স্বপ্ন 🌻♥
স্বপ্ন 🌻♥
- এখন আর কিছু মাথাতেই আসছে না, কিই বা লিখি। মাথার আর কি দোষ? এত চাপ নিয়ে স্বতস্ফূর্ত ভাবনারই সময় নেই।
ওপারে ফোনের রিংটোন বেজে উঠলো........
- হ্যালো, কি করছিস?
- এই একটু লেখালেখির চেষ্টা। কিন্তু কিছুতেই ......
- তুই এখনও এই সব নিয়ে পড়ে আছিস ? কিই বা হবে এইসব করে? ক'টাকা পাস এসব লিখে? সেই তো টিউশনি করতে হয় ছুটে দৌড়ে।
- লিখে টাকা আনবো ঘরে এমন কথা তো কোনোদিনই ভাবিনি। তবে অনেকেই অবশ্য বলে লেখালেখিতে জোর দিতে, এটাকে নিয়ে অন্যরকম কিছু একটা ভাবতে। তবে কি বলতো আমাদের মতো নিম্নবিত্ত পরিবারে এসবকে শখের জায়গাতেও সম্মান দিয়ে ঠাঁই দিতে পারি না। ওসবের কদর করলে দায়িত্ব পূরণ হয় না। দায়িত্বের ভারে আমরা সবাই জর্জরিত।
- এতো জ্ঞান যখন তখন কাজের কাজ করলেই পারিস।
- কোন কাজটা করিনা বল? আমি কি রোজগার করিনা? বাবার টাকায় ফুটানি মারি? কোনোদিনও আমায় দেখে মনে হয়েছে পাপা কী পরী? নাকি নেকুপুষু হয়ে বয়ফ্রেন্ডকে বলেছি , "বেবি, আই ওয়ানা গো ফর্ অ্যা লঙ ড্রাইভ।"
- তা বলিসনা!তবে একটা সরকারি চাকরির জীবনই আলাদা, সে কেরানি হলেও!
- চেষ্টা সে জায়গাতেও আছে। আমি যে নিজে কিছু লিখতে পারি সেটাই আমি আগে জানতাম না, হঠাৎই নিজেকে নিজে আবিষ্কার করেছি যেন! সাহিত্যের প্রতি ভালোবাসাটা বরাবর ছিল, নতুন নতুন উপন্যাস পড়তে ভালো লাগে, তবে বাড়িতে গল্পের বই হাতে দেখলে আর রক্ষে নেই।
- আমিও তো তাই বলছি। এসব ছেড়ে পড়াশোনায় মন দে। ঐ বই পড়ে , লেখালেখি করে কাজ নেই। তুই কি আর লেখিকা হবি?
- হাসালি! লেখিকা? তাও কিনা আমি? শিল্প-সংস্কৃতি নিয়ে জীবনে সফল হওয়া যায় না, সমাজ শিখিয়েছে!
এভাবেই কত শত স্বপ্ন আত্মবলিদান দেয় সমাজের তাগিদে। যে মেয়েটা ভালো নাচে কিংবা যেই ছেলেটা ভালো গান করে সেও জীবনে সফল হতে পারতো শুধু তোমরা সাহস জোগালে। মিত্র পাড়ার রাহুল মিত্রও আজ সাইকিয়াট্রিস্টের কাছে যেতও না যদি সমাজকে পাশে পেতো। সবই সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি, যে দৃষ্টিভঙ্গিতে স্রোতে ভাসতে শুধুই জীবনহানি।
ইচ্ছেঘুড়ি উড়তে বাধা, জীবন গলির প্রতিটি মোড়ে ।
কাটছে সুতো দিকবিদিকে, তুবড়ি ফাটে আকাশ জুড়ে।