সুতো কাটা ঘুড়ি
সুতো কাটা ঘুড়ি
বিকালের আকাশে রঙীন ঘুড়িদের ভিড় , ছোট্ট বেলায় ফিরেয়ে নিয়ে গেছিলো , আমাকে । একান্নবর্তী পরিবার রান্না পূজা , ভাই বোনদের সাথে ঘুড়ি ওড়ানো মজা মিস্ করলাম। ওই আকাশের মধ্য একা উড়ার স্বপ্ন নিয়ে গ্রামে থাকে শহরে পারি দেওয়া। কংক্রিটের শহরে আপন শুধু একটা লাটাই। যার উপর বিশ্বাস করে হাওয়ার বিপরীতে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। উড়ছি নিজের মতো।
মোবাইল বতাম টিপে একটা কল করলাম। ঘুম জড়ানো কন্ঠে নিলু সংক্ষেপে বলল "বলো"।
আমি কাচুমাচু করে বললাম " আসতে আমার আজ একটু দেরি হবে। "
ও ভাবলেশ হীন বললো" ঠিক আছে "
আমি ফোন রাখবার অপেক্ষায় আছি। তখনই বললো ' কাল কোন কিছু রান্না হবে না কিন্তু মনে আছে তো।"
মুচকি হেসে ফোন রেখে বাজার থেকে একটু দরকষাকষি করে একটা ইংলিশ নিয়ে ছুটলাম বাড়িতে। বাড়ি বড়োরা বলেন দূর্গা পূজার পর ইলিশ আর স্বাদ থাকে না। আবার স্বাদ ফেরে শীতকালের পর। তাই সরস্বতীকে জোরা ইলিশ দিয়ে ইলিশ খাওয়া শুরু হয়।আর শেষ হয় এই রান্না পূজায়।
তবে আজ আমার জীবনের আরো একটা গুরুত্বপূর্ণ দিন। ভাদ্র মাসে বিয়ে হয়না। আমাদের আর তর সইছিল না তাই ১লা আশ্বিন আমরা বিয়ে করছিলাম।
দরজায় কলিং বেল দেবার আগেই দেখলাম দরজাটা খোলাই রয়েছে। ঘরে ঢুকতেই বেড রুমে থেকে আমার চেনা হাসির আওয়াজ। একটু এগাতে, কানে এলো নীলু কন্ঠস্বর। অদুরে স্বরে কাকে জেনো বলছে" অতো তাড়া কেন ওসব কড়ার জন্য, এসো না একটু গল্প করি। গাধাটা ফোন করেছিলো। ওর আসতে রাত হবে আজ।"
জানালার দিকে তাকিয়ে দেখলাম সম্পর্কের সুতো ছিঁড়ে,একটা ঘুড়ি ভোকাট্টা হয়ে হারিয়ে যাচ্ছে , কংক্রিটের এই শহরের ভিড়ে।
