সহ্যরূপেণ সংস্থিতা (ধারাবাহিক) ৪
সহ্যরূপেণ সংস্থিতা (ধারাবাহিক) ৪
৪
ঘড়ি বলছে সময় রাত সাড়ে নটা, তিলোত্তমা শহর কোলকাতায় সবে সন্ধ্যা বলা যায়, এদিকওদিক তাকিয়ে পারমিতা নিজের ব্যাগটা দুহাতে জড়িয়ে বুকের সামনে চেপে ধরলো। আর দেখলো সভয়ে ঠিক রাস্তার ওপারে ক'টা বখাটে ছোকরাকে, দাঁড়িয়ে তারা পারমিতার উদ্দেশ্যে কিছু মন্তব্য ছুঁড়তে শুরু করেছে। ভেসে আসছে অশ্লীলতায় মাখামাখি বহু শব্দবন্ধ... সঙ্গে বিকৃত শীৎকার।
পারমিতা ট্যাক্সিটা থামিয়ে ফেলেছে হাত দেখিয়ে, দ্রুত উঠে বসে ড্রাইভারকে গন্তব্য বুঝিয়ে বসে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো। তারপরই সিটে পিঠ ঠেকিয়ে দুরন্ত আধুনিকা কেতাদুরস্ত ডাকাবুকো টিভি অ্যাঙ্কর পারমিতা দত্তর অস্ফুট স্বগতোক্তি, "ইস্, বাবা, এদের সাথে মুখ নাড়ানোর মতো বোকামি করার কোনও মানেই হয় না, যত্তসব! ওসব প্রতিবাদ টতিবাদের অযথা বাড়াবাড়িতে বেমক্কা হয়রানিই ডেকে আনা শুধুশুধু। হুহ্, গণপ্রজাতান্ত্রিক দেশে নারীদের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা... রাইট টু ইকুয়ালিটি, গণতান্ত্রিক চেতনাবৃদ্ধি... ওসব বড়সড় লম্বাচওড়া কথাবার্তা ঐ ক্যামেরার ওপাশে বসেই বলার কথা। চ্যানেলের টিআরপি বাড়াতে। মাথায় থাক ২৬শে জানুয়ারি, আর মাথায় থাক জনগণ প্রজাতন্ত্র দিবসের অঙ্গীকার! আপনি বাঁচলে তবে না বাপের নাম, থুড়ি দেশের নাম!"
"যা নারী সর্বভূতেষু সহ্যরূপেণ সংস্থিতা..." পদে পদে বিপদে আপদে শুধু আরও একবার।