The Stamp Paper Scam, Real Story by Jayant Tinaikar, on Telgi's takedown & unveiling the scam of ₹30,000 Cr. READ NOW
The Stamp Paper Scam, Real Story by Jayant Tinaikar, on Telgi's takedown & unveiling the scam of ₹30,000 Cr. READ NOW

Drishan Banerjee

Crime Thriller

2  

Drishan Banerjee

Crime Thriller

রহস্য যখন সিংহ পাহাড়ে ৬

রহস্য যখন সিংহ পাহাড়ে ৬

5 mins
9.1K


একটু পরেই ওদের একজন পিয়মের গাড়ি টা চালিয়ে ওদের জঙ্গলের বাইরে মেইন রোডে তুলে দেয়। পিয়ম বলে -" এখন কি করবো ? মিশাই যে আমাদের বাঁচাতে নিজে ফেঁসে গেল। ও আমায় ভীষণ ভাল বাসে জানি। তাই বলে ওর বিনিময়ে এভাবে মুক্তি!!!"

-"আপাতত বাড়ি ফিরে ওকে ফোন করতে হবে। এখনো তিন ঘণ্টা লাগবে মনে হচ্ছে। আমাদের সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরার উপর মিশাই এর পরের চাল নির্ভর করছে।" আলোক বলে।

-"আমাকে দয়া করে কেউ একটু খুলে বলবে কি চলছে? আমি যে কিছুই বুঝতে পারছি না। কি ডাইরি কিসের ম্যাপ? আবদুল আর মিশাইয়ের কি সম্পর্ক?লোক গুলো কারা .........?" সাহানা বলে ওঠে।

আলোক গাড়ির বাইরে এসে দাঁড়ায়, সাহানাকে শর্টে ঘটনাটা বলে। বলে -" গাড়িতে লুকানো স্পিকার থাকতে পারে, ওখানে কেউ কেউ বাংলা বোঝে। তাই এ নিয়ে গাড়িতে কোনো আলোচনা নয়। প্রয়োজনে হিন্দি বলা যেতে পারে।"

-"কিন্তু মিশাই কে এভাবে ছেড়ে আমরা চলে যেতে পারি না।" সাহানা বলে।

-"পিয়মের এখানে পুলিশের উপর মহল বা শাসক দলের সাথে সম্পর্ক কেমন?" আলোকের প্রশ্নে পিয়ম বলল -"পুলিশ কমিশনার ম‍্যজিষ্ট্রেট সবার সাথেই এনজিওর সুবাদে ভাল সম্পর্ক। কিন্তু পুলিশে খবর দেওয়া যাবে না। ওরা অনেক হিংস্র। আবদুল কে কি ভাবে মেরেছিল মনে আছে?"

-"মিশাইকে মারবে না, কারণ ও বলেছে ম্যাপ নেই, যা আছে ওর মাথায় আছে। ওই একমাত্র চেনে জায়গাটা। এখন আমরা বাড়ি না গিয়ে কেনিমা চলে যাই। কেনিমা জেলায় মোয়া নদীর ধার থেকেই ওদের অভিযান শুরু হবে। মিশাই ওখান থেকেই শুরু করবে। আর আনঅফিসিয়ালি তোমার পুলিশ বন্ধুকে সব জানাও।" আলোক বলে।

প্রায় রাত নটায় ওরা কেনিমা পৌঁছে মিশাইকে ফোন করে জানায় সব ঠিক আছে।ওরা নিরাপদ। কেনিমায় একটা মোটামুটি বড় হোটেলে উঠেছিল ওরা। রাতেই পিয়মের সাহায্যে পুলিশের এক বড় অফিসারকে একটা বুথ থেকে ফোন করে পুরো ঘটনাটা জানিয়ে রাখে ওরা। নিজেদের ফোনে কথা বলতে সাহস পাচ্ছিল না, যদি লাইন ট‍্যাপ হয়। অফিসার সকালেই যোগাযোগ করবে বলেছিল।

