বেসুর আগমনী
বেসুর আগমনী
কতদিন হয়ে গেল বাপের বাড়ি যাইনি।
বিয়ের পর পরই আসে অতিমারী, ছিল ২০১৯ সাল।
আজ ২০২১, ছেলে আমার এক বছরের প্রায়!
দেখতে দেখতে দুটো বছর পুরো গৃহবন্দি!
না, পুরোপুরি গৃহবন্দি বলা যাবে না;
গিয়েছিলাম তো, ওই হাসপাতালে!
ছেলে হলো যে!
মা, বাবা, দাদা কেউ আসতে পারেননি।
ডাক্তার তো, আরো বেশি জরুরি কাজ ছিল ওনাদের!
সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা,
লোকজনের জীবন-মরণের প্রশ্ন!
আমার প্রতিও, নবাগতের প্রতিও;
অজান্তেই যদি ছড়িয়ে দেন মারণরোগ বীজ!
তাই সবাই আমরা সাবধান ছিলাম, যে যার ঘরে!
এখনো আছি, যে যার ঘরে।
আমরা এখন প্রতিষেধক টিকা পেয়ে খানিকটা সুরক্ষিত।
কিন্তু ওই ছোট্ট শিশুটার কথা ভেবে, যে যার ঘরে!
আচ্ছা, মা দুর্গা কি আসবেন বাপের বাড়ি?
গতবছর এসেছিলেন বটে, তবে বেশি হইহুল্লোড় হয়নি।
এ বছর কি হবে?
বাঙালি আশায় বুক বেঁধেছে সারা বছর,
এবার নিশ্চয়ই মায়ের দেখা মিলবে,
দল বেঁধে যাওয়া যাবে হাতে নিয়ে অঞ্জলি।
আচ্ছা, কৈলাসে কোভিড নেই না?
নেই নিশ্চয়!
নাহলে আমরা খবর পেতাম, কারুর না কারুর জ্বর হতো!
গতবছর টিভিতে দেখেছিলাম অবশ্য মাস্ক পরা ঠাকুর,
তবে সে তো ওনাকে বিপন্মুক্ত রাখার জন্য!
বলা যায় না,
হয়তো ফিরতি পথে মা সাথে করে নিয়ে গেলেন ভাইরাস!
তাই চারটে দিন সাবধানে থাকা আর কি!
এবছরও মা আসবেন, মাস্ক নাও পরতে পারেন।
সাধারণ মানুষই মাস্ক পরা ছেড়ে দিয়েছে!
কাল তো কলকাতা থেকে এক পরিচিত ফোনে বললেন,
"কোভিড নেই আর! সব চলে গেছে!"
ভারি নিশ্চিন্ত, সবাই নিশ্চিন্ত!
টিকা নিয়ে সবাই নিশ্চিন্ত!
আসল-নকল-সকল টিকা!
খালি চিন্তা করেন আমার বাপের বাড়ির লোক,
ওই শিশুটার কথা ভেবে।
তাই এবছরও আমরা থাকব, যে যার ঘরে!