Become a PUBLISHED AUTHOR at just 1999/- INR!! Limited Period Offer
Become a PUBLISHED AUTHOR at just 1999/- INR!! Limited Period Offer

Gopa Ghosh

Tragedy Inspirational

5.0  

Gopa Ghosh

Tragedy Inspirational

গোলাপ চারা

গোলাপ চারা

3 mins
1.0K


ট্রান্সফারের কথা শুনে মা কান্না ভেজা গলায় বললেন

"বাবু তুই অন্য চাকরি দেখ, কাশ্মীরে পোস্টিং আগে জানলে তোকে কিছুতেই চাকরি টা তে জয়েন করতে দিতাম না"

মায়ের কষ্ট আমি বুঝি তাও বললাম

"মা তোমার মত যদি আমাদের দেশের সব মা তার সন্তানদের কোলের মধ্যে রেখে দিতে চায় তাহলে ভেবেছ দেশের কি অবস্থা হবে?, আমি দেশের সৈনিক তাই যেখানেই পোস্টিং হোক আমাকে দেশকে রক্ষা করতে যেতেই হবে"

এতক্ষন আমার বোন রুবি সব শুনছিল। এবার বলে উঠলো

"কত দিন চাকরি করার পর তোর আবার টান্সফার হবে দাদা?"

"সেটা এখনই বলতে পারব না, আর তোকে এত দাদার জন্য টেনশন করতে হবে না তোর দাদার কিচ্ছু হবে না"

আমি বোনের চিবুকটা ধরে আদর করে বললাম।

কাশ্মীরে পোস্টিং হয়েই বুঝলাম ওখানের আবহাওয়া বেশ গরম। বিশেষ করে আমাদের জন্য প্রতি পদে পদে বিপদ। ভাবলাম যদি মারা যাই তাহলে আমার প্রাণটা দেশের জন্যই উৎসর্গ করা হবে আর যদি বেঁচে থাকি তাহলে সারা জীবন দেশের সেবা করার সুযোগ পাবো। এটা চিন্তা করতেই মনটা কেমন ভালো হয়ে গেল।

এই নিয়ে প্রায় তিন দিন হল মেয়েটিকে এভাবে এলাকায় ঘুরতে বারণ করেছি কিন্তু বাচ্চা মেয়েটি কোন কথার উত্তর না দিয়ে ছুটে চলে গেছে। বছর ছয় কি সাত বছর বয়স। কাশ্মীরিদের এমনিতেই দেখতে খুব সুন্দর হয়, মেয়েটিও তার ব্যতিক্রম নয়। যেন একটি ফুটন্ত গোলাপ। আর একটা জিনিস খুব লক্ষ্য করেছিলাম মেয়েট আমার দিকে দূর থেকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকত। ভাবতাম এর বাড়ির লোক কি করে এভাবে এই অবস্থার মধ্যে একে রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে দেয় ?যেহেতু ওই এলাকাটা ঘুরে বেড়ানো য় বিধিনিষেধ দেওয়া ছিল। একদিন মেয়েটির খুব কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম হিন্দিতে সে কোথায় থাকে, মনে হল কিছুই বুঝলো না। ভাবলেশহীন মুখে আমার দিকে তাকিয়ে থাকল। পরে পান্ডে জির কাছে জেনেছিলাম ওই মেয়েটির নাম রোজি। ওর বাড়ি ওখান থেকে একটু দূরে বাবা মা কেউ নেই কাকা আর কাকিমার কাছে মানুষ হচ্ছে। তবে সবচেয়ে কষ্ট লাগলো এটা শুনে যে রোজি জন্ম থেকেই কথা বলতে পারে না। তখন বুঝলাম তাই ও কোন কথার উত্তর দিতে পারেনা।

তবে কথা না বলতে পারলেও আমার সাথে ইশারায় ও অনেক কিছু বুঝিয়ে দিত। পান্ডে জি আমাদের এই ভাব দেখে বলতো

রোজি আগের জন্মে হয়তো আমার মেয়ে ছিল। তবে পরজন্মে তেমন বিশ্বাসী না হলেও পান্ডে জির কথা শুনে কেমন বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হতো।

এর কিছুদিন পরেই আমার ট্রান্সফারের অর্ডার এলো। সব গোছগাছ করে অপেক্ষা করছিলাম কখন রোজি আসবে। সেদিন আমি চলে যাব শুনেই ও আর দাঁড়ালো না। ঠিক বেরোনোর মুখে দেখি রোজী দাঁড়িয়ে।

হাতে একটা গোলাপের চারা। হাতটা বাড়িয়ে আমার হাতে দিল। মুখটা খুব বিষন্ন দেখাচ্ছিলো রোজির। আমার চোখটা ও ঝাপসা হয়ে এসেছিল। আমি কিছু টাকা বের করে ওকে দিতে যেতেই ঘাড় টা নেরে তৎক্ষণাৎ ওখান থেকে চলে গেল। আমি গোলাপের চারা টা খুব যত্ন করে ব্যাগে রাখলাম।

বাড়িতে ফিরে ওই গোলাপের চারা টা একটা বেদি করে বসালাম। রোজির দেওয়া গোলাপ গাছ ভরে গেল ফুলে ফুলে। আজ প্রায় দু'বছর হল অবসর নিয়েছি । ওই গোলাপের বেদীতে আমি

প্রতি বছর নতুন গোলাপের চারা লাগাই আর সেই ফুটন্ত গোলাপ গুলো আমাকে মনে করিয়ে দেয় আমার জীবনের সেরা প্রাপ্তির কথা আর অবশ্যই রোজীর কথা।


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Tragedy