সারল্য
সারল্য


জানিস মা তোর মমতা মাখা মুখটা
রোজ রাতে খুব মনে পড়ে,
মনে হয় ছুটে চলে আসি
তোর আদর মাখা নরম কোলে।
জীবিকার তরে এসেছি শহরে
ভুলিনি মাগো তোকে,
একাকী ঘরে ফিরে তোর কথা ভেবে
জল ভরে আসে চোখে।
জানিনা মাগো কবে পাব ছুটি
আসব ফিরে গাঁ য়ে,
খাব তোর হাতের চুনো পুঁটি মাছ
সর্ষে বাঁটা দিয়ে।
গেরি-গুগলি খাব আমি
খাব কচুর সবজি,
চেটে-পুটে খাব মা তোর রান্না করা
সুস্বাদু খাবার-খাব ডুবিয়ে কবজি।
জানিস মা এখন আর রাতে পাই না ভয়-
হয়না এখানে আঁধার,
ঝলমলে বিজলী বাতির রোশনাই হেথায়
ঘোচায় রাতের অন্ধকার।
দিন না রাত পাই না বুঝে
চিন্তা তুই করিস নে মিছে,
খোকা তোর আর নেইকো ছোট
সে এখন অনেক পরিণত।
শহরের গতিময় ব্যস্ত জীবন
রুঢ়-জটিল সব সমীকরণ-
মিষ্টি মিষ্টি মাপা কথা
মানুষের মুখ অভিনয়ের
কপট মুখোশে ঢাকা।
সহজ সরল গ্রামের ছেলে
বুঝিনা কিছু-সব যেন লাগে গোলমেলে,
নেই এখানে মাটির মিষ্টি সুবাস
ধোঁয়া-কালি ভরা প্রদূষিত বাতাস।
এখানে কারো সময় নেই করো মন বোঝার,
কারো সময় নেই দু-দন্ড
বসে আলাপচারিতা করার।
ছল,কপট,মিথ্যায় ভরা এই জনঅরণ্য,
মনে ভয়-
এত চাকচিক্য আর প্রলোভনের হাতছানিতে
গ্রামের ছেলেটার সারল্য যেন
মলিন হয়ে না যায় কখনো।