পুনর্ভবা পর্ব :- ১৩
পুনর্ভবা পর্ব :- ১৩
রবিবারের এই সকাল যেন এক নতুন সকাল।
হ্যাঁ, সুলতা ও নিখিলেশ দুজনের কাছেই। যদিও দুজনের মধ্যে দুরত্ব কিছু মাইলের কিন্তু সীমানা বরাবর পুনর্ভবা নদী মনে করিয়ে দিচ্ছে, দুজন রয়েছে নদীর দুই পারে শুধু নয়, দুটো আলাদা
দেশে।
নিখিলেশ এর মনে সুলতার কাছে ফেরার আনন্দ।
লালমোহন গরুর গাড়িতে করে পৌঁছে দেবে ওদের দিনাজপুর। তারপর ঠাকুরগাঁও এর বাস ধরেই ওরা বাপ-বেটিতে পৌঁছে যাবে বীরগঞ্জ।
সকাল সকাল শঙ্করীর তৈরী লুচি আর আলুর ছেঁচকি টিফিন কৌটোয় সাথে নিয়ে নিয়েছে। দিনাজপুরে গিয়ে খেলেই হবে। আলুসেদ্ধ আর ঘী দিয়ে গরম গরম আতব চালের ফ্যানভাত না খাইয়ে ছাড়লেননা অনুপমা দেবী। ঠিক সেই ছোট্টবেলায় যেমন স্কুলে পাঠাবার সময় দু-ভাইকে পেটটি পুরে পঠাতেন ঠিক তেমনি জেদ করে খাইয়ে ছাড়লেন। অখিলেশ ও খেয়েছে একসাথে। ও অবশ্য দিনাজপুর থেকেই ফিরে আসবে।
ভোরবেলা পুকুরে জাল ফেলে একটা বড় সড় রুই মাছ রেখে আর সব জলে ছেড়ে দিয়েছে অখিল।
কাঁচা মাছ তো আর নিয়ে যাওয়া যায় না, অগত্যা
গীতার মা কেটেকুটে ভেজে গুছিয়ে দিয়েছে কিছু টুকরো। ফিরতে ফিরতে যদি দুপুর পেরিয়ে যায় তাহলে নাহয় রাতেই সবাই মিলে খাওয়া যাবে। আসলে নিজেদের পুকুরের মাছের সাথে কি আর বাজার থেকে কেনা মাছের কোনো তুলনা হয়!
অখিল বসেছে লালমোহনের পাশে। পেছন দিকে বসবে নিখিলেশ খুকুকে নিয়ে। শঙ্করীর কোলে করেই এলো খুকু। ছলোছলো চোখে গরুর গাড়িতে ওকে বসিয়ে দিলো। মাকে প্রণাম করে নিখিলেশ।
অনুপমা দেবী খুকুকে উদ্দেশ্য করে বলে ওঠেন,
______আবার এসো দিদিভাই! মাকে নিয়ে, কেমন?
____তুমি কিন্তু এবার ছোটোমাকে নিয়ে যাবে আমাদের ওখানে। কি ছোটোমা? তুমি আসবে তো কম্মার সাথে?
ছলোছলো চোখেও এবার শঙ্করীর হেসে উঠে বলে,
______ পাকা বুড়ি কোথাকার!
অনুপমা দেবী কপালে হাত ঠেকিয়ে বলে ওঠেন,
_________দুগ্গা দুগ্গা ।
লালমোহন এবার গাড়ি ছোটায় দিনাজপুরের উদ্দেশ্যে।
______ হুড়ড়ড়ড়ড়ড়, হট হট, চল, চল বেটা........
