সবটাই আসারে
সবটাই আসারে
নিউ টাউন পস এলাকা। হালকা বৃষ্টিতে পুকুর না হোক, ছোটো খালে পরিণত হয় রাস্তা গুলো। প্রতিটা মোড় একই রকম। ভালো ভাবে ওলি-গোলি না চিনলে, রাস্তা ভুল হওয়া অনিবার্য। তৌফিকের সারা শরীরে খুব ব্যাথা। গলার কাছটা রক্ত জমাট হয়ে ফুলে আছে। বৃষ্টির জল আর কাদার লেগে ট্রাউজারের রংটাই পাল্টে গেছে। দেখে বোঝার উপায় নেই যে নতুন ট্রাউজার।
পকেট থেকে চাবিটা বের করে কিন্তু ফ্ল্যাটের সামনে এসে সেটাকে আবার পকেটে রেখে দেয়। নিজের ফ্ল্যাটের দরজাটা এমন হাট করে খোলা দেখে অবাক হয় তৌফিক। ভিতর থেকে হাফসার খুব উচ্চস্বরে কথা শুনতে পায়। যদিও সবটা বুঝতে পারেনা। তবে এইটুকু সে বুঝতে পারছে যে, হাফসা খুব খুশি হয়ে কাউকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে। তার ফ্ল্যাটেও ডাকছে। তৌফিক ভাবে, হাফসা নিশ্চয়ই তার আব্বুর বাড়ির কাউকে দাওয়াতে নিমন্ত্রণ করছে। তাই তারাতারি চলে এসেছে আজ অফিস থেকে। তৌফিক আর অত কান দেয়না সেদিকে। সোজা বাথরুমে চলে যায়। কল খুলতে যায় এমন সময় তৃতীয় ব্যক্তির উপস্থিতি অনুভুতি হয় তার। দ্বিতীয় কোনো পুরুষের সাথে হাফসা হেসে-হেসে কথা বলছে। তৌফিকের ফ্রেশ হওয়া মাথায় ওঠে। সে বাথরুম থেকে বেড়িয়ে সোজা বেডরেমের দিকে যায়। তারপর দরজায় এসে থোমকে দাঁড়ায়। অপর একজন পুরুষকে আলিঙ্গন করেছে হাফসা। সেও তাকে আলিঙ্গন করে রেখেছে। তৌফিক কিছু বলতে গিয়েও থেমে যায়। অপর পুরুষটা বলে ওঠে "তৌফিক কাফেরের মতো কাজ করেছে, আমি প্রথম দিন থেকেই এটা মেনে নিতে পারিনি"। তৌফিকের চোখ চরখ হয়ে যায় যখন তারা ফ্রেঞ্চ কিস করে। তৌফিক বাধা দিতে তাদের সামনে যায় আর হাফসার প্রেমিকে দেখে চিন্তে পারে। তার নাম তৌসিফ। তৌফিকের জমজ ভাই। তখনই তৌসিফ আবার বলে ওঠে "তবে এতক্ষণে ও দোজগে পৌঁছে গেছে। জল, কাদায় পরে আর উঠতেই পারছিল না নপুংসকটা। তারপর ওর গলাটা আরাআরি ভাবে চিরে দিয়েছি। ও আর কোনদিন উঠতে পারবে না"। হাফসা বলে "আমরা কোনো হারাম করিনি তৌসিফ। ও এটারই যোগ্য ছিল"। তৌফিকের নামে ওরা যে কথাগুলো বলছিল, সেই কথাগুলো তৌফিক সবই শুনছিলো। সাথে এটাও বুঝতে পারে সে, নিজের অক্ষমতার জন্যই তার আজ এই পরিণতি। তৌফিক আর ভাবতে পারেনা। হাত দিয়ে নিজের মুখ ঢেকে বসে পরে খাটে। তারা তারই পাসে লম্বালম্বি ভাবে শুয়ে পরেছে। তাদের মুখের হাসিই বলে দিচ্ছে, আজ তারা খুব খুশি। তৌফিক সেই ঘরে চতুর্থ একজনের উপস্থিতি আবিষ্কার করে। এই নতুন লোকটাকেও সম্ভবত তারা দেখতে পারছেনা। তারা নিজেদের খেয়ালেই ব্যাস্ত। কিন্ত তাদের সামনেই ঘোটে যায় আর একটি ঘটনা। এই নতুন লোকটা তৌফিককে টানতে টানতে বের করে নিয়ে যায় ঘর থেকে। তৌফিকের শক্তি নেই তাকে থামানোর। তৌসিফ-হাফসারা এই দৃশ্য দেখতেও পায়না। তৌফিক জিজ্ঞেস করে, তার সাথে কেনো এরকম আচরণ করা হচ্ছে। সংখেপে উত্তর দেয় লোকটা "হারামের শাস্তি"। এই বলে তাকে টেনে নিয়ে, দু-হাতে মাথার উপর তুলে ছুঁরে ফেলে বরাহদলের মাঝে।

