Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!
Unlock solutions to your love life challenges, from choosing the right partner to navigating deception and loneliness, with the book "Lust Love & Liberation ". Click here to get your copy!

Sanghamitra Roychowdhury

Horror Thriller

3.3  

Sanghamitra Roychowdhury

Horror Thriller

মায়ার ছায়া (ধারাবাহিক) ২

মায়ার ছায়া (ধারাবাহিক) ২

3 mins
1.7K


মায়ার ছায়া (ধারাবাহিক)


খুব জোরে জোরে বৃষ্টি পড়ছে। এত জোরে বৃষ্টির আওয়াজ যে, শ্রীতমারর ঘুম ভেঙে গেলো। ঘুম ভাঙতেই শ্রীতমা বুঝতে পারলো ম্যাগাজিনটা পড়তে পড়তে ও ঘুমিয়ে পড়েছিলো। ঘড়িটা দেখতে গিয়ে বুঝলো কারেন্ট অফ, নিশ্ছিদ্র অন্ধকার। এবার শ্রীতমার ভীষণ অস্বস্তি হচ্ছে। অদ্ভুত একটা অস্বস্তি। বৃষ্টির আওয়াজে ঘুম ভাঙলে অস্বস্তি হবে কেন? বৃষ্টি তার ভাল লাগে না, সে কথা অবশ্য সত্যি। তবু বৃষ্টির শব্দে ভয় পাবে এমন ভীতু মেয়ে শ্রীতমা নয়। শোঁ শোঁ আওয়াজ হচ্ছে একটা। ইস্, ঝড় উঠলো কি? ঝড় নাও হতে পারে, অনেক সময় খুব জোরে বৃষ্টি হলেও এভাবে হাওয়া টানে, শোঁ শোঁ আওয়াজে। রাত কত হোলো? একটা - দুটো না তিনটে? কে জানে? অনুভব ফেরে নি এখনো। পেশেন্টের অবস্থা ক্রিটিক্যাল হয়তো। সোফার ওপরেই আধশোয়া হয়ে বসে রইলো শ্রীতমা। জোর করে চোখ বুজলো, ঘুম আসছে না তাও। অসহ্য বিকট আওয়াজ করে বাজ পড়লো কোথাও। ভয়ে সিঁটিয়ে বসে রইলো শ্রীতমা। ও নিজের বুকের ধুপধাপ আওয়াজ শুনতে পাচ্ছে, ঝোড়ো হাওয়া আর বৃষ্টির আওয়াজ ভেদ করে।


শীতের জন্য সব জানালা দরজা চেপে বন্ধ। কারেন্ট অফ, কোথাও কোনো আলোর রেশ নেই। শ্রীতমার অসম্ভব অস্বস্তি হচ্ছে। এতো অন্ধকার। হাতড়ে হাতড়ে উঠে শ্রীতমা জানালাটা ফাঁক করলো একটু। তীরের ফলার মতো বৃষ্টির ছাঁট শ্রীতমার মুখে ছিটকে লাগলো। সারা শরীর ঠকঠক করে কেঁপে উঠলো। আবার তাড়াতাড়ি করে জানালাটা বন্ধ করার সময় বিদ্যুতের জোর ঝলকানি। আর সেই ঝলকানিতে দেখলো ওদের কোয়ার্টারের গেটের সামনে একটা মেয়ে পড়ে আছে উপুড় হয়ে। খবরের কাগজে পড়েছে শ্রীতমা আজকাল অনেক মেয়েও নাকি মাওবাদী দলে নাম লিখিয়েছে। তারাও ছেলেদের মতোই বোমা বন্দুক নিয়ে হামলাবাজিতে পিছপা হয় না। মাঝে মাঝে জখমও হয়, পুলিশের ধাওয়া বা গুলি টুলি খেয়ে। লুকিয়ে চুরিয়ে গা ঢাকা দিতে চেষ্টা করে নিরাপদ কোণা ঘুপচিতে। যদি শ্রীতমা খুব ভুল না দেখে থাকে তবে মেয়েটা রক্তাক্ত, অর্থাৎ জখম হয়েছে কোনোভাবে। বিদ্যুতের একঝলক আলোয় খুব স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। তবু শ্রীতমার মনে হোলো, ডাক্তারবাবুর কোয়ার্টার, তাই হয়তো লুকিয়ে মেডিকেল হেল্পের জন্যই এসেছে। এরা তো আবার হাসপাতালে যায় না।