সাহানা এতক্ষণে পুরো ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছে। ও বলল -"এই দলটা ধরা না পড়লে মিশাই কে ছাড়িয়ে এনেও লাভ হবে না, কারণ ওরা আবার ওকে তুলে নেবে। ওর প্রাণসংশয় হতে পারে সেক্ষেত্রে।"

-"দলটাকে ধরতেই হবে। এ দেশের নিয়ম অনুসারে এভাবে কেউ অভিযানে যেতে পারে না। সরকারের অনুমতি ছাড়া এ দেশের সম্পদ কেউ এভাবে দখল করতে পারবে না।" পিয়ম বলে।

হঠাৎ দরজায় কেউ বেল দেয়। রুম সার্ভিস ভেবে আলোক দরজা খুলেই দেখে জো, আবদুলের পার্টনার। ও ভাঙ্গা বাংলায় বলে এই হোটেলটা ওদের। ও একটু আগেই শুনেছে ডাক্তার তার বন্ধুদের নিয়ে এখানে এসেছে, তাই দেখতে এসেছে অসুবিধা কিছু হচ্ছে কিনা। আলোক বলে যে সব ঠিক আছে। জো জানতে চায় তারা কোথায় কোথায় ঘুরবে যদি বলে, সে গাইডের ব্যবস্থা করে দেবে। বাংলা জানা গাইড। আলোক সবার দিকে একবার তাকিয়ে বলে একটু ভেবে পরদিন জানাবে। সাহানার মনে হল জো খুশি হয় নি এ উত্তরে। ও চলে যেতেই পিয়মের ফোনে আবার একটা ফোন আসে। সেই মৃদুভাষী আতিফের ফোন। আবার জানতে চায় ম্যাপ বা কোনো কিছু পাওয়া গেল কিনা । পিয়ম না বলতেই সেই ব‍্যাক্তি বলে -"তাহলে তোমরা কিসের খোঁজে ঘুরছ?"পিয়ম বলে -"আমার বন্ধুদের নিয়ে বেড়াতে এসেছি। এছাড়া কিছুই জানি না। "

ফোনের ও প্রান্ত থেকে হাল্কা হাসির আওয়াজ ভেসে আসে। বলে -"পিটার এর দল তোমাদের ধরে রেখে এমনি এমনি ছেড়ে দিল!! ওদের হয়ে তোমরা হীরার খনি খুঁজতে যাচ্ছ না বলছ!! ও-কে ,পরে দেখা হবে। আমরা সবাই একটাই পথে এগোচ্ছি।" ফোনটা কেটে যায়।

 পিয়ম আলোকদের সব বলে৷বলে -"এ তো আরেকটা দল। ওরা যে আমাদের ধরেছিল সে খবর ও রাখে দেখছি!! তবে মিশাই এর খবর জানে না। হয়তো আমাদের ওয়াচ করছে তাই দেখেছে। ....."

আলোক চিন্তিত মুখে বাইরে তাকিয়ে থাকে। বলে -" মিশাই চোদ্দ বছর আগে ও পথে গেছিল। জানি না ওর কি মনে আছে। অবশ‍্য মনে গেঁথে যেতেই পারে। তবে ওদের যদি কোনো ভুল পথে মিশাই নিয়ে যায়, ওরা ওকে মেরে দেবে। এখন পুলিশ কত তাড়াতাড়ি ওদের ধরতে পারে তার উপর সব নির্ভর করছে।"

সকালেই ঐ পুলিশ অফিসার মিঃ হুয়ান ফোনে জানায় যে ঐ ফরেস্ট বাংলোয় কাউকে পাওয়া যায় নি। সবাই আগেই পালিয়ে গেছিল। ওদের মোবাইল গুলোকে ট্রেক করে দেখা গেছে ওরা কেনিমা আসে নি। আরো এগিয়ে গেছে মোয়া নদীর ধারে।

 পিয়ম অন্য দলটার কথাও জানায় পুলিশকে। এক ঘণ্টা পর মিঃ হুয়ান জানায় এই ফোনটা পিয়মদের আশেপাশেই রয়েছে। এক ই এরিয়া দেখাচ্ছে।

সাহানা বলে -" তাহলে আমরা এখন কি করবো? কোথা থেকে শুরু করবো?"

