পুতুল খেলা
পুতুল খেলা
সকাল থেকে কাজের চাপে রোজ ভোঁ ভোঁ করে মাথা,
আজ খুব পড়ছে মনে ছোটবেলার সেই-রান্নাবাটি
আর পুতুল খেলার কথা।
খেলার ছলে করতাম তখন আজকের ঘরকন্না,
আজ বাস্তবে তা করতে গিয়ে পায় শুধু কান্না।
সময় পেলেই খেলতাম পুতুল পুতুল আর- রান্নাবাটি,
মনের আনন্দে করতাম সংসার- থাকতো পরিপাটি।
মা’কে দেখে শিখতাম,করতাম অনুকরণ,
কি করে মা ঘর সাজান,কি করে করেন রন্ধন।
মেলা থেকে কিনতাম হাঁড়ি-কড়া-খুন্তি,
ঘর সাজানোর যত কিছু,আর পুতুল অগুন্তি।
খাট-আলমারি-ড্রেসিংটেবিল,কিছুই যেত না বাদ,
সব কিনে দিতেন বাবা,আমার যা যা হোত সাধ।
দুপুরবেলা মা ঘুমোলে উঠতাম চুপিসারে,
আলু-পেঁয়াজ-সবজি নিতাম,যা থাকতো রান্নাঘরে।
চা-জলখাবার থেকে সব খাবার দাবার,
মিছি মিছি সব বানাতাম ইচ্ছামত আমার
রঙিন কাপড় দিয়ে মা বানিয়ে দিতেন পুতুলের সুন্দর জামা,
পুতুলের ঘরটা কিনে দিয়েছিলেন আমার ছোট মামা।
পড়াশুনা- খাওয়া-শোওয়া-সবকিছুর মাঝে-
মন পড়ে থাকতো পুতুলগুলোর কাছে।
পুতুল তখন বাবা-মা, পুতুলই সন্তান,
ছোট্ট আমি পুতুলের ঘর করতাম দিয়ে মন প্রাণ।
পুতুলের ঘর সাজানোয় থাকত পরিপাটি,
গুছিয়ে রাখতাম আমার সব খেলনাবাটি।
শাড়ি আর পোষাকে সুন্দর করে সাজাতাম
কবে নিজের সংসার হবে তা ভাবতাম।
ইচ্ছেমতো বন্ধুরা পুতুলের দিতাম বিয়ে,
ঝগড়া হলেই যে যার পুতুল নিতাম ফেরত চেয়ে।
হারিয়ে গেছে ছোটবেলার স্বপ্নের সেই পুতুলের সংসার
আর রান্নাবাটি খেলা,
আজ কাজ করতে কেটে যায় সকাল-দুপুর-সারাবেলা।
কল্পনার যে সংসারে ছিল ভালো লাগা-ভালোবাসা,আনন্দ আর মজা,
আজ তার সাথে জুড়েছে দায়িত্ব,কর্তব্য
আর হাজার কাজের বোঝা।
খেলার ছলে সংসার করতে লাগতো কত মজা,
আজ বাস্তবে তা করতে গিয়ে লাগে যেন সাজা।
