ঝড়ের মুখে দাঁড়িয়ে
ঝড়ের মুখে দাঁড়িয়ে
ঝড়ের মুখে দাঁড়িয়ে
মানিক চন্দ্র গোস্বামী
ভাসিয়েছি এই জীবনতরী অজানা এক পথে,
ছুটছে জোরে, দুলছে ভারি উথাল হাওয়ার সাথে।
জন্মলাভের লগ্ন থেকে ভাসছে জীবনতরী,
উলুধ্বনি, শঙ্খধ্বনি শেষে দেয় ভবিষ্যতে পাড়ি।
যাত্রা শুরুর মাহেন্দ্র ক্ষণে শান্ত, শীতল নদে;
ইচ্ছেমতো ঘুরিয়েছি হাল, চিন্তাবিহীন পথে।
বিপদ কিছু আসতে পারে, আসতে পারে বাধা,
উদ্ভট যত চিন্তাধারা ইচ্ছে ডোরে বাঁধা।
খেয়াল খুশি মতো যখন চলতে গিয়ে ভেসে,
এগিয়ে গেলাম নদী যেথায় সাগর সাথে মেশে।
মোহনায় এলো তীব্র ঝাপ্টা, ঝড়ের অনুভূতি,
প্রয়োজনে জানি, শক্ত হয়েই চলতে হবে ছুটি।
বহুদূরের বিপদভরা, শংকাভরা পথে,
চলতে গেলে আলাপ হবেই ঝোড়ো হাওয়ার সাথে।
ছিন্ন হয়ে যেতে পারে নির্ভরতার পাল,
মাথার ওপর বজ্রাঘাতের নিষ্ঠূরতার কাল।
উঠতে পারে উত্তাল ঢেউ, শান্ত সাগর বুকে,
দুলতে হবে অবিরত, জীবন ভরবে দুখে।
হারিয়ে গেলে হালের ওপর হাতের কঠোর স্নেহ,
ছন্নছাড়া ছিন্ন তরীর বেদনা বোঝে না কেহ।
তরীর তখন লক্ষ্যপথে ক্ষমতা এগিয়ে যাবার
যায়না পাওয়া নির্ভীকতা, শক্তি, সামর্থ্য আর।
জীবন নদীর সাগর-মুখে, ঢেউ এর দোলার সাথে,
চেতনা বাড়িয়ে ধরতে হবে, হালটা শক্ত হাতে।
হাজার ঢেউয়ের দোলায় যেন হালের অভিমুখ,
যায় না ঘুরে, আসুক যত দৈন্য এবং দুখ।
ভাসতে হবে স্রোতের মুখে নিজ বুদ্ধি বলে,
মানুষের এই জীবনতরী যেন নির্বিঘ্নেই চলে।