রক্তাক্ত রাজপথ
রক্তাক্ত রাজপথ


সূর্য তখন মধ্যগগন পরিদর্শনে,
আর একটা দিনের অর্ধেক কাজ সম্পন্ন করে
সে ব্যস্ত তার তীক্ষ্ণ উষ্ণ ওমের অসহ্য পরশ পৃথিবীকে প্রতিদিনের মতো দিতে।
পরিপাটি রাজপথ, রঙবেরঙের পিচ ঢালা রাস্তা বেয়ে হেঁটে চলেছে কয়েকশো জোড়া রক্তাক্ত পা।
কয়েকটি তো আবার সদ্যোজাত, নরম, কচি।
যে রাজপথ দিয়ে বাবুদের শব্দ যানেরা যাতায়াত করে,
যে তপ্ত পথে কোনোদিন বাবুদের নগ্ন পা স্পর্শ করেনি,
সেই পথ বেয়ে ওরা হেঁটে চলছে, না অজানার পথে নয়, ওদের গন্তব্যস্থল চেনা কিন্তু সেখানে পৌঁছতে কি সবাই পারবে ?
ওরা পরিযায়ী, ওরা একাকী।
রাজপথের আগুনে আগ্রাসন আর সূর্যের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আস্ফালনের জোড়া ফলায় কতো নবীন ও প্রবীণ প্রাণ তাদের অন্তিম যাত্রায় সামিল।
পথের ক্লান্তি, ভুখা পেটের অসহ্য যন্ত্রণা আর প্রকৃতির অসামান্য ক্রোধের আগুনে পুড়ে ছাই কর্মঠ প্রাণগুলি।
গানের সুরে এই পথ যদি না শেষ হয় বোধহয় ওদের জীবনের শেষ গানের সাথে মিলে মিশে একাকার হয়ে গেল।
হয়তো একদিন এই ঝড় থেমে, হয়তো পৃথিবী আবার শান্ত হবে, হয়তো সূর্য তার অন্তিম ওমটুকু দিয়ে আবার অস্ত যাবে।
কিন্তু যে রাজপথের বুকের ওপর দিয়ে পুড়ে যাওয়া পাগুলি রক্ত চিহ্ন আঁকল তার হিসেব কে রাখে!
হাঁটতে থাকো চলতে থাকো গাও চরৈবেতি, জীবনের জয়গান,
যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ, যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ।