Alpana Mitra

Abstract

2  

Alpana Mitra

Abstract

সাইকেল

সাইকেল

2 mins
875


আর বাপকে দেখো! এই বয়েসে মেয়েকে একটা ছেলেদের সাইকেল কিনে দিলো! ......বলি! পনেরো তো পার হলো, এখনও ধিঙির মতো ছেলেদের মত সারাদিন টো টো করবি! মাসিকের দিনেও ঘরে থাকিস না..... আমি তো এই সময় ঘর থেকেই বেরোতাম না.... ......তোমরা তো ন্যাকড়া ব্যবহার করতে! তাই বেরোতে না। এখন তো প্যাডের যুগ! তাই নো চিন্তা ডু ফুর্তি। ...... হ্যাঁ, রে চিনি তোর মুখে কি কিছু আটকায় না! চিৎকার করে এ সব বলছিস মা'কে! ........ কেনো দিদা! যা সত্যি তাই বলেছি। মা কেনো, তুমিই বলনা.... বিয়ের আগে তুমি দাদুকে দেখো নি। তাই তুমি মা আর বাবাকে বিয়ের আগে কথা বলতে দিয়েছিলে। পরিস্থিতি গো পরিস্থিতি। সব পালটায় সময়ের সাথে সাথে। ......মা চুপ করো। ওর সাথে মুখ লাগিও না! এসব ওর বাপের আস্কারাতেই...... ....... আমি আবার কি করলাম? ..... রমেশবাবাজীবন এবার মেয়ের রাশ ধরো....! সে তো..... ....... অমনি বাবাকে লাগানো হচ্ছে! না গো বাবা আমি কিছু করিনি! মা'ই বকছিলো আমায়! .....বিনু কি করেছে চিনি! ..... কিছু করেনি তোমার মেয়ে! আমি তো পাগল, তাই বক বক করি। একদিন বুঝবে! চিনির মাধ্যমিক পরীক্ষা। পড়াশোনা করতে থাকে। রমেশ সিলিং ফ্যান ঘুরছে দেখেও মেয়ের দিকে টেবিল ফ্যানটা চালিয়ে দেয়। ....... আদিখ্যেতা! যেন ওনার মেয়েই পরীক্ষা দিচ্ছে! ......আহঃ বিনু চুপ করো তো! চিনির পরীক্ষা হয়ে যাক, তারপর দেখছি! মেয়েকে রোজ সাইকেল করে নিয়ে যায় পরীক্ষার হলে। এরপর পড়াতে গেলে তো অনেক টাকা লাগবে। তাই কটাদিন অফিস থেকে ছুটি নিয়েছে। শেষ পরীক্ষার দিন চিনি বাবাকে অনেক করে বললো... ....... বাবা তোমায় আজ যেতে হবে না! আজ আমিই নিজেই সাইকেল চালিয়ে যাবো! রমেশ বিনুর কাছে শুনেছে.... মেয়ের নাকি কাল শরীর খারাপ হয়েছে, এ সময় মেয়েটা সাইকেলে যাবে!..... ...... না না! আমিই নিয়ে যাবো! বিনুও চোখ ইশারায় স্বামীকে তাই বোঝালো । চিনি পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে দেখে সমরেশকাকু, পাড়ার বাবুলদা দাঁড়িয়ে। ....... কাকু তোমার কে পরীক্ষা দিচ্ছে গো! ...... চিনি বাবুলের বাইকে ওঠ, আমি তোর পিছনে উঠছি! ...... কেন বাবা! আসেনি? ...... তোর বাবার খুব জ্বর। তাই আমরা যাচ্ছিলাম এ পথ দিয়ে তোকে নিয়ে আসব বলেছি তোর বাবাকে। সে দিন মেয়েকে দিয়ে ফিরবার পথে ট্রাকের ধাক্কায় এক্সিডেন্টে রমেশ তার ডান পা হারায়। চিনি রোজ সাইকেলে বাবাকে অফিসের সময় স্টেশনে দিয়ে তার পর স্কুলে যায়। বিনু মেয়ের জন্য নিজে গিয়ে প্যাড কিনে আনে। যে সাইকেলটা ছুড়ে ফেলে দিয়ে ছিলো...... সেটাকে রোজ যত্ন করে। চিনি ভালোভাবে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করার পর বাবাকে বসিয়ে দিয়ে, বাবার অফিসে কাজটা অনেক তদারকি করে পেলো। চিনি আজও সেই পনেরো বছরের মতো উচ্ছল আর আনন্দেই সংসারের সব দায়িত্ব পালন করছে। .....বিনু, তুমি বলেছিলে না! 'একদিন বুঝবে'..... আজ বুঝতে পেরেছো আমাদের চিনিকে!


Rate this content
Log in

Similar bengali story from Abstract