ভালোবাসার ক্ষুধা
ভালোবাসার ক্ষুধা
মা, তোমার জঠর থেকে আমার জন্ম হয়নি জানি,
তুমি কখনই সহ্য করোনি আমার জন্য প্রসব যন্ত্রনা,
দশ মাস দশ দিনে আমার কোনো অনুভূতিও তুমি অনুভব করোনি;
কিন্তু যেদিন থেকে আমার জ্ঞান হয়েছে
আমি তো শুধু তোমাকেই মা বলে জেনেছি,
তোমার কাছেই তো আমি লালিত পালিত হচ্ছি-
প্রতিটা দিন প্রতিটা ক্ষণ প্রতিটা পদক্ষেপে,
তাও কি তোমার এতটুকুও ভালোবাসা জন্মায় না আমার প্রতি ।
ভাইকে তো তুমি কত আদর করো
আমায় কি পারো না একটুও আদর দিতে,
মা গো, কই সেদিন থেকে আজও আমি তো কখনই
তোমায় "মা" ছেড়ে "সৎ মা" বলে উঠতে পারিনি;
তবে তুমি কেন আমায় কখনো আপন করে নিতে পারলে না,
আমি কি মা এতটাই খারাপ, এতই তোমার চোখের বিষ
বুকে না হোক তোমার, একটু চরণেও তো পারো মা ঠাঁই দিতে ।
বাবা কত তোমায় বলে, কত বোঝায় তোমায়;
তবুও কি আমার অগোচরে পারো না একবার কাছে আসতে,
যখন আমি ঘুমিয়ে থাকি পারো না একটু বসতে আমার পাশে,
জ্বর হলে পরে কেন পারো না মাথায় একটু হাত বোলাতে,
দিয়েছ শুধু শত শত লাথি-ঝাঁটা-গালি আর হাজার অবহেলা-
তাও জানো মা, তোমার প্রতি আছে আমার ভালোবাসা,
সৎ সন্তান বলে তুমি সবসময় আমায় দূরেই রেখে দিলে
তোমার প্রার্থনাতেও নাকি আমি আসি না, লোকে সেটাই বলে ।
বাবা আমায় বলে, "দেখিস মা একদিন সব ঠিক হবে "
বসে বসে দিন গুনি তার, কবে সেইদিন আমার জীবনে আসবে,
ঘরের কোণে বসে কান্না করি তাও পরে না তোমার চোখে
একটি বারও আসো না কেন মা চোখের জল মোছাতে ।
মা কারে কয়, তাই কখনও বুঝিনি আমি !
আমি যে মা সব পেয়েছি, পায়নি শুধু তোমার ছোঁয়া,
আজ আমি হয়েছি এক ভালোবাসার ভিখারি
বুক জুড়ে শুধু হাহাকার উঠে তাই কি বিষণ্ণ এক ভালোবাসার ক্ষুধা ।।