জগৎ উদ্ধারিনী নারী
জগৎ উদ্ধারিনী নারী


যতবারেই তাকাই আমি
নারীর মুখের পানে
হৃদয় যে মোর নেচে ওঠে
মায়ের মধুর নামে ।
ছোট্ট একটি নামের বলে
মন পবিত্র হয়
মা-মা তাই ডাকি সদা
ভয়কে করতে জয় ।
রমণীর ওই রূপের মাঝে
মায়ের মমতা
প্রেম ও ক্ষমার নদী বহে
হৃদয়ে সর্বদা ।
বড় হয়ে যে যায় ভুলে
ছোটবেলার মাকে
পতন হয় তার আর দেশের
বিশ্বের দরবারে ।
ভুলতে নাহি পারি কভু
ছোট্ট মা টির কথা
পুস্পসম কোমল মনে
বেঁধেছিলো বাসা ।
মনে যে তার স্বপ্ন ছিলো
নারী আদর্শ হবে
মা আর বাবা শান্তি পাবে
বিয়ে হলে পরে ।
সংসারের সব অভাবটুকু
মিটাতে হবে তাকে
চাকরির টাকা তুলে দেবে
দারিদ্র পিতার হাতে ।
ছোট্ট একটি সংসার হবে
সেও হবে মা
মাতৃক্রোড়ে সন্তান হাসে
শ্রেষ্ট মাতৃত্বের মহিমা ।
মনের যত ব্যাথা-বেদনা
সহে সে নিরবে
বলতে নাহি পারে কভু
জ্বালা কি অন্তরে ।
কুসুম কোমল নিষ্পাপ মনে
ছিলো অটুট বিশ্বাস
ভাতৃ-পিতৃ-সন্তান সম
পুরুষ জাতির নিঃস্বাস
একটি বারও হয়নি মনে
এরাই যে তার করতে পারে
মাতৃত্বের সংহার ।
কেশাঘাতে নির্যাতিতা
সীতা হয়েছিল
পাঞ্চালীর বস্ত্রহরণ
পৌরুষের কাজ ছিলো ।
ভেবেছিলো সকল পুরুষ
আত্মীয় প্রিয়জন
সবার মাঝে নির্ভয়া ছিল
ভেবে আপনজন ।
আপনজনের যোগ্য জবাব
দিয়েছিলো তারা
ফন্দি আঁটে শোষণ করে
কিভাবে যায় মারা ।
পুরুষের মুখোশ পরা
অন্তরে কাপুরুষ
সবাই মিলে একে একে
আঘাত হানে বারেবারে
পিশাচের স্বরূপ ধরে
সতীর করে নাশ ।
একটিবারও হাত কাঁপেনি
মন গলেনি মায়ায়
যন্ত্রনা আর লাঞ্ছনাতে
করে সে চিৎকার ।
কাম-বাসনা, নিচ প্রবৃত্তির
লালসা পূরণ হলে
রক্তাক্ত শরীরটারে
ফেলে দেয় ছুঁড়ে ।
জীবন যে তার ফুরিয়ে গেলো
ফুলের কুঁড়িতেই
সকল আশা রয়ে গেলো
মনের কোনেতেই ।
সন্তানেরে বাসবে ভালো
দিয়ে সারা জীবন
সন্তানে যে নিলো জীবন
করে কাম-বাসনা পূরণ ।
পশু-পক্ষী-কুকুর কাঁদে
আকাশ পানে চেয়ে
বিধাতারে প্রশ্ন করে
শ্রেষ্ঠ কহ কারে
মায়ের নামের শক্তি কত
লম্পটে না জানে
সাধু-ঋষি এ নাম জপে
জগৎ উদ্ধার করে ।
চিত্তশুদ্ধির মন্ত্রটি মা
দ্যাখরে খুলে আঁখি
জীবন শুরু হতেই মোরা
তারই কোলে থাকি ।
এই বিশ্বের সকল মানুষ
মাতৃজাতির দান
পালন করে স্নেহ-প্রেমে
নেই ভেদাভেদ জ্ঞ্যান ।
এই নামটি বুকে ধরে
ডাকবো রে "মা" আমিই
মাতৃভাব থাকলে ধরে
মনে আসে বল
চরিত্রগুণে শ্রেষ্ট হবে
ভারত সমুজ্জল ।
আমার ভারত শ্রেষ্ট হবে
ত্যাগে ও সংযমে
আজি হতে মা-মা বলে
ডাকবো মনে প্রাণে ।