Riya Roy

Tragedy

2  

Riya Roy

Tragedy

আমি একদিন আচমকাই

আমি একদিন আচমকাই

2 mins
1.3K


বালিশে মাথা রাখলাম আর চোখে নরম নামল , স্মৃতি পৃষ্ঠা ওল্‌টালো......


আমার দাদু(মায়ের বাবা)ছোটবেলার সবচেয়ে কাছের মানুষ বড় হয়ে বুঝেছি বটের ছায়া ৷


পুরোনো দালান বাড়ি গ্রামের স্কুল কে দান করে দাদু চলে এলো সবুজ ঘেরা বাগানে

তার মধ্যে ছোট্ট বাড়ি পিছনে শান্ত ঝিল ৷


দাদু একদিন চাকরি অবসর পেলো আর আমরা একে একে কাজে যুক্ত হলাম ৷ দাদু অপেক্ষা করত কবে সবাই আমরা একসাথে যাচ্ছি,আমরাও ছুটি পেলেই ছুট'তাম মুক্তির বাতাস নিতে ৷পৃথিবীর যেখানেই যাই না কেন দাদুর কাছে জমায়েত না হলে মন ভরতো না

এবার ২৬শে জানুয়ারি দাদুকে সামনে রেখে পিকনিক ; ওদিন হাসির শব্দ আকাশ ও শুনেছ কিন্তু জানা ছিল না সেটাই শেষবারের মতো ৷


কয়েকদিন পর.....


সেদিন শনিবার নিজস্ব দরকারে হাসপাতালে তখন,কিছু পর খবর পেলাম দাদু ওখানেই ভর্তি ছুটে গেলাম ভীষণ চিন্তা হল কিন্তু দেখলাম দাদু কথা বলছে বললো --ভালো আছি, আর অসুবিধা নেই ৷

সবাই বললো পরিস্থিতি স্বাভাবিক, স্বস্তি পেলাম৷


বিকেল ....সব অন্যরকম হয়ে গেল 


ডাক্তার জানালো দাদুর একটা একটা অঙ্গ কাজ করা বন্ধ করছে৷ বিকল্প কৃএিম পদ্ধতি শুরু৷ ইতিমধ্যে অন্য খবর এলো আরেকজন আত্মীয় মারা গেছে তা নিয়ে কিছু বোঝার আগেই ততখনে দাদুর পরিস্থিতি আরো খারাপ ,কাছে গেলাম কথা বললো ,অসম্ভব কষ্ট হচ্ছিল কার দিকে তাকাবো কোথায় দাড়ানো উচিত্ বুঝতে পারছিলাম না ৷ শেষচেষ্টা হল অপারেশন৷ ঠিকঠাক হয়ে গেল, কিন্তু কিছু পরে ডাক্তার এসে কেঁদে ফেললো বললো আর আধঘন্টা আপনারা মানসিক প্রস্তুত থাকুন .......


ছোট বেলায় যখন অনেকটা দূরে থাকতাম তখন টেলিফোন এত ছিল না দাদু চিঠি লিখত দারুণ মজা হতো ,সবচেয়ে বেশী চিঠি দাদুকেই লিখেছি ৷ আজ আবার চিঠি লিখতে ইচ্ছে করছে কিন্তু ঠিকানা ......


দাদু ভীষণ মেজাজি ছিল;ঠিক সময়ে ঠিক কাজ না হলে বিব্রত থাকত কিন্তু নিজের জীবন কারা কষ্ট দিয়েছে এসব বলতে গিয়ে দুর্বল হয়ে যেত ৷


আমার ছবি তোলার বাতিক দাদু জানত , দাদু র বাড়ি গেলে খুব ভোরে ডাকত, জোরে হেঁকে নাম ধরে; আমি অচমকাই কিছু মনে নেই  তাড়াতাড়ি করে, বলতো তোমার যন্ত্র টা কোথায় , যাও.?.... মাঠে কত পাখি আর তুমি ঘুমচ্ছ ......


১০ইমার্চ রবিবার খুব ভোরে ফোন টা বাজল শেষ খবরটা দাদুর, যখন ফোনটা বাজল ... আমি আচমকাই  মনে হল দাদু যেন শেষবার জোরে ডাকল .....


ছোট থেকে অনেক কিছু জীবনে দাদু র কাছে শিখেছি, সবচেয়ে আনন্দ ছিল দাবা শিখলাম যেদিন৷ ছোটবেলার গ্রীষ্ম ছুটির দিনগুলো ছায়াছবির মতো ভাসছে অর্নগল...... শেষবার এই খেলায় দাদু বোড়ে এগিয়ে দিল যেন বললো চেকমেট্ .... আমি আচমকাই ,

আর ঘুম ভেঙে গেল৷


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy