ত্রিভুজ ( পর্ব -৬ )
ত্রিভুজ ( পর্ব -৬ )
রাতের খাওয়া দাওয়া সেরে যে যার ঘরে চলে গেল। প্রদ্যুত বিশালকে পৌঁছাতে গেল গেস্ট হাউসে। নুপুর তার রুমে চলে গেল। নুপুর খাবার টেবিলেই বুঝতে পেরেছে যে এভাবে বিশালকে দূরে সরানো যাবেনা। কারণ প্রদ্যুত যখন একবার ঠিক করেছে বিশালকে সুস্থ করে ছারবে তখন ও যা যা প্রয়োজন সবটাই করবে কিন্তু বিশাল যদি সুস্থ হয়ে ওঠে আর যদি অতীতের সব কথা প্রদ্যুতকে বলে দেয় তখন কি হবে। নুপুর এতকিছুতো জানতোইনা সে ভেবেছিল বিশাল তার সাথে বেইমানি করেছে আর সেই রাগে সে বিয়ে করেছে প্রদ্যুতকে। একটা ভালো পরিবার পেয়েছে নুপুর, প্রদ্যুত একটু জেদি কিন্তু মানুষ হিসেবেতো খুবই ভালো। এই পরিবারটা এখন নুপুরের নুপুর কোনভাবেই এই পরিবারটাকে হারাতে চায়না। চম্পা বাইরে থেকে আওয়াজ দেয় বৌদিমনি আসবো? নুপুর নিজেকে সংযত করে বলে আয় কিছু বলবি? বৌদিমনি বাসনপত্র মেজেদিয়েছি কাল সকালে আমায় একটু ছুটি দিতে হবে। এই ঠান্ডার মধ্যে রাতে বাসনপত্র ধুতে গেলি কেন? আসলে আমি ভোরে বেরাবো। কোথায় যাবি? বাবার শরীরটা খারাপ হসপিটালে দেখাতে যাবে মাতো পারেনা ভোরবেলা বেরলে নটার মধ্যে হসপিটালে গিয়ে টিকিট করতে পারবো তারপর বাবাকে বাড়িতে রেখে বিকালে ফিরে আসবো। নুপুর বলে অত পাকামির দরকার নেই এই ঠান্ডায় কাল রাতে আর আসতে হবেনা পরশু বেলায় বেলায় চলে আশিস। তোমার একার উপরে চাপ হয়ে যাবেতো বৌদি মনি। নুপুর বলে কিছু হবেনা মা আছেন ভুইদা আছেন সব সামলে নিতে পারবো যা এখন শুয়ে পর। চম্পা নুপুরকে ধন্যবাদ দিয়ে চলে যায় কিছুক্ষন পর প্রদ্যুত ফিরে আসে।
নুপুর আয়নার সামনে বসে সাজগোছ করছে পরনে একটা পাতলা নাইট গ্রাউন্ড। প্রদ্যুত ঘরে ঢুকেই বলে এই ঠান্ডার মধ্যে একটা পাতলা গ্রাউন্ভ পড়ে বসে আছো ঠান্ডা লেগে গেলে কি হবে। নুপুর ছোট্ট করে বলে কি আর হবে তুমিতো রয়েছ। সিঙ্গার সেরে প্রদ্যুতের কাছে এগিয়ে আসে নুপুর। বিছানায় প্রদ্যুতকে ঠেলেদিয়ে নিজে পাশে গিয়ে বসে। প্রদ্যুত বলে তোমার ইন্টেন্শন ঠিক দেখছিনা পাগলির হলো কি? নুপুর বলে এত সুন্দর শীতের রাত পাশে স্বামীকে পেলে কেউ ছাড়ে কতদিন পর রাতে তুমি বাড়িতে রয়েছ বলো। কি করি বলতো এমন একটা প্রফেশন নিজের স্ত্রীকে যে দুই দন্ড ভালোভাবে দেখবো সে ভাগ্য আর কোথায়? আজ যখন আছো তখন ভালোভাবে দেখে নাও। প্রদ্যুত বলে দরজাটা দেবেতো নাকি না সকলকে দেখাবে। নুপুর বলে ধুস ভালোলাগেনা সময় নষ্ট করা যায়। প্রদ্যুত গিয়ে দরজা দিয়ে দেয় বিছানার কাছে আসতেই কাছে টেনে নেয় নুপুরের, ব্লাঙ্কেটের নিচে চাপাপড়ে তায় দুটো দেহ। হাত বাড়িয়ে লাইট নিভিয়ে দেয় নুপুর।
আজকের রাতটা বিশেষ হলেও শান্তির ঘুম আসেনা নুপুরের দেহের আগুন নিভলেও মনের আগুন দাও দাও করে জলতে থাকে তার। কিছুতেই প্রদ্যুতকে হারাতে চায়না সে হারাতে চায়না এই পরিবারকে তাই মনে মনে চিন্তা করে বাড়িতে বিশালের দেখাশুনার দ্বায়ীত্বটা নিজের হাতে নেবে নুপুর, প্রদ্যুত যতই চেষ্টা করুক ওর অতীত ফিরিয়ে দেবার নুপুর কিছুতেই তাকে সুস্থ হতে দেবেনা।
চলতে থাকবে..........
