শীতকাতুরে
শীতকাতুরে
হিমেল পরশ লাগলো গায়ে শীত এল যেই,
ছেঁড়া কাঁথায় শুয়ে খোকা কান্না বেঁধেছেই ।
মাথার উপর কেবল তাদের একখানা খোলা আকাশ,
তোমরা বলো শীতের স্পর্শ, তারা বলে কনকনে ঠান্ডা বাতাস ।
নামী দামি কারলনের তলা থেকেও বলো আছি যেন দার্জিলিংয়ে,
পথের ধারে দাঁড়িয়ে তারা দ্যাখো কেমন কাঁপছে থরথরিয়ে ।
রাত্রি যত বেড়ে চলে ততই নেমে চলে পারদ মান,
ফুটপাত জুড়ে তাদের ভীড় কিন্তু সেই গ্রীষ্ম সমান ।
কখনও কি ভেবে দেখেছ কেমনে কাটে তাদের রাত,
দাঁতে দাঁত চেপেও তারা এড়িয়ে যায় অশ্রুর আঘাত ।
কান্না চোখে ছোট্ট শিশু তাপ নেয় বসে পথের ধারে,
মাথার ওপর বিন্দু বিন্দু শিশির কণা ঝরে পড়ে ।
কুয়াশামাখা ভোরের আলোয় ঝলমলে রোদ ওঠে,
মা'র আঁচল ধরে শিশু খাবারের খোঁজে ছুটে ।
সারাদিনের পরে যখন দু-মুঠো কপালে জোটে,
খুশিতে তখন শিশুর চোখে মুখে হাসি ওঠে ফুটে ।
বেশি বেশি চায় না তাদের অল্পতেই তারা খুব সুখী,
পাহাড় সমান থাকার পরেও কেউ বা হয় খুব দুঃখী ।
শীত সকালে গরম চায়ের উষ্ণ ছোঁয়া ওদের চায়না,
শিশির মাখা ফিনফিনে চাদরে যে আর শীত কাটে না ।
তোমরা তো সব ক্ষমতাধারী, দাও না ওদের একটু ছাদ,
খড়ের চালা না যদি হয় ত্রিপল থেকেই দেখুক চাঁদ ।
গদি না হয় নাই বা দিলে দাও না কিছু গরম পোশাক,
কান্নাগুলো মুছে ফেলে হাসিটুকু মুখে থাক ।
কুয়াশা ভরা শীত চাদরে ঢাকছে না আর গা,
পায়ে পড়ি শীতরে তোর এবার চলে যা ।।