-"আপাতত রেডি হয়ে ঘুরতে বের হই।ঘরে বসে থাকার কোনো কারণ নেই। হুয়ান সব ব্যবস্থা করে আসছে" আলোক বলে।

কিছুক্ষণ পরে ওরা ঘুরতে বেরিয়ে যায়। মোয়া নদীর ধারে প্লেন ড্রেসে মিঃ হুয়ান অপেক্ষা করছিল । আলোক ওদের সাথে কিছু প্ল্যান করে।

দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পর ওরা হোটেল ছেড়ে পথে নামে। প্লেন ড্রেসে হুয়ান কিছু সঙ্গী সহ ওদের পেছনেই রয়েছে। ওপর মহল থেকে পুরো অভিযান গোপন রাখতে বলেছে। যে কেউ দেখলে ভাববে এরাও একটা অনুসন্ধানকারী দল।

 ওরা এটাই চাইছিল যে ,শহরের বাইরে জঙ্গলে ওদের পিছনে অন্য দলটা পৌঁছালে, প্রথমে তাদের জেলে পুরতে হবে, সাথে মিশাই পিটারদের কোথায় নিয়ে গেল এ সব দেখতে হবে। কিন্তু মিঃ হুয়ান বলে, কেউ যতক্ষণ কোনো অপরাধ না করছে গ্ৰেফতার করা যাবে না। টুরিস্টের মতো যদি কেউ ঘুরে বেড়ায়,তাকে তো শুধু সন্দেহ কোরে গ্ৰেফতার করা যায় না। যদি কেউ সরকারের বিরুদ্ধে গিয়ে খোঁড়াখুঁড়ি করে বা জাতীয় সম্পদ অধিগ্রহণ করে তবেই তাকে গ্ৰেফতার করা যাবে। তবে পিটারের দল কে খুন এবং অপহরণের অভিযোগে গ্ৰেফতার করা যায়। মোয়া নদীর ওপারে কাঁচা পথ ধরে ওরা এগিয়ে চলে। প্রথম একটা আদিবাসী গ্ৰাম পার করার সময় জানতে পারে পিটাররা সেখানে রাত্রি বাস করেছিল। ঐ গ্ৰাম থেকেই তিনজন কুলি নিয়েছে মিশাই রা। রাত হয়ে যাওয়ায় ওরাও ওখানেই থেকে যায়। হুয়ান সব ব্যবস্থা করেই এসেছিল। সরকারী পরিচয় পত্র দেখাতেই ওরা ওদের জামাই আদরে অভ্যর্থনা করে। পিয়ম এ গ্ৰামে এক বছর আগে কাজ ক‍রে গেছে। অনেকেই ডাক্তার হিসাবে ওকে চেনে। ওদের জন্য রাতে কাসাভার ময়দার রুটি, মধু্‌,বনমোরগের ঝলসানো মাংসর ব্যবস্থা করেছিল গ্ৰামের লোক। হুয়ান কথায় কথায় জেনে নিয়েছে আগের দলটা নাকি শয়তানের পথে গেছে। আসলে ঐ পথে যারা যায়, খুব কম লোক ফেরে বলে গ্ৰামের লোক এ নাম দিয়েছে। গ্ৰামের শেষে বিস্তৃত তৃণভূমির শেষে গভীর বন, তার সীমান্তে আগুন পাহাড়, কোনো এক মৃত আগ্নেয় গিরি আছে সেখানে। তার আগে যারা যায় আর ফেরে না, এমন কথাই এখানে প্রচলিত। (চলবে)


Rate this content
Log in

More bengali story from Drishan Banerjee

Similar bengali story from Crime