ঈর্ষার মুখোমুখি
ঈর্ষার মুখোমুখি
বহমান জীবনপ্রবাহে হিংসামুখর মুহূর্তগুলোর অনুসন্ধান,
ঈর্ষান্বিত হয়েছি আমি কোনওদিন? কিংবা পরশ্রীকাতর?
বেশ তো ছিলাম, রেষারেষির রেশটুকু ছিল না মনের গহনে,
দ্বিতীয় শ্রেণীতে অশ্রাব্য শব্দ প্রয়োগ না করেও শাস্তি বিধান,
বিনা দোষে সর্বসমক্ষে অপমান, ভর্ৎসনা আর চপেটাঘাত!
অভিযোগকারীর দল ছিল একেবারে প্রথম সারির ছাত্রী,
আর নির্দোষ ওই অভিযুক্তের ক্রমিক সংখ্যাটা ছিল - সাত,
তাই স্পষ্টতই তার আত্মপক্ষ অবলম্বনটুকু সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন,
প্রথম-দ্বিতীয় স্থানাধিকারীদের বক্তব্য যাচাই নিষ্প্রয়োজন;
সেদিন বোধহয় মনেতে প্রথম হিংসার বীজ দানা বেঁধেছিল,
নিঃশব্দে অশ্রুপাত, পক্ষপাতিত
্বের থাবায় জর্জরিত শিশুমন,
তারপর প্রবল অধ্যবসায়, পরের বছর তৃতীয় স্থানটা তার;
আজও সে ঈর্ষাপ্রবণ, যদিও সে ঈর্ষায় নেই লেলিহান শিখা,
টাইমলাইনে বন্ধুদের সাথে বাবাদের সেলফিতে বিধ্বস্ত সে!
সে হিংসা করে, নিভৃতে অশ্রুসজল হয়ে ওঠে তার দুই চোখ,
তবু তার ঈর্ষায় নেই পরশ্রীকাতরতা কিংবা আত্মকেন্দ্রিকতা,
অহমিকার উষ্ণ শোণিত স্রোতে পথভ্রষ্ট অভিযাত্রী নয় সে,
সাধ্যমতো বাড়িয়ে দেয় তার হাত নিঃস্বার্থ সহযোগী হয়েই,
কারোর ক্ষতি না করেও ঈর্ষামুখর আত্ম উন্মোচনই শ্রেষ্ঠ;
সে জানে, হিংসা-দ্বেষ-হানাহানি দিনশেষে তো বৃথা সকলই,
সভ্যতার পরিসমাপ্তিতে ভূমির নীচে প্রস্তরীভূত নরকঙ্কাল।