আয়না (পর্ব ১৪)
আয়না (পর্ব ১৪)
মামার বাড়িতে পৌঁছলে জমিদার বিক্রম প্রতাপের মামা হরিশংকর রায় তাঁদেরকে সাদর আমন্ত্রণ জানালেন। তিনি তাঁর একমাত্র ভাগ্নে জমিদার বিক্রম প্রতাপ কে বুঝতে দিলেন না তাঁর আসল উদ্দেশ্যটা কি। হরিশংকর প্রসাদের এক আত্মীয়া মহাবালেশ্বরী চট্টোপাধ্যায়।
তাঁর একমাত্র মেয়ে কমলিকা চট্টোপাধ্যায়। মহাবালেশ্বরী দেবীর মৃত্যুর পর কমলিকার দায়িত্ব নেন স্বয়ং হরিশংকর রায়। হরিশংকরের উদ্দেশ্য ছিল কমলিকার সঙ্গে জমিদার বিক্রম প্রতাপের বিবাহ দেওয়ার।
তাই হরিশংকর তাঁর একমাত্র ভাগ্নে এবং ভাগ্নে বউকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। সেই দিন রাত্রিবেলা হরিশঙ্কর রায় রানী দুর্গাবতীর খাবারে বিষ মিশিয়ে দেন। আর সেটা একজন দাসীকে দিয়ে সেই খাবার রানী দুর্গাবতীর সামনে পরিবেশন করেন।
রানী দুর্গাবতী সেই খাবার খেতে যাওয়ার আগেই অন্য এক দাসীর ধাক্কায় সেটি মাটিতে পড়ে যায়। আর সেই খাবার একটি কুকুর খেয়ে নেয় আর সে সঙ্গে সঙ্গে অসুস্থ হয়ে পড়ে। জমিদার বিক্রম প্রতাপ শুধু প্রজা বৎসল জমিদার ছিলেন না।
তিনি পশু বৎসল ও ছিলেন। কুকুরটিকে সুস্থ করার জন্য তিনি সেখানকার সবচেয়ে বড় বৈদ্য কে ডেকে পাঠান। সঠিক সময়ে বৈদ্য আসলে তিনি জানতে পারেন কুকুরটি বিষ মাখানো খাবার খেয়ে অসুস্থ হয়েছে।
কিছুক্ষণ পর কুকুরটি মারা যায়।এই দৃশ্য দেখে জমিদার বিক্রম প্রতাপ খুব ক্রুদ্ধ হন আর এই ঘটনার জন্য তিনি তাঁর মামা হরিশংকরকে দায়ী করেন।
জমিদার বিক্রম প্রতাপ: " মামা বাবু ! এই তোমার আতিথেয়তা। তোমার জন্য কুকুরটি মারা গেল। আর সবচেয়ে বড় কথা তুমি আমার স্ত্রীর খাবারে বিষ মিশিয়েছিলে!"
হরিশঙ্কর রায়: " ভাগ্নে! তুমি আমায় মিছিমিছি দোষারোপ করছো। আমি এসবের কিছুই জানিনা।"
জমিদার বিক্রম প্রতাপ: " মামা বাবু! আমি এখানে এক মুহূর্ত থাকবো না। চলো রাণী।"
জমিদার বিক্রম প্রতাপ রানী দুর্গাবতী কে নিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে হরিশংকর রায় রানী দুর্গাবতীর কাছে ক্ষমা চাইতে লাগলেন।
হরিশংকর রায়: " বৌমা! ভাগ্নে আমাকে ভুল বুঝছে। আমি জানিনা কি কিভাবে এসব হলো? মা! তুমি একবার ভাগ্নেকে বোঝাও। ওকে এভাবে চলে যেতে দিও না।"
রানী দুর্গাবতী: " মামা বাবু ঠিক কথাই বলছেন। আপনি শান্ত হোন। এভাবে বেরিয়ে গেলে ওনাকে অপমান করা হবে। তো আর এভাবে আমরা বড়দের অসম্মান করতে পারি না।