাকে একটা ধাক্কায় বেসামাল করে দিল'


'সে কি!' উৎকণ্ঠার স্বর প্রতিধ্বনিত হলো বাচ্চাদের মধ্যে। সবাই বড় বড় চোখ পাকিয়ে, শুনছে এই অনন্য অভিজ্ঞতার কথা। 


'আমি প্রথমে ভেবেছিলাম, আমাকে হয়তো আক্রমণ করছে কোনভাবে, সরিয়ে দিতে চাইছে ওদের ওই এলাকা থেকে। সেই কারণেই কি আর কোনো প্রাণীকে দেখা যাচ্ছে না? তিমিরাই কি সরিয়ে দিচ্ছে ওদেরকে? কিন্তু পরক্ষনেই আমার ভুল ভাঙল। তিমিটা আসলে চেষ্টা করতে লাগল আমাকে ওর পিঠে চাপানোর, একদম ওর কাছে রাখার জন্য। সে এক অদ্ভুত অনুভূতি! প্যাসিফিকের গভীরে, আমি কি না এক তিমির পিঠে চড়ে পাড়ি দেব কোথাও! এ যে রূপকথায় পড়া’

'উফ্, আমার ভাবতেই তো শিহরণ জাগছে' বলল পঞ্চম শ্রেণীর তিতলি।


'ঠিক তাই! কিন্তু দুঃখের বিষয়, তিমি মহারাজ আমাকে কোথাও বেড়াতে নিয়ে যাওয়ার কোনও অভিলাষ প্রকাশ করল না। শুধু আমাকে নিজের কাছে কাছে রাখতে লাগল। ওর পাখনা ছেড়ে আমি যখন অন্যদিকে যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম, কিছুতেই আমাকে যেতে দিচ্ছিল না। আমি পড়েছিলাম মহা ফাঁপরে।

পরে জেনেছিলাম আমার এতো দেরি হচ্ছে দেখে আমাদের দলের আর সব সদস্যেরা খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছিল। গ্রেগরী কাজ মিটিয়ে আধঘন্টাখানেকের মধ্যেই ফেরত চলে গেছিলো। 

এদিকে আমি এতটা দূরে চলে এসেছিলাম আমাদের জাহাজ ছেড়ে, যে গ্রেগরী আমাকে দেখতে না পেয়ে নিশ্চিত ছিল যে আমি ওর আগেই ফিরে গেছি'


'তারপর কি হলো? কেউ কি তোমাকে বাঁচাতে এলো?' জিজ্ঞাসা করলো ষষ্ঠ শ্রেণির টুপাই।


'না, তার আর দরকার পড়েনি। বেশ অনেক্ষন পরে দেখলাম, আমি আবার যখন জাহাজের দিকে সাঁতরে যাওয়ার চেষ্টা করছি, তখন তিমিটা আমাকে আর আটকাচ্ছে না। তবে পিছু ছাড়েনি মোটেই। সর্বক্ষন ছিল আমার আশেপাশ, যতক্ষণ না জাহাজে উঠে গেলাম। ওর ব্যবহারের হেতু তখনও পর্যন্ত আমার কূলকিনারার বাইরে ছিল। তারপর, যখন অবশেষে জাহাজে এসে উঠলাম, তখন স্বচ্ছ জলের মতনই এই মায়াবী জলের রহস্য আর তিমির আচরণ, সবটা আমার কাছে পরিষ্কার হয়ে গেল। ও আসলে আমাকে এতক্ষন ধরে রক্ষা করছিল!'


'বলো কি দিদি! তিমিটা বাঁচাচ্ছিল তোমাকে? মানুষকে? এরকম আবার হয় না কি!' অবিশ্বাসের সুরে বলল ফুলকি।

'কত আশ্চর্য ঘটনা যে প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে আমাদের চারপাশে, তা এই ক্ষুদ্র চোখ দিয়ে আমরা কতটাই বা দেখতে পাই? আর যা দেখি, তার সবটাই কি বুঝি? আসলে জানিস কি হয়েছিল?' এবারে ওদের দিকে একটু ঝুঁকে এগিয়ে গিয়ে, ওদেরকে জিজ্ঞাসা করে নবমিতা।


এই সময় ওকে দেখলে কে বলবে যে ও একজন প্রাপ্তবয়স্ক মহিলা, তায় একজন বৈজ্ঞানিক মানুষ! একেবারে বাচ্চাদের মতন উৎসাহ নিয়ে সব বিবরণ দিতে লাগল। আর বাচ্চাদের কৌতূহলও দেখে কে!


