মুরারী মোহন
মুরারী মোহন
মুরারী মোহন prompt-4
মানিক চন্দ্র গোস্বামী
মুরারী মোহন নামে এ পাড়াতেই থাকেন একজন,
বিপুল ভুঁড়িটি তার, ওজন তিন মণ।
কি করে এই দুর্দিনে তার ওজন হলো এত,
আমি ছাড়া কেউ বুঝি আর জানে না অতশত।
যেটুকু জানি আমি, তার কিছুটা জানাই,
সবটুকু জানিয়ে দিলে সে যে লজ্জা পাবে ভাই।
সকালে পায় বেজায় ক্ষিদে, ঘুম ভাঙলে পর,
মাখন দেওয়া রুটির সাথে দুধের মোটা সর।
সঙ্গে ডজন ডিম সেদ্ধ, দুধের সাথে কাজু,
চায়ের গ্লাসটি এগিয়ে ধরে কিশোর চাকর রাজু ।
সাঙ্গ হলে খাওয়া দাওয়া আদেশ জারি হয়,
রাজু বেটা হতচ্ছাড়া বাজার করে আয়।
ছোকরা চাকর বাজার থেকে ফিরে এসে দেখে,
বাবু তাহার শুয়ে আছেন, নাক ডাকছেন সুখে।
অফিস যাবার সময় হলে ছোকরা যখন ডাকে,
বাবু তখন রেগেই আগুন, মারতে ওঠেন তাকে।
শুলাম আমি এই তো সবে, ডাকিস কেনো ওরে,
অফিস যাবার সময় আমি ঠিক উঠবো যে রে।
বেশ কিছুক্ষণ শুয়ে থেকে বাবু ওঠেন যখন,
ঘড়ির দিকে চেয়ে বাবু চেঁচিয়ে ওঠেন তখন -
"রাজু বেটা হতচ্ছাড়া, কোথায় গেলি পাজী,
রান্না ঘরে সারা জীবন কাটিয়ে দিতে রাজি?"
বিশাল খেয়ে অনেক পরে অফিসেতে যান বাবু,
সারা দুপুর পাখার নীচে সুনিদ্রায় কাবু।
অফিস সেরে বাড়ি ফিরে জলখাবার তার চাই,
ডজন খানেক কলার সাথে ক্ষীরের মালাই।
সারাদিনের কাজের চাপে ক্লান্ত বাবু ডাকে,
রাজু বেটা হতচ্ছাড়া, পাজিটা কোথায় থাকে?
বিছানাটা পাত, ধকল গেছে, একটুখানি শুয়ে,
খানিক এখন আরাম করি চা বিস্কুট খেয়ে।
দশটার পর ডেকে তুলিস, রাতের খাবার খেয়ে,
বাকি রাতটা কাটিয়ে দেবো তখন ঘুমিয়ে।
বাবুর ঘরে টাঙানো আছে এক ব্যায়ামবিদের ছবি,
তিনি করবেন ব্যায়াম, যখন সকালে উঠবে রবি।
কাল থেকে ঠিক শরীর বানাতে ব্যায়াম করতে হবে,
শপথ পূরণ হবে না কভু, চোখে ঘুম ছোঁয়াই রবে।