আয়না (পর্ব 16)
আয়না (পর্ব 16)
হরিশংকর নতুন পরিকল্পনা করতে শুরু করলেন কিভাবে দুর্গাবতীকে মেরে ফেলা যায়। আর তাঁর পরের পরিকল্পনাটা খুবই ভয়ঙ্কর ছিল। রানী দুর্গাবতী তাঁর সখিদের সাথে ভাড়ার ঘরে গেলেন চাল সংগ্রহ করতে।
ঠিক তখনই তাঁদের মধ্যে একজন সেই ভাড়ার ঘরে দুটি তেতুল বিছে ছেড়ে দিলেন। ঘরটি অন্ধকার হাওয়ায় রানী দুর্গাবতী কিছু জানতে পারলেন না। আর তাঁর সখিরা এই সুযোগে তাঁকে ভাড়ার ঘরে আটকে রেখে চলে যান।
ঠিক তখনই একটি তেঁতুল বিছে তাঁর পায়ে দংশন করে। আর দুর্গাবতী ব্যথায় চিৎকার করে ওঠেন। দুর্গাবতী চিৎকারে সকলে সেখানে ছুটে আসেন। জমিদার বিক্রম প্রতাপ বুঝতে পারলেন না শব্দটা কোথা থেকে আসছে।
তিনি দুর্গাবতীকে ডাকলেন কিন্তু রানী দুর্গাবতী তাঁর ডাকে সাড়া দিলেন না। হঠাৎ তাঁর নজর পড়ে ভাড়ার ঘরের উপর। তিনি লক্ষ্য করলেন ভাড়ার ঘর আটক করা আছে। তাঁর খুব সন্দেহ হয়। তিনি চিন্তা করলেন ছোটবেলায় তিনি ভাড়ার ঘর থেকে খাবার চুরি করতেন।
কিন্তু ভাড়ার ঘর কখনো আটক করা থাকতো না। তিনি সেখানকার সকল দাসীদের জিজ্ঞাসা করলেন।
জমিদার বিক্রম প্রতাপ: " আচ্ছা! ভাড়ার ঘর আটক করা কেন? আগে তো কখনো ভাড়ার ঘর আটক করা থাকতো না।"
দাসী: " আমি জানি না কর্তা ভাড়ার ঘর কেন আটক করা?"
জমিদার বিক্রম প্রতাপের সন্দেহ আরো বেড়ে গেল। তিনি দাসীকে আদেশ করলেন ভাড়ার ঘর এক্ষুনি খোলার জন্য। জমিদার বিক্রম প্রতাপের আদেশ অনুসারে দাসী ভাড়ার ঘর খুলে দিলেন।
জমিদার বিক্রমপ্রতাপ আলো নিয়ে ভাড়ার ঘরে ভেতরে গেলে তিনি রানী দুর্গাবতীকে নিচে পড়ে থাকতে দেখেন। তিনি দুর্গাবতীর জ্ঞান ফেরাবার চেষ্টা করলেন।
হঠাৎ তিনি লক্ষ্য করলেন দুটি তেঁতুল বিছে দুর্গাবতী গায়ের উপর ঘুরে বেড়াচ্ছে। জমিদারের আদেশ অনুযায়ী রানী দুর্গাবতীকে ভাড়ার ঘর থেকে বের করে নিয়ে আসা হয়। বৈদ্যকে ডাকা হলে তিনি জানান রানী দুর্গাবতী তেঁতুল বিছের কামড়ে মারা গেছেন।
এই কথায় জমিদার বিক্রম প্রতাপের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। তিনি বৈদ্যের কথা মেনে নিতে পারলেন না। তাই তাঁর আদেশে অনুযায়ী নিতাইপুর থেকে রাজ বৈদ্যকে ডেকে আনা হয়। তিনিও একই কথা বললেন।
অন্যদিকে রানী দুর্গাবতীর মৃত্যুতে হরিশঙ্কর রায় খুব খুশি হন। তিনি ভাবতে থাকেন এবার কমলিকার সঙ্গে ভাগ্নের বিয়ে দিয়ে তিনি নিতাইপুরের রাজ সিংহাসনে বসবেন।