আমি সুন্দরী
আমি সুন্দরী
আমি সুন্দরী
স্মরজিৎ দত্ত
এই বাবু তুই আয় না আমার ঘরে,
সকাল থেকে খারিয়ে-খারিয়ে
একটিও খদ্দের জুটছে না রে!
তোকে খুব সুখ দেব রে;
যেমনটি চাস তুই, তার সব পাবি;
আয়না বাবু, আমার ঘরে আয়।
জানিস বাবু, আমি এ কাজ করতে লাই রে
আমার ঘরে চারটি পেট রে,
রোজগেরে নেই কেউ।
আর আমার পড়াশোনা তো লাট ,
তাই গতর দিয়েই পয়সা তুলি রে বাবু;
আমার দিকে একটিবার চেয়ে দেখ
পুষ-ন্দ হবেই তোর।
বাবুটি আর চোখে তাকায়
তাকায় মেয়েটির দিকে।
দোটানে পরে কিছুক্ষণ,
ঘরের টুশি, সেই তার সবচেয়ে প্রিয়,
অথচ এই মেয়েটির তো পয়সা দরকার
সকাল থেকে খদ্দের সে পায়নি একটিও।
দিনের শেষে তাকে নিয়ে চারটি পেটকে
চারটি পেটকে কি দেবে সে?
মেয়েটি মুচকি হেসে জানান দেয়
সে বুঝেছে বাবুটি তার ঘরে যাবে।
আয় বাবু তুই আমায় নজর কর;
বাবুটি অনুসরণ করে,
অনুসরণ করে শেষে যায় মেয়েটির ঘরে।
মেয়েটির গঠন, গায়ের রং, সৌন্দর্য,
ক্ষণিকের তরে, মনে হয় আলিঙ্গনে তাকে
ওষ্ঠ দ্বয়ের বিপ্লব ঘটিয়ে তুলি তার সারা দেহে।
তবুও হঠাৎ সোনালী ওরফে টুসির কথা
টুসির কথা তার মনে ওঠে ভেসে।
আমাকে এক গ্লাস জল দাও;
আর তুমি বোস আমার সামনে।
মেয়েটি বলে ওঠে, তুই নিবি না;
আমার এই শরীর, আমার এই যৌবন,
আয়, দেখ, তোকে আমি খুব সুখ দিব রে।
বাবুটি বলে তাকে, তুমি পয়সা পাবে;
তবে প্রতিদানে তোমায় দিতে হবে না
দিতে হবে না তোমার শরীর, তোমার যৌবন,
তোমার যৌবন, তোমার সৌন্দর্য;
না বাবু আমি না কাজ করি পয়সা লিবো না।
বাবুটি বলে ওঠে আব্রু দাও তোমার যৌবনে,
বলে, তুমি আমার দিদি হতে পারো না!
নীরাভরণ মেয়েটি স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়ায়
স্তম্ভিত হয়ে দাঁড়ায় ক্ষনিকের তরে;
লজ্জা নিবারণের কাপড়টি দিয়ে
তার যৌবনকে ঢাকতে ঢাকতে সে বলে,
আজ বারো বছর কাটিয়েছি এই জগতে
কোনদিন, কেউ তো কখনো বলেনি
আবার যৌবন সে নেবে না।
তবে তুমি কি প্রীত নও
লালায়িতো নও, আমার
আমার এই যৌবন দর্শনেও।
শোনা যায় যেই ছেলেটি কোন একদিন
কোন একদিন এসেছিল তার ক্রেতা হয়ে;
লাস্যময়ী যৌবন তাকে পর্যুদস্ত করতে পারেনি,
সেই লাস্যময়ী নারী আজ
আজ সেই ক্রেতার অফিসেরই এক কর্মী।
আজ তার চারটি পেট চালাবার জন্য
চালাবার জন্য যৌবনকে বিক্রি করতে হয় না,
বিক্রি করতে হয় না তাকে তার সৌন্দর্যকে ।
যৌবন দেখিয়ে ক্রেতা সংগ্রহ করতে হয় না,
ক্রেতা সংগ্রহ করতে হয় না আজ তাকে।