শতবর্ষ পরে পরে।
শতবর্ষ পরে পরে।


শতাব্দী পরে তুমি আসো ফিরে ফিরে। ধূমকেতুর মতো তোমার কি কোন নির্দিষ্ট পথ আছে যেটা দিয়ে শতবর্ষ পরে আসো পৃথিবীতে? তুমি এসেছিলে ১৭২০, ১৮২০, ১৯২০; আজ আবার এসেছো ২০২০। কুড়ির সাথেই বা তোমার এতো সখ্যতা কেন বুঝি না?
তুমি আসো কখনো চোখের আড়ালে থেকে, কখনো বা দৃষ্টিকটু দৃষ্টিক্ষেত্রে। জীবকূলকে ধ্বংস করার একমাত্র লক্ষ্য নিয়ে। এতো জীবের রক্তপান করে কি পাও তুমি?
আমরা ছিলাম কতো আনন্দে মেতে আসছে নতুন বছর দুহাজার কুড়ি। বরণ করেছি তোমায় নিয়ম মেনে ঘটা করে। তবু, তুমি দিলে আমাদের সব আশাতে জল ঢেলে। এক ভয়ংকর ভাইরাস সাথে নিয়ে ঢুকে পরলে পৃথিবী চত্বরে। তাকে দেখা যায় না, নিয়ন্ত্রণ করা যায় না, সংক্রমণ আটকানো যায় না।
পৃথিবী জুরে চলে শুধু একটাই মিছিল, মৃত্যুর মহামিছিল। কি দোষ ছিল মানুষ গুলোর বলো তো? মৃত্যুর পরেও পেল না তারা সঠিক সৎকার। আত্মীয়-স্বজন ভয় পায় ছুঁতে পরম আত্মীয়ের শবদেহ।
মানুষ ভয়ে সন্ত্রস্ত, নিজের গৃহে আবদ্ধ। লৌকিকতা, সামাজিতা সব বন্ধ। শিক্ষা, শিল্প, কৃষি সব দিকের উন্নতি স্তব্ধ। কোটি কোটি মানুষ কর্মহীন। তাদের দুবেলা অন্ন জোটানোই এখন মহা মুশকিল।
এতেও কিন্তু শান্ত হওনি তুমি কুড়ির মহামারি। তুমি নিয়ে আসছো মাঝে মাঝে বন্যা, ঝড়, ভূমিকম্প। পঙ্গপাল ছেড়ে খাইয়ে দিলে মানুষের কষ্টার্জিত ক্ষেত ফসল। নিরুপায় মানুষের এখন কপাল চাপড়ানো ছাড়া আর কোন উপায় নাই।
ইতিহাসের বইতে পড়েছিলাম মহামারি তোমার রূপ ভয়ঙ্কর। জীবনে প্রথম সাক্ষাতে বুঝলাম তোমার রূপ অতি কুৎসিত, নিষ্ঠুর ভয়ঙ্কর। শতবর্ষ পরে পরে তোমার আসার রাস্তাটা চিনতে পারলে করবো আমরা অবরোধ, ঢুকতে দেবো না তোমায় পৃথিবী চত্বরে। এটাই আমার মানব জাতির হয়ে আমার প্রতিজ্ঞা।