'কিরকম বিপদ ছিল দিদি? জলে তো আর কোনো প্রাণীই ছিল না বলছিলে' জিজ্ঞাসা করে পঞ্চম শ্ৰেণীর তুতুন।


'সেটাই আমার বোঝার ভুল ছিল। আসলে আমার ধারেকাছে অথচ আমার বোধগম্যের বাইরে দুটো হাঙ্গর এগিয়ে আসছিল আমার দিকে। আর ওদের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতেই তিমি মহারাজের এই প্রতিরক্ষামূলক আচরণ। কোন তিমি ধারেকাছে থাকলে কি আর হাঙ্গরের সাধ্যি আছে সেইদিকে আসার? তিমিটা ততক্ষন আমার পাশ ছাড়েনি, যতক্ষন না আমি নিরাপদে জাহাজে ফিরে গিয়েছিলাম'

'কিন্তু তোমাকে তো জাহাজের দিকে যেতেই দিচ্ছিল না প্রথমে' বলে ওঠে টুপাই।


'একদম তাই। কারণ তখন ওরা জাহাজের দিকটাতেই ছিল। যখন ওরা ঐদিক দিয়ে সুবিধা করতে পারলো না কিছুতেই, তখনই এগিয়ে আসার চেষ্টা করল অন্যদিক দিয়ে। সেই সময়ে আমি জাহাজে ফেরার পথ ধরতে পারি। কিন্তু ওরা জলের মধ্যে আশ্চর্যজনকভাবে আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি। ভাগ্যিস তিমি মহারাজ ছিলেন সেইদিন, নাহলে আমি হয়তো আর প্রাণেও বাঁচতাম না'


'দিদি, তিমিরা এতো ভাল হয়?' অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করে মিতুল।


'সেরকমই অভিজ্ঞতা হলো এবার। কি বুদ্ধি খাটায় ওরা, তার সবটা এখনও অজানা। তবে শোনা যায়, ওরা নিজেরা বিপদের মুখে পড়েও অনেক সময়ে ভিন্ন প্রজাতির প্রাণীদের বাঁচায়'


'অকল্পনীয়! আমি তো ভাবতেই পারছি না দিদি!' বলল তুতুন, 'ভাষার বাইরে গিয়ে, নিজেদের আকৃতি, শক্তি, ক্ষমতার বাইরে গিয়ে, এমনকি নিজেদের প্রজাতির বাইরে গিয়ে এই আপাত সমুদ্র-দানব আসলে এতটা পরোপকারী?'


'হ্যাঁ। কত অশুভ শক্তি থাকা সত্বেও, সেগুলোকে দমন করার জন্য কত শুভ শক্তি কত রকম ভাবে উঠে আসে! নিজেদের জানান দেয় সঠিক সময়ে। সেসব আমাদের ভাবনার বাইরে। তারা নীরব রক্ষক হয়ে আমাদের চারপাশে আছে বলেই, আমরা এতো সুস্থভাবে বাঁচতে পারছি। আমার এই বিরল অভিজ্ঞতা থেকে আমি আবারও প্রমাণ পেলাম সেই ধ্রুবসত্যের...


We are an infinitesimal part of the Great Chain of Being… the universal chain of life runs through all creatures!


অসাম্যত্যাতেও এভাবেই সাম্য বজায় থাকে। আর ভাব, নির্বিকার আমরা কতই না বুদ্ধিজীবী ভাবি নিজেদেরকে। হয়তো আমাদের আবিষ্কারের বাইরে এরকম কত তথ্য লুকিয়ে আছে। আমাদেরকে বোঝায়, যে আমরা বিশ্বের এক ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশ মাত্র। অপরিহার্য্য আর সর্বশক্তিমান নই'


'ঠিকই তো!' সমস্বরে বলে ওঠে বাচ্চারা।


'এবার থেকে আমাদের চারপাশের সম্পর্কে আরও সজাগ থাকবো আমরা, আরও যত্ন করব আমাদের পারিপার্শিক সক্কলকে' উৎসাহের সাথে বলে ওঠে তুতুন, ফুলকি, টুপাই, তিতলিরা।


'ঠিক! তিমির আচরণ যে আমাদের বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গিকে নাড়া দিয়ে গেল' প্রশান্তির হাসি হেসে বলে নবমিতা।


সকলেই তাকিয়ে দেখলো, নবমীর পুজো শুরু হয়ে গেছে। দুর্গতিনাশিনী দেবীপ্রতিমায়ের মুখে বুঝি লেগে রয়েছে এক জীবন্ত হাসি। জীবনের পূজারীদের থেকে আরাধনার মূলমন্ত্র নিশ্চয়ই এই একটু আগেই ওনার কর্ণগোচর হলো!


সমাপ্ত।।



(পুনশ্চঃ লেখাটি আংশিকভাবে সত্য ঘটনা অবলম্বনে)


Rate this content
Log in