মেয়ে
মেয়ে
আমি সেই মেয়ে
যাকে তোমরা কাজলনয়না বলো,
সব পুরুষই চেতনে-অবচেতনে
যাকে কামনা করো!
যে তোমার ঘরের লক্ষ্মী-
তোমার ঘরের মা-মেয়ে-বৌ বা বোন-
যে তোমার ঘরের আলো-
যার হাসির মূর্ছনার মাধুরী
ছড়িয়ে পড়ে সারা ঘরে।
যার মনের খুশির আলোয় ভরে যায় ঘর-
তৈরী হয় প্রশান্তির পরিবেশ-
যে তার হাতের ছোঁওয়া-
আর হৃদ মাধুরী দিয়ে ঘরে
তৈরী করে মনোরম পরিবেশ,
বাড়ির সকল সদস্যের
শরীর-স্বাস্থ্য-সুখের প্রতি
অতন্দ্র প্রহরীর মতো যার থাকে
সদা সজাগ নজর-
আমি সেই মেয়ে।
আমি মা হয়ে নতুন প্রজন্ম কে দেখাই
পৃথিবীর আলো-
আমার স্নেহ-মায়া-মমতা দিয়ে
করি তার প্রতিপালন,
বোন হয়ে ভাইয়ের মঙ্গল কামনায়
দিই ভাইফোঁটা-
ভাইয়ের হাতে বাঁধি রক্ষাকবচ-রাখী,
স্ত্রী হয়ে স্বামীর মঙ্গল প্রার্থনায়
করি উপোস,রাখি ব্রত-
সন্তানের মঙ্গলার্থে করি পুজো-
রাখি ষষ্ঠী ব্রত-উপবাস-
আমি সেই মেয়ে।
কিন্তু তবু যুগ যুগ ধরে আমি বঞ্চিতা,
পৃথিবীর আলো দেখার আগেই
ভ্রুণে নির্বিচারে হয় আমার হত্যা।
আমি শোষিত-আমি অবহেলিত-
আমি ধর্ষিত-আমি নির্যাতিত।
আমি স্রষ্টা-আমি সৃষ্টি
তবে কেন এই অনাসৃষ্টি!
আমি বিধাতার সৃষ্ট শ্রেষ্ঠ উপহার
তবে আমার প্রতি কেন এ
অন্যায় অবিচার!
আমার জন্মে কেন মলিন হয়
তোমাদের মুখের হাসি,
কেন সগর্বে পারো না বলতে
কন্যাসন্তান ভালবাসি!
নব চিন্তাধারায় ভাবতে শেখো
কোন পৃথক সত্তা নয়-
কেবল মানুষ বলে গণ্য করো।
সুলতা দাশ।