একরত্তি সমস্যা
একরত্তি সমস্যা
আমি নাকি ছোট,
বলে সকলে!
মানিনা আমি!
জন্মের পর একটা গোটা বছর পেরিয়েছি সময়ের কোলে!
আমি সব চিনি,
ঠাম্মু, দাদা, বাবা আর মা,
কাজের পিপি, জানি সব জানি।
ম্যাও, ফুটবল,
হাম্বা, জিরাফ, ঘেউঘেউদের সাথে
লাল দমকল,
রংবেরঙের বল খেলি লাফাতে লাফাতে।
গিটার নিয়ে কাকাই আমার
ট্যাবের ওপাশে বাজনা বাজায়,
আমিও তখন নেচে নেচে
আমোদ করি বেজায় মজায়।
সবার মুখে গান শুনে শুনে
গলা মেলাতে আমিও পারি,
দাদাদাদাদাদাদাদা বুলির গুণে
সারাবাড়ি মাতিয়ে ছাড়ি।
দিদু দাদু আমায় দেখে মায়ের হাতের ধরা ফোনে,
কাপড়-জামা-খেলনা যত,
যখন টুংটুং আওয়াজ হয় দরজার কোণে,
কেউ এসে দিয়ে যায় দরকার মতো।
মায়ের কোলে চেপে
আমি ভাত মাছ খাই,
মাংস, পাউরুটি, বেদানা, কলাও খাই খেপে খেপে,
আর মিষ্টি দই।
আমি দাঁড়াতে পারি,
পোকা টিপে মারি,
ঘন্টা বাজাতে পারি।
টাটা করতেও পারি।
তবে, কাল সিঁড়ি দিয়ে নীচে গেছিলাম,
মায়ের কোলে করে।
লোকটার নাকে মুখে ঢাকা,
ঢোলা জামা পরে,
হাতে একটা বড় ঝাঁটা,
চোখদুটো যেন বিশাল ভাঁটা!
তার সাথে হিজিবিজি ভোঁ ভোঁ কিসব আওয়াজ হলো,
ভয় লাগেনা বলো?
মার মতো জামা পরে যাচ্ছে, কিন্তু মা না।
দাদার মতো জামা পরে যাচ্ছে, দাদা না।
সবার মুখ ঢাকা।
খুবই ভয়ের ব্যাপার না?
তাই একটু কেঁদেছি।
আমার দিকে তাকিয়ে দাঁত বের করলো যে!
ঠাম্মু তো ঘরে এসে খুব হেসেছে,
সবাইকে ফোনে বললো আমি ক্যাবলা নাতি যে!
দাদা বলে, "না। ওর পৃথিবী আমরা চারজন,
তাই বাকি সবে ভয় লেগেছে!
আস্তে আস্তে বাইরে বেরোতে বেরোতে ঠিক হবে।"
বাবা বলছিল, "কোভিড এসে বাচ্চাদের খুব মুশকিল,
দুনিয়াটা আর চিনতে পারলোনা,
বাইরে বেরোতে পারলো না,
জন্ম থেকেই মোবাইল আর ভিডিও কল!
কি করে যে ওরা সাবলীল মানুষ হবে, ভগবানই জানে!"