ইস্, আজ যে কী বাজে আবহাওয়া সকাল থেকে। রামরতিটা আজ দুপুর হতেই বেরিয়ে গেছে। আজ নাকি অমাবস্যা। আজ তাই রামরতি কিছুতেই আর দুপুরের পরে থাকতে চায় নি। তড়িঘড়ি বেরিয়ে গেছে। গ্রাম্য কুসংস্কার যত। শ্রীতমা কিছু বলে নি ওকে আর, টুকুর টুকুর করে শ্রীতমাই রাতের রান্না করেছে। নিজেই নিজেকে শোনায়, "ধূর, পোষায় এসব? রান্না বান্না, ঘর সংসার, দায়িত্ব এতকিছু? রাতেও স্বস্তি নেই। অনুভবটাও ফিরতে পারে নি এখনো! কোনো মানে হয় এতো অন্ধকারে?" ওহ্, এতক্ষণে বুদ্ধি খেলেছে শ্রীতমার। মনেই পড়ে নি। মোবাইলের চর্চটা তো আছে। হাতড়ে হাতড়ে সোফার ওপর থেকে মোবাইলটা খুঁজে নিয়ে চর্চটা জ্বালালো শ্রীতমা।



দরজা খোলার সাথে সাথে ঠাণ্ডা হাওয়ার দাপটে শ্রীতমা কাঁপতে শুরু করলো। দূরে বাজের গুম গুম আওয়াজ হচ্ছে, আলোও ঝলকাচ্ছে অস্পষ্ট। ইস্, মেয়েটা উপুড় হয়েই পড়ে আছে এখনো। তার মানে ওঠার শক্তি নেই। বৃষ্টির অবিরাম ধারাপাত ভেদ করে মোবাইলের টর্চের আলোয় আবছা হয়ে দেখা যাচ্ছে।



শ্রীতমা অনুভবের সাবধান বাণী ভুলে বারান্দা থেকে নেমে পড়লো। শ্রীতমা কলকাতাতেই খবরে শুনেছে, এদেরকে সাহায্য করতে গেলেও অনেক ঝঞ্ঝাট আছে। আছে বিস্তর পুলিশি হ্যাপা। আবার হয়তো মাওবাদীদের কুনজরে পড়া। অনুভবের সাথে যদিও এসব ব্যাপারে শ্রীতমার কখনো কোনো কথাই হয় নি, তবুও কেমন যেন অনুভবের ওপরে এক ভরসা আছে শ্রীতমার। এরকম মানবিক পরিস্থিতির পরীক্ষায় মনে হয় না একজন দায়িত্বশীল ডাক্তার বিরক্ত হবে বলে। সে যা হবে পরে দেখা যাবে। এখন মেয়েটাকে তুলে এনে একটু ফার্স্ট এইডের ব্যবস্থা শ্রীতমা নিজেই করতে পারবে। অবশ্যই তার আগে দেখে নিতে হবে মেয়েটা এতোক্ষণে আদৌ বেঁচে আছে কিনা। ভাবতে ভাবতেই শ্রীতমা গেটের সামনে চলে এসেছে। আবার বিকট শব্দে বাজ পড়লো কোথাও, সঙ্গে চোখ ঝলসানো আলোর ঝলকানি। আরে, মেয়েটা কোথায় গেলো? শ্রীতমার মোবাইলের টর্চটা জ্বলছে না আর, চার্জ শেষ মনে হয়। শ্রীতমা অন্ধকারেই ঝুঁকে পড়ে দেখতে লাগলো, হাতড়ে হাতড়ে। হ্যাঁ, এইখানটাতেই তো মেয়েটা পড়েছিলো। শ্রীতমার এতোও ভুল হবার কথা নয়। নিজের মনে নিজেই ভাবলো। কড়কড় ক্কড়াৎ বীভৎস জোরে আওয়াজের সাথে চোখ ঝলসানো বিদ্যুৎ চমক। মেয়েটা সত্যিই নেই। তবে লাল লাল ছোপ, রক্তের দাগ বোধহয়, তার ওপরে ওটা চকচক করছে কী? শ্রীতমা স্ট্যাচুর মতো দাঁড়িয়ে আছে। একেবারে কিংকর্তব্যবিমূঢ়। আবার বিদ্যুৎ ঝলকানি। চকচকে জিনিসটা বোধহয় পিস্তল একটা!

******


পরবর্তী পর্ব আসছে


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Horror