তিন্নির মহালয়া
তিন্নির মহালয়া
কাল রাতে মা আর ওর একটু কথা কাটাকাটি হয়েছিল তার একটা প্রতিক্রিয়া হবে স্বাভাবিক।মেঝেতে পড়ে খানখান হয়ে ভেঙে গেল রেডিওটা। চমকে উঠলেন বাবা মা দুই জনে। অবাক চোখে তাকিয়ে রইলেন নীলাঞ্জনার দিকে। রাগে ফুঁসছে নীলাঞ্জনা।
মা শান্ত ভাবে বললো,
— বৌমা কী হলো এটা?
— ভোরবেলা নাটক হচ্ছে মা?
— না...নাটক, মা আজ তো মহালয়া, মহিষাসুরমর্দ্দিনী শুনছি তো মা!
— এই ফুল সাউন্ডে রেডিও চালিয়ে আমাদের ঘুমের পিন্ডি চটকে আপনাদের এখন মহালয়া শুনতে হবে?
— কী বলছো বৌমা? আজকের দিনে শোনো এটা, দেখো তোমারও ভালো লাগবে, এই বুবাই তুই তো ছোটোবেলাই শুনতিস!
আমি চুপচাপ ঘর থেকে বেরিয়ে এলাম। অভাবের সংসারে সেইদিন অনেক টানাটানিতে কেনা রেডিওটা ভেঙে চুরমার হয়ে আছে তখনো ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। তিন্নি দরজা ঠেলে।
— দিদিভাই এতো ভোরে?
— ঠাম্মি তুমি মহালয়া শুনবে?
— এই বছর আর হলো না দিদি ভাই!
— কেন হবে না? এই দেখো!
পকেট থেকে ফোনটা বের করলো ও। কি একটা টেপাটেপি করে হাসি হাসি মুখে তাকালো ঠাকুমার দিকে।
— ডান। ইউটিউবে চালিয়ে দিয়েছি, কানে হেডফোন দিয়ে শোনো নইলে মা আবার রেগে যাবে কিন্তু!
মায়ের চোখের জল আর বাঁধলো না। মায়ের কানে হেডফোনটা লাগালেন তিন্নী।
— ঠাম্মি, একটা আমার কানে থাকবে! আমিও শুনবো!
ঠাকুমা নাতিনী মিলে শুরু হলো মহিষাসুরমর্দ্দিনী শোনা। মা তিন্নির মাথায় হাত বুলিয়ে মনে মনে বললেন, — বড় হয়ে আজকের দিনটা ভুলে যেও না দাদিভাই।
তিন্নি বললো - কিন্তু দাদু কিভাবে শুনবে???