বাঘের মাসি
বাঘের মাসি
আমার দিদার ছিলো এক নিরীহ পোষা মার্জার।
সেদিন ছিলো অন্যদিনের মতোই এক নিস্তব্ধ দূপুর।
উঠোন ওয়ালা বাড়িতে ছিলো বেশ লম্বা এক ঘর,
ঘরটার ছিলো দুটো জানালা, একটা দোর।
আমি হয়তো দশ - এগারো কিংবা নয়,
ভাই তখন হবে বছর চার অথবা ছয়।
ভাই বললো "দিদি চল বিড়ালটাকে আটকাই"
বুঝিনা আমি কি যে ভাবছে মনে মনে ভাই।
"কেন রে?" শুধু এই কথাটি শুধাই,
"দেখি না আটকে গেলে কি করে" ওর উত্তর সোজাই।
"তুই লাগা জানালা দুটো আমি দরজাটা আটকাই",
কথাটা বলেই দরজা লাগিয়ে দিই।
শান্ত শিষ্ট বেড়ালটা ঢোকে গিয়ে খাটের তলেই,
ঘরে ছিলো এক মস্ত পাকা বাঁশের লাঠি,
লাঠিখেলা খেলতোনা কেউ, পড়েই ছিলো সেটি।
হঠাৎ করেই লাঠিটা নিয়ে ভাই, ওকে খোঁচাতে যায়,
বেড়ালটার তো এবার দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়।
ঘর থেকে বেরোনোর যে আর কোনো উপায় নেই,
এই কথাটা খালি চোখেই বেড়ালটা স্পষ্ট বুঝে যায়।
শুরু করে আক্রমণাত্মক ফ্যাঁস ফোঁস,
ওরেবাবা ! সে তার কি মারাত্মক জোশ।
বেড়াল কে, কেন যে বলে বাঘের মাসি,
এক মুহুর্তেই বুঝে যাই আমি, আর মনে মনে হাসি।
সম্মান জানাতে, নাকি প্রাণ বাঁচাতে তা জানিনা, দৌড়ে এসে তৎক্ষণাৎ দরজা খুলে দিই,
লাফ দিয়ে বেড়াল বলে পালাই পালাই।
রাগ থাকলেও বেড়ালটা ছিল যথেষ্ট ভদ্র নিশ্চয়,
আমাদেরকে আঁচড়-কামড় না দিয়েই ছেড়ে দেয